
মুহাম্মদ মাজিদুল হক
১৯৯০ সালের জুলাই মাসের পর স্বপ্নের সেই ডাকসু নির্বাচন আবার আগামী ৩১শে মার্চ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাবি’র বর্তমান ভিসি। ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণাটি দিয়েছে। ২০১২ সালে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে ঢাবির তৎকালীন ২৫ জন শিক্ষার্থীর করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ই জানুয়ারি উচ্চ আদালত রায় দেয়। ঐ রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন করার ঘোষণার পরদিনই উচ্চ আদালতের এ রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিল ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
১৯৭৩ সালের ঢাবি অধ্যাদেশে, অর্থাৎ যে অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তাতে বলা হয়েছে প্রতি বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে হবে কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট সাত বার অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন। এমন কি গত বছরের নভেম্বরে একজন ছাত্র ঢাবির উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ডাকসু নির্বাচনের দাবীতে অনশন পর্যন্ত করেছিলেন।
১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ” সংক্ষেপে ডাকসু। যা ছিল সম্পূর্ন অরাজনৈতিক চরিত্রের। ১৯৮০ সালে কলা ভবনের পূর্ব-দক্ষিণের কোনে একটি ভবনে ডাকসুর কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ১৯৮২ সালে নবাবের বাগান বাড়ির নাচঘরে ডাকসুর জন্য নিজস্ব ভবন নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ হিসাবে পরিচিত ডাকসু এখন ঐতিহ্যের কঙ্কাল হিসাবে স্মৃতিচারণ করে যাচ্ছে!
নবাব স্যার সলিমুল্লাহর সেই ৬০০ একর জমির উপর নির্মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যা স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণে সব থেকে বেশি ভুমিকা রেখেছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের স্বাধীনতা অর্জন থেকে শুরু করে নব্বইয়ের স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলন, তথা গনতান্ত্রিক, জাতীয় মুক্তি ও স্বাধিকার আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিযেছেন তারা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী। কিন্তু কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সেই নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলী। অরাজনৈতিক ডাকসু’র পরিবর্তে এখন পরিণত হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের একচ্ছত্র ক্ষমতার চর্চাকেন্দ্র। হাজার হাজার নিরীহ ছাত্র-ছাত্রী আজ তাদের শোষনের শষ্যক্ষেত্র !
ডাকসু নির্বাচন ও নেতৃত্ব নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় রাজনীতির যোগ আছে বলে মনে করা হয়। বাংলাদেশে প্রায় সব নির্বাচন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের তৈরিকৃত হলেও আওয়ামী লীগ সরকার ডাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে,বিগত দুই টার্ম জোর পূর্বক ক্ষমতা থাকাকালীন। গত টার্মের শেষের দিকে মহামান্য রাষ্ট্র প্রতি ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কথা বলায় আবারো ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নড়েচড়ে বসে ঢাবি প্রশাসন। বাজেট বরাদ্দে কোনো কমতি নেই, নির্বাচন না হলেও প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে ডাকসু নির্বাচনের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়৷ এবং প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দিতে হয় নিয়মিত চাঁদা।গঠনতন্ত্রে যদিও বা আছে প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু সেই প্রবাদের মত- কাজীর গাই কিতাবে আছে গোয়ালে নই। ডাকসু নির্বাচন হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশংকা করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কর্তৃত্ব হ্রাস পাবে। প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ হবে।
‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ নামে পরিচিতি হলেও ডাকসু প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে ৩৬ বার। ১৯৭০ সাল থেকে পরোক্ষ নির্বাচনের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ নির্বাচন চলছিল ডাকসুতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্র সংগঠন থাকলেও তারা সেভাবে ডাকসু নিয়ে খুব একটা বেশি হৈচৈ করতে দেখা যায় না। মাঝে মাঝে উত্তপ্ত হওয়ার আগেই কোনো এক অদৃশ্য শক্তি তাদেরকে বংশ করে মুখ আটকিয়ে দেয়। তবে কিছু সংগঠন খুব জোর দিয়ে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকে কথা বলে যাচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা প্রথম থেকেই খুব জোর দিয়ে ডাকসু নিয়ে কথা বলে যাচ্ছে। কয়েক দফা ঢাবি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলে এই ছাত্র সংগঠনটি। ক্যাম্পসে এ বৃহৎ ছাত্র সংগঠনটি মেধা, সাহসিকতা, খোলাফায়ে রাশেদার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং নিয়মতান্ত্রিক সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সবার কাছে এক জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠন হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।
গত ২২ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীর সাথে দেখা করে মতবিনিময় করে ইশা ছাত্র আন্দোলন। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনকে অংশ গ্রহণের সুযোগ থাকবে বলে জানালেও গত ১০ তারিখে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে সংবিধান সংশোধনী আলোচনায় ইশা ছাত্র আন্দোলনকে ডাকা হয় নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে রাজনীতি চর্চার এক সূতিকাগার, কিন্তু সেখানেই যদি সব ছাত্র সংগঠনের অংশ গ্রহণ বাদেই ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকে তাহলে আর কি বলার থাকে? আগামীতে জাতির নেতৃত্ব দেয়ার কারখানায় যদি ভেজাল থাকে, তাহলে আগামী প্রজন্মকে ভেজালমুক্ত করার চিন্তা একদমই পাগলাটে চিন্তা ছাড়া কিছু নয়। বাংলাদেশ পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে- মেধা, আদর্শ, নৈতিকতা আর সাংগঠনিক সুশৃঙ্খলার দিক থেকে বাংলাদেশের প্রথম দিকের ছাত্র সংগঠন ইশা ছাত্র আন্দোলন। কিন্তু সেই ছাত্র সংগঠনকে বাদে ডাকসু আয়োজন মানে নাচের পুতুল ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না।
ডাকসু এখন ছাত্রদের কাছে অ্যাবসেন্ট এক্সিসটেন্স ছাড়া অন্য কিছুই না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় কষ্টটা হচ্ছে- ঘুমাতে গেলে ছারপোকার কামড় খেতে হয়। তাছাড়া ক্যানটিনের খাবারের মান অত্যন্ত খারাপ। হলে তো প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীরা সিট পায় না, সেজন্য ক্ষমতাসীন দলের মাধ্যমে উঠতে হয়, পরে তাদের কথামত চলতে হয়। আশা করি, যদি সঠিকভাবে ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন হয় তাহলে এসব সমস্যাটির সমাধান হবে।
ঢাবি প্রশাসনের যদি সঠিক ভাবে ডাকসু নির্বাচন করে ছাত্রদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার মনমানসিকতা থাকে, এবং রাষ্ট্রের যদি আগামী প্রজন্ম এবং দেশ কে উন্নত করার চিন্তা থাকে তাহলে সব সংগঠনের অংশগ্রহণের ভিক্তিতে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করুক। কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে এর আগে যে সব সমস্যার কারনে ডাকসু নির্বাচন করা সম্ভব হয় নি, সেগুলো কে সমাধান করা। সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান ছাড়াও ক্যাম্পাসে যে সমস্যা আছে তা নিরসন করা না গেলে ডাকসু নির্বাচনের মানে নেই।
হলগুলোতে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান, সব ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক চর্চার সুযোগ, এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে মতের ভিন্নতা থাকলেও এক সঙ্গে বসে যে কোনো সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ যে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার মানসিকতা সেটাও ছাড়তে হবে। না হলে ডাকসু নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না।
মফস্বল থেকে এসে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীরা যে জিনিসটার সম্পর্কে খুব আগ্রহ থাকে তা রাজনৈতিক সচেতনতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক জীবন। সত্যি বলতে বর্তমান প্রজন্ম অনেকেই জানে না- ডাকসু কি বা তার কাজ কি এবং কেনো ই বা এই ডাকসুর এত প্রয়োজন বাংলাদেশের রাজনীতিতে? ছাত্র রাজনীতি বলতে তারা বোঝে রাতে হলের গেষ্ট রুম, দুপুরে মধুর ক্যান্টিন হাজিরা দেওয়া আর মাঝে মধ্যে ওই নেতা নেত্রী আছেরে… বলতো কোন সে নেতা বা নেত্রী…
মনে রাখতে হবে রাজনীতি হলো রাজনীতিকদের কাজ। ব্যবসায়ীদের কাজ হলো ব্যবসা করা। একজনের কাজ যদি আরেকজনে করেন, তাহলে সেই কাজটির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আর থাকে না। ভারত বিভক্তির আগে দেখুন, পলিটিকস ছিল পলিটিশিয়ানদের হাতে। মুসলিম লীগে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, লিয়াকত আলী খান, ব্যারিস্টার সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ জাঁদরেল পলিটিশিয়ানগণ। অন্যদিকে কংগ্রেসে ছিলেন মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী, পন্ডিত জওহরলাল নেহরু, বল্লব ভাই প্যাটেল প্রমুখ তুখোড় পলিটিশিয়ান।
বাংলাদেশের রাজনীতিতেও যখন আওয়ামী লীগ আন্দোলন শুরু করে তখন প্রথমে শেখ মুজিবর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ছিল রাজনীতিবিদদের হাতে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশেই রাজনীতিতে শুরু হয় ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য। বিএনপির জন্ম এবং বিকাশে আমলা ও ব্যবসায়ীদের প্রবল প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। যতই দিন যাচ্ছে ততই তাদের প্রাধান্য বেড়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী এবং আমলা দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভরে গেছে। বড় দুটি দলের নেতৃত্বেই এখন আমলা এবং ব্যবসায়ীদের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়।
বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়েছে। ঐসব পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে যে, জাতীয় সংসদে পলিটিশিয়ান, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোন শ্রেণির পার্সেন্টেজ কত। এতে দেখা গেছে, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৪০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। আগেই বলেছি ডাকসু কে মনে করা হয় দ্বিতীয় সংসদ। দ্বিতীয় সংসদ থেকে নেতৃত্ব যায় প্রথম সংসদে কিন্তু এই অবহেলিত ডাকসুর কারনে রাজনীতি চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের হাতে। ব্যবসায়ীদের মূল টার্গেট থাকে মূলধন সংগ্রহ করা যেমনটি করে করে থাকে ব্যবসার ক্ষেত্রে। আমরাও দেখেছি বিগত বছর গুলোতে সংসদে এর ব্যতিক্রম কিছু নয়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আশঙ্কা করেন যে, এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সে দিন সুদূর নয়, যে দিন রাজনৈতিক দলসমূহের নেতৃত্বে বিশেষ করে জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে আমলা ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা সার্বক্ষণিক পলিটিশিয়ানদের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে।
গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যতগুলো ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার একটাতেও সরকারপন্থী সংগঠন অর্থাৎ ছাত্রলীগ জয়লাভ করতে পারেনি। যদিও বা তারা মুখে বলে, গায়ের জোর দিয়ে নয়, রাজনীতি হবে ভালোবাসা দিয়ে কিন্তু তারা প্রতিবারই প্রমান করে ভালোবাসা নয়, রাজনীতি হবে অস্ত্র এবং গায়ের জোরে। প্রমান স্বরূপ বলা যায় বর্তমানে তারা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে রেখেছে। সম্মানিত শিক্ষকদেরকে অপমানিত এবং মারধর করা তাদের কাছে মামুলী বিষয়! নির্বাচনের সময় আওয়ামী সরকারকে ভোট চুরি করে সহায়তা করা যেন তাদের আদর্শ। নির্বাচনের উৎসব হিসাবে ৪ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ করে নির্বাচনী উৎসব পালন সহ অসংখ্য কৃতিত্ব তাদের ঝুড়িতে আছে।
আমরা চাই ডাকসু নির্বাচন হোক সকল ছাত্র সংগঠনের উপস্থিতির অংশ গ্রহণের ভিত্তিতে। ডাকসু সহ সকল প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করে জাতীয় নেতৃত্ব তুলে আনতে হবে।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, সফটওয়্যার টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট
চানজু ইউনিভার্সিটি, চায়না।