

বাংলা ভাষা-সাহিত্য রক্ষা ও বিকাশে প্রাচীনকাল থেকেই মুসলমানদের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে দেখা গেছে অমুসলিম রাজন্যবর্গ বিরামহীনভাবে বাংলা ভাষার প্রতি বিষোদগার করতো। রাজকার্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল প্রিয় মাতৃভাষা বাংলাকে। সে যায়গা থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাংলায় মুসলিম শাসন শুরু হলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধন শুরু হয়।
সুতরাং বাংলা ভাষা শুধুমাত্র বায়ান্নের চেতনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এ ভাষা ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সংগ্রামের পথ রচনা করে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে এ ভাষাকে সীমাবদ্ধ না রেখে বাংলাদেশের প্রতিটি স্তরে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান চিন্তাঙ্গনের সদস্যবৃন্দ।
গতকাল ৭ ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ (২০ফেব্রুয়ারি’২১ ঈসায়ী) শনিবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে চিন্তাঙ্গনের আয়োজনে “বাংলা ভাষা ও বাঙ্গালীর আত্মপরিচয়ের সন্ধান” শীর্ষক লোকবক্তৃতায় উপস্থিত আলোচকবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন।
তারা আরো বলেন, ভাষা আন্দোলনের ছয় দশকে এসেও আমরা দেশের উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষায় রায় প্রদান করতে পারছিনা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলার বদলে ভিনদেশী ভাষাকে নির্ধারণ করা হয়েছে। রেডিও-টেলিভিশনে বাংলার বদলে ইংরেজি বলতে পারাকে আধুনিকতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা বাঙালী জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এ যায়গা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। তরুন প্রজন্মকে স্বীয় আত্মপরিচয়ের ভিত্তিতে এগুতে হবে, তবেই ভাষার জন্য আত্মোৎসর্গকারী ভাইদের রক্তের সম্মান করা হবে।
চিন্তাঙ্গন পরিচালক কে এম শরীয়াতুল্লাহ’র সভাপতিত্বে লোকবক্তৃতায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ছড়াকার, সাহিত্যিক ও নজরুল গবেষক মহিউদ্দিন আকবর; রাজনীতিবিদ ও গবেষক কে এম আতিকুর রহমান; বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও ইতিহাসবিদ কবি মুসা আল হাফিজ, চিন্তাঙ্গনের উপদেষ্টা, ছাত্রনেতা নূরুল করীম আকরাম।
উপস্থিত ছিলেন চিন্তাঙ্গন পরিবারের সদস্য শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন, এম এম শোয়াইব, ইউসুফ আহমাদ মানসুর, এইচ এম সাখাওয়াত উল্লাহ, সাইফ মুহাম্মাদ সালমান, মুনতাসির আহমাদ, মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক ও সুলতান মাহমুদসহ প্রমুখ।
ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস