

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে এক যুবলীগ নেতার হাতে হেলথ কার্ড তুলে দেওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন. এম. আবদুল্লাহ-আল-মামুন স্বাক্ষরিত ঘোষণায় বলা হয়, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
এর আগে, গত ২৪ জুন উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ‘জুলাই যোদ্ধা’দের মাঝে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হেলথ কার্ড বিতরণ করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও এন. এম. আবদুল্লাহ-আল-মামুন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন তৎকালীন গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম।
যাঁদের হাতে হেলথ কার্ড তুলে দেওয়া হয়, তাঁদের মধ্যে ছিলেন মশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মো. তাঁরা মিয়া, নুরে আলম সালেক, রিমন মিয়া, ওয়াজেদ আলী শেখ, অপূর্ব হিমেল রানা ও মোসাম্মত রুমী।
তবে মো. তাঁরা মিয়াকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে কার্ড প্রদান নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিaক মহল ও সচেতন নাগরিকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই জানতে চান, pএকজন সক্রিয় যুবলীগ নেতাকে কীভাবে আন্দোলনে আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো?
সমালোচনার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে। বাকি সদস্যরা হলেন,গফরগাঁও/পাগলা থানার একজন পুলিশ প্রতিনিধি (ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার নিচে নয়), বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সদস্য, উপজেলার একজন গেজেটভুক্ত আহত জুলাই যোদ্ধা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একজন প্রতিনিধি (সদস্য সচিব)।
তদন্ত কমিটিকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা হলো,তাঁরা মিয়া গেজেটভুক্ত ‘জুলাই যোদ্ধা’ কিনা তা যাচাই, কার্ড পাওয়ার জন্য দাখিলকৃত প্রমাণপত্র পর্যালোচনা, উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত ও মতামত প্রদান, অন্য কারো বিরুদ্ধেও অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা এবং সরকার ঘোষিত নির্দেশনার আলোকে সুপারিশ করা।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে ইউএনও এন. এম. আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, ‘তদন্তেই তাঁরা মিয়ার বিষয়টি বেরিয়ে আসবে। এছাড়া যদি অন্য কারো বিরুদ্ধেও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, সেটিও কমিটি খতিয়ে দেখবে।
এদিকে অভিযুক্ত মো. তাঁরা মিয়া বলেন, ‘আমাকে ইউএনও সাহেব কল দিয়েছিলেন, আমি হেলথ কার্ড ফেরত দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তদন্তেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চালু হওয়া এই হেলথ কার্ড কার্যক্রমটি জুলাইয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে ‘জুলাই যোদ্ধা’দের জন্য চালু করা হয়েছে।