অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে কবে শিক্ষার্থীদের?

প্রকাশিত: ৯:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১

ইউসুফ পিয়াস
পাবলিক ভয়েস

দেশ তার গতিতে এগুচ্ছে । সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চলছে। মানুষ সাধারণভাবে জীবনযাপন করা শুরু করছে অনেক আগ থেকেই। করোনায় সবকিছু স্বভাবিক হলেও থমকে আছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তালা ঝুলানোর ১বছর পার করতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ।

সরকারের দফায় দফায় স্কুল কলেজ খোলা আর বন্ধের ঘোষনায় পড়াশুনার আশা ছেড়ে দিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। তবুও দফায় দফায় সরকারের প্রতিষ্ঠান খোলার বিজ্ঞপ্তিতে কিছুটা স্বস্থি ফিরলেও ফের ফের বন্ধের ঘোষণায় নিশ্চুপতা ছাড়া কিছু করার থাকেনা।

পড়াশুনা বাদ দিয়ে শিক্ষার পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা পরিশ্রম করে টাকা উপর্জনের পথ বেছে নিয়েছে । তেমনি একজন হলো চুয়াডাঙ্গার  শাওন আহমেদ, পড়াশুনায় খুব ভালো একজন শিক্ষার্থী ছিল শাওন শিক্ষকদেরও প্রিয় ছাত্র ছিল। কিন্তু করোনায় দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় তার পরিবার থেকে তার পড়াশুনা বন্ধ করে দিয়েছে তার পিতা। বর্তমানে সে গ্রামের একটি চা দোকানে কাজ করে পরিবার চালানো শুরু করেছে।

ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদেও। সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন বলেন, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভার্চুয়াল ক্লাস হলেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা এতে খুব বেশি উপকৃত হতে পারছে না। যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক।

পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। তারা বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। অনেকেই অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ অবসাদগ্রস্থ হয়ে নেশা করছে, আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে। যা অভিভাবকসহ সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য সীমাহীন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। তাই কালবিলম্ব না করে দ্রুততম সময়ে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জোর দাবি জানান তারা।

দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরাও বিরক্ত। দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এর এক শিক্ষার্থীি ইসমাইল পাবলিক ভয়েসকে জানান, সরকার সবকিছু উন্মুক্ত রেখে করোনার অজুহাতে  শুধু শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে রেখেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গেলেও শিক্ষার্থীরা ঠিকই সবজায়গায় ঘুরেফেরা করছে, বেড়াতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ক্লাস বন্ধ থাকার কারণে  শিক্ষার্থীরাতো ঘরে বন্ধি থাকছেনা। আর তাদের অভিবাকও তাদের বন্ধি রাখেনি তাহলে কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ধ্বংসের হাত থেকে বাাঁচানোর আহ্বান জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক অধ্যাপক নকীব ফিরোজ: তিনি তার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন পুরোপুরিভাবে খুলে দেয়া হোক। কারন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র – শিক্ষক সবাই সচেতন। স্বাস্থবিধি মেনে চলতে পারার বোধ সম্পন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ক্রমান্বয়ে কলেজ এবং স্কুল খুলে দেয়া হোক। না হয় সেশনজট তৈরি হচ্ছে। ছেলে মেয়েদের মনের উপর চাপ পড়ছে। সে ক্ষতি কম নয়। দুর্ভাগ্য যে আমাদের ‘শিক্ষা’ নিয়ে কারো কোনও মাথাব্যাথ্যা আছে বলে মনে হয় না। মাদ্রাসাগুলো কয়েক মাস আগেই খুলে দেয়া হয়েছে। তাতে তাদের কোনও সমস্যা হয়নি। বিশেষত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে কোনো ঝুঁকি প্রায় নেই।বসে থাকার আর সময় নেই। 

ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন