নান্দাইলে জমি সংক্রান্ত বিরোধে নারীসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম, বসতঘরে অগ্নিসংযোগ মালামাল লুট

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৫

আকরাম হোসেন নান্দাইল ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী ইউনিয়নের মোড়াগালা গ্রামে জমি সংক্রান্ত পূর্বশত্রুতার জেরে এক নারীসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম ও বসতঘরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ২টার দিকে এবং পরদিন ভোরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মোছাঃ সোলেমা খাতুন (৫৫) জানান, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে স্বামীর একই বংশের কিছু ব্যক্তি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা করে আসছে। ঘটনার দিন তাঁর ছেলে উমর ফারুক (৩৫) দিলালপুর বাজারে যাওয়ার পথে বারপাড়া এলাকার লিটন মিয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়।

অভিযোগে বলা হয়, রুবেল মিয়া রামদা দিয়ে উমর ফারুকের মাথায় কোপ মেরে গুরুতর জখম করেন। লিটন মিয়া লোহার রড দিয়ে তাঁর বাম পায়ে আঘাত করেন। এসময় সোলেমা খাতুন ও তাঁর ছোট ছেলে রমজান মিয়া (২৫) এগিয়ে এলে রিয়াজ মিয়া রামদা দিয়ে সোলেমার হাতে কোপ দেন এবং তছলিম মিয়া দা দিয়ে রমজান মিয়ার মাথায় আঘাত করেন। এসময় অন্যান্য অজ্ঞাত আসামিরা লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে।

তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আহতদের মধ্যে সোলেমা খাতুন ও উমর ফারুককে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং রমজান মিয়াকে স্থানীয় চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে পরদিন একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, পরদিন (৭ আগস্ট) ভোরে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে টিনের বেড়া, দরজা ও জানালা ভাঙচুর করে এবং মোঃ আঃ কাইয়ুমের বসতঘরে আগুন দিয়ে মালামাল পুড়িয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। এবং তাদের গরুর খাবার থেকে ৭টি গরু নিয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গরুগুলো উদ্ধার করা হয়।

উপরোক্ত ঘটনার জেরে পুনরায় গত ৮ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তাজুল ইসলাম (৬৮) বাড়ি থেকে বের হলে আসামিরা দলবদ্ধভাবে পথরোধ করে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কামরুন্নাহারের বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে তার ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও তালুতে গুরুতর জখম হয়।

এসময় হামলাকারীরা কামরুন্নাহার ও তার পিতা তাজুল ইসলামকে মারধরের পাশাপাশি ঘরের আসবাবপত্র, দরজা-জানালা ও বিদ্যুতের মিটার ভাঙচুর করে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। এছাড়া ঘরের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, তিন ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার (মূল্য ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা), ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি, ২০ মণ চাল, দুটি পানির মোটরসহ মোট প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

উল্লেখিত বিষয়ে সোলেমা খাতুন এবং কামরুন্নাহার বাদী হয়ে- রিয়াজ মিয়া (২৫), লিটন মিয়া (৫০), আব্দুল হেলিম (৭০), রুবেল মিয়া (২৫), তসলিম মিয়া (৪০), সোহেল মিয়া (২২), জুয়েল মিয়া (২০), রাজন মিয়া (৩৫), রাসেল মিয়া (২২), শামছু মিয়া (৬০), রাবিয়া খাতুন (৬৫), আসমা আক্তার (৪০), সামিলা খাতুন (৩০) আজিজুল হক (২৩) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামী করে

নান্দাইল মডেল থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং হামলাকারীরা অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বলে অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

মন্তব্য করুন