ডাক্তার, পুলিশদের ফাইভস্টার হোটেলে রাখুন : প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যারিস্টার সুমনের আবেদন
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি


করোনাভাইরাসের এই মহামারীর সময় করোনা ভাইরাস প্রতিরক্ষায় কাজ করা দেশের ডাক্তারও পুলিশদের সহ যারা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের জন্য দেশের প্রতিটি ফাইভ স্টার হোটেল সহ উন্নত মানের হোটেলসমূহকে খুলে দেওয়ার একান্ত আবেদন জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, সমাজসেবক ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ব্যারিস্টার সুমন তাঁর নিজস্ব ফেসবুক পেজের এক লাইভে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ আবেদন করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস এরে দুর্যোগপূর্ণ সময়ে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বিশেষ করে ডাক্তাররা, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সাংবাদিকরা। তাদের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে জোর পদক্ষেপ রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন।
ব্যারিস্টার সুমনের উদ্যোগে মেডিকেল টিম, বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেওয়া হবে চিকিৎসা
তিনি বলেন, ডাক্তার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকসহ যারা করোনা মহামারী প্রতিরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে তাদের নিজস্ব সকল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে দেশের ফাইভস্টার হোটেলসমূহ এবং দেশের উন্নত মানের হোটেলগুলো খুলে দিয়ে তাদের সেখানে রাখার ব্যবস্থা করুন।
একই সাথে তিনি সিলেটের জন্য বলেছেন সিলেটে অনেকগুলো ‘লন্ডনী বাড়ি’ আছে যেগুলো জনমানবশূন্য থাকে। এই বাড়িগুলোকে যারা করোনা মমহামারিতে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাদের থাকার জন্য খুলে দিন।
করোনায় চিকিৎসকদের জন্য নিজের বাসা ছেড়ে দিচ্ছেন ব্যারিস্টার সুমন
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, পৃথিবীর কোনো মানুষই তার পরিবারের ব্যাপারে রিস্ক নিতে চায় না। যেহেতু ডাক্তাররা করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং আল্লাহ না করুক তারা যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয় এবং ‘হোটেলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়’ তাহলে তাদের পরিবারগুলো অন্তত আক্রান্ত হওয়া থেকে বেঁচে যাবে। ব্যারিস্টার সুমন লাইভ ভারতের উদাহরণ টেনে বলেন, ভারতে নরেন্দ্র মোদি ডাক্তারদের থাকার জন্য ফাইভস্টার হোটেলে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন। বাংলাদেশেও এমন ব্যবস্থা করা উচিত।
একই সাথে তিনি বলেন, এজন্য যদি সরকারের কোনো অর্থ দিতে হয় তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন এদেশে দুর্নীতিতে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হওয়ার উদাহরণ আছে। এমন একটি দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় যদি ডাক্তারদের নিরাপত্তা জন্য একশ দুইশ কোটি টাকা খরচ করতে হয় তাও করা উচিত।
ব্যারিস্টার সুমনের মেডিকেল টিম বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে
তিনি বলেন, দেশের এমন মুহূর্তে কেউ যদি তাদের হোটেল বা অপ্রয়োজনীয় রেস্ট হাউস দিতে রাজি না হয় তাহলে সরকারের জন্য তাদের উপর কঠোরতা করা সঠিক হবে। এক্ষেত্রে ‘ব্যক্তি অধিকার’ খর্ব হবে না। কারণ দেশের এমন দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় মানুষের ব্যক্তি অধিকার ‘প্রয়োজনের জন্য এবং সকলের উপকারের জন্য’ খর্ব করা সংবিধানসিদ্ধ এবং এটাকে বৈধ করার সুযোগ রয়েছে।
তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন আপনিতো বঙ্গবন্ধুকন্যা। আপনার কলিজাটা অনেক বড়। দেশের জন্য আপনি নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো মত আপনিও জনগণের সাথে মিলে মানুষকে এই বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাই আমি আপনার কাছে জনকল্যাণমূলক আবেদনটি করেছি।
এই মুহূর্তে আমার আবেদনটি যদি রাষ্ট্রের জন্য উপকারী হয় তাহলে যতদ্রুত সম্ভব এই কাজটা করবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ যারা আছেন তাদেরকে নির্দেশ দেবেন যতদ্রুত সম্ভব এই কাজটি করার জন্য। একই সাথে তিনি জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন আমরা সবাই যদি আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করি তাহলে করোনা দুর্যোগের এই মহামারী থেকে আমরা অবশ্যই মুক্তি লাভ করতে পারব।
প্রসঙ্গত : ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন একদিকে একজন আইনজীবী অপরদিকে তিনি অনুসরণীয় একজন সমাজসেবক। নিজ উদ্যোগে সমাজসেবামূলক একের পর এক কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন ব্যারিস্টার সুমন। মানুষের উপকার এবং করোনাভাইরাস ইস্যুতে এসে তার সমাজসেবামূলক কাজগুলো দৃষ্টি কেড়েছে সবার। মানুষ তাই প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট এই পরোপকারী মানুষটিকে।
এখনই সময় দেশপ্রেমিক হওয়ার : ব্যারিস্টার সুমন
করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময়টাতে তিনি বসে থাকেননি বরং নিজের সাধ্যমত ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মাস দেড়েক আগেই করোনাভাইরাস নিয়ে ব্যারিস্টার সুমন সবার আগে বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ব্যারিস্টার সুমনের সেই বার্তাটি দেখতে ক্লিক করুন।
বাংলাদেশে গত ৮-ই মার্চ করোনাভাইরাস ধরা পরার পর সারাদেশে লকডাউন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এরপর থেকেই নিজের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এমনকি প্রতিটি কাজ এবং সতর্কতা বিষয়ে তিনি ফেসবুকে নিয়মিত আপডেট দিচ্ছেন এবং মানুষকে যথাসম্ভব সতর্ক করার চেষ্টা করছেন।
করোনা সংকটে হাসপাতালে নিজের গাড়ী দিলেন ব্যারিস্টার সুমন
তাঁর নিজ এলাকা থেকে শুরু করে দেশের যে কোন সমস্যা বিষয়ে তিনি মানুষকে সচেতন করেছেন। দিয়েছেন পরামর্শ। নিজের বেতন থেকেও তিনি মানুষকে সাহায্য করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এর মধ্যেই তাঁর নিজের ব্যক্তিগত গাড়িটি দিয়েছিলেন চুনারুঘাট উপজেলা হাসপাতালে। পরবর্তীতে নিজ উদ্যোগে গঠন করেছেন মেডিকেল টিম। ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে।
কিস্তি নয়, মানুষকে চাল-ডাল দিয়ে সহযোগিতা করুন: ব্যারিস্টার সুমন
এখানেই শেষ নয় প্রতিটি বিষয়ে তিনি মানুষকে জানিয়েছেন এবং সতর্ক করেছেন ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে। ব্যারিস্টার সুমনের কথাগুলো পৌঁছে যাচ্ছে মিলিয়ন মিলিয়ন সংখ্যার মানুষের কাছে। যা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় সুমন ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন।
আরআর/পাবলিক ভয়েস