

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মানবেতর জীবনযাপন করা এক দম্পতির পাশে দাড়িয়েছে “কলাপাড়ার পোস্ট গ্রাজুয়েট ক্লাব” কেপিজিসি-এর সদস্যরা।
জানা যায় উপজেলার মহিপুর ঘাপড়াভাঙ্গা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামে বহুবছর থেকে পরিত্যাক্ত ঘরে বসবাস করেন খাদেম আলী।
বৃষ্টি এলে ঘরের চাল দিয়ে ঝুপঝুপ করে পানি পড়ে। টিন লাগাবার মতো সামার্থ্যও তাদের নেই। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে মানবেতার জীবনযাপন করেন তিনি। ষাটোর্ধ্ব খাদেম আলীর জীবদ্দশায় সুখের দেখা মেলেনি আজও।
সরকারী ভাতা না পাওয়ায় দিনমজুরের কাজ করে দু’বেলা খেয়ে দিন চলে যেত কোনোমতে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। দিন দিন শারীরিক অবস্থার অবণতি হওয়ায় এখন আর কাজে ডাকে না কেউ। অসুস্থতা লেগেই থাকে। টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছেন না।
২০০৭ সালের সিডরের পর বহু প্রতিশ্রুতি পেলেও থাকার মতো ঘরটিও মেরামত করার উদ্যোগ নেয়নি কেউ। বর্ষা মৌসুমে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু পর্যন্ত নেই। রোদ-বৃষ্টিতে বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে ঐ পরিত্যাক্ত ঘরেই পড়ে থাকেন তিনি।
এই বয়সে এসে এখনও স্বপ্ন দেখেন দো-চালা টিনের ঘরের। তার এমন হৃদয়বিদারক জীবনযাপনের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক ছুটে যায় তারুণ্যনির্ভর একদল মানবতাদরদী। যারা ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ করে সামাজিক সেবায় অবদান রেখে চলেছে। দর্মবর্ণ ও রাজনৈতিক মতাদর্শের উর্ধ্বে গিয়ে স্বাক্ষর রেখেছে মহানুভবতার। প্রমাণ করেছে, সদিচ্ছা থাকলে মানবতার সেবায় কীভাবে এগিয়ে এলে সহজেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়।
কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার তারুণ্যনির্ভর যুবকদের নিয়ে গড়া— “কলাপাড়ার পোস্ট গ্রাজুয়েট ক্লাব” ইতিমধ্যে ফান্ড কালেক্ট সম্পন্ন করেছে খাদেম আলীর ঘর মেরামতের জন্য। ক্লাবগ্রুপের এডমিন সাংবাদিক মহিব্বুল্লাহ মুহিব জানান, খাদেম আলীর ঘরটিকে নতুন করে বানিয়ে দিতে পয়তাল্লিশ হাজার টাকার প্রয়োজন। ইতোমধ্যেই তা কালেক্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ওই জরাজীর্ণ ঘরে খাদেম আলী আর একদিনও থাকুক সেটা আমাদের মানতেই কষ্ট হচ্ছে।