পাবলিক ভয়েস: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানা চলছে। তার জামিন পেতে আইনি কোনো বাধা নেই। তাকে আটকিয়ে রাখতে আইনের ফাঁক দিয়ে বেআইনি রাস্তায় নানা চক্রান্ত চলছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, জনগণ ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিতে পারেনি। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোটারবিহীন ব্যালটবাক্স পূর্ণ হয়েছে। নির্বাচনোত্তর সরকার নিজেকে যে নামেই অভিহিত করুক, তারা অবৈধ সরকার। এ সরকার রাতের আঁধারের ভোটের সরকার।
তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে মানুষ ‘এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ’ হারিয়ে ফেলেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকারও আর থাকছে না সাধারণ মানুষের। কেউ যদি স্বাধীনভাবে চিন্তা করে তাহলে মনে হয় তাকে ‘থট পুলিশ’ এসে হানা দেবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমকে অন্ধকার ছায়া থেকে নজরদারি করা হচ্ছে। কারণ নির্বাচনের পর গণমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। এখন সেই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে, যে কেউ কোনো সরকারবিরোধী কথা বলছে কিনা।
তিনি বলেন, দেশ এখন একদলীয় দুঃশাসন প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পর্বে উপনীত হয়েছে। এখানে টুঁ-শব্দ করা যাবে না। ভিন্নমত প্রকাশিত হলে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশি আক্রমণের মুখে পড়তে হবে।
মানুষকে রুদ্ধশ্বাসে একদল ও এক ব্যক্তির বন্দনা করতে হবে। নইলে কারাবাস বা ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করতে হবে।
রিজভী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি যেন কেউ দেখার নেই, শোনার নেই। প্রতিদিনই বাড়ছে খুন, গুম, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো লোমহর্ষক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুরা অপহৃত হচ্ছে, কয়েক দিন পর তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে রাস্তা-ডোবা-নালায়।
বিএনপির এ নেতা অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোটে আ.লীগকে বিজয়ী করতে মহা ভোট ডাকাতিতে নিয়োজিত থাকায় তারা সমাজে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের বদলে এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। সমাজ জীবনে শান্তিশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।
তিনি বলেন, আইন নিজস্ব গতিতে চলছে না, আইন ক্ষমতাসীনদের হাতের মুঠোয়। এ কারণে আইনের প্রয়োগের বদলে ক্ষমতাসীনদের বেআইনি বলপ্রয়োগের প্রতাপে জনজীবনে গভীর অন্ধকার নেমে এসেছে। আ.লীগ যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, তত দিন দেশের ফাঁড়া কাটবে না। অপশাসনের কলুষ থেকে মানুষের মুক্তি হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন প্রমুখ।
