আচারগাঁও ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন 

প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২৫

আকরাম হোসেন নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, টাকা আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার ২৫ অক্টোবর বেলা ১১ টার সময় আচারগাঁও এলাকার মাদ্রাসা সংলগ্ন শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক নান্দাইল পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ আঃ হান্নান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হাই তার প্রথম কর্মস্থল নিভিয়াঘাটা ফাযিল মাদ্রাসায় ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি গ্রহণ করেন। পরে বিষয়টি প্রকাশ পেলে তিনি পদত্যাগ করে আচারগাঁও দাখিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন। অভিযোগে বলা হয়, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি বিভিন্ন অনিয়ম, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতে জড়িয়ে পড়েন।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৫ সালে ভারপ্রাপ্ত সুপার থাকা অবস্থায় তিনি নিয়ম ভঙ্গ করে নিজেই সুপার পদে নিয়োগ নেন এবং নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে চাকরি অব্যাহত রাখেন। অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি সহকারী মৌলভী পদে বেতনভাতা উত্তোলন করলেও একই সময়ে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া দাখিল থেকে আলিমে উন্নীত হওয়ার সময় তিনি নিজের স্বজনদের অগ্রাধিকার দিয়ে নীতিমালা বহির্ভূত নিয়োগ দেন। তার ভাগিনা আনিছকে আরবি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ এবং কেরানি নাসির মিয়াকে শিক্ষক পদে উন্নীত করার অভিযোগও আনা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই শিক্ষকদের টিউশন ফি ও সরকারি বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সম্প্রতি মাদ্রাসার নতুন কমিটি অনুমোদনের আগ পর্যন্ত তিনি এককভাবে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন এবং ওই সময়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার লেনদেনের অনিয়ম ঘটে বলে দাবি করা হয়।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, তিনি মাদ্রাসার জমির একটি অংশ বিক্রি, কিছু জমি বন্ধক এবং উন্নয়ন খাতে ভুয়া ব্যয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি মৃত সভাপতি শরাফত উদ্দিন ভূইয়ার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কথাও উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “অধ্যক্ষ আব্দুল হাই দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। মাদ্রাসার টিউশন ফি, উন্নয়ন খাত ও সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করে ব্যক্তিগতভাবে সম্পদ গড়ে তুলেছেন।”

তারা আরও বলেন, “অধ্যক্ষ মহোদয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তার চাকরি থেকে অব্যাহতি ও আত্মসাৎকৃত অর্থ মাদ্রাসার কোষাগারে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—

মোঃ আঃ হান্নান, মোঃ ফয়সাল খান, মোঃ আশিকুর রহমান কাজল, মোঃ ফজলুল করিম ও মোঃ আশিকুর রহমান প্রমুখ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।

মন্তব্য করুন