

বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিলি আরাবিয়া বাংলাদেশ’ (বেফfক) এর আওতাধীন সকল মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে দাওরা হাদীসসহ অন্যান্য পরীক্ষা চলবে। মঙ্গলবার দুপুরে বেফাকের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
সকালে অনুষ্ঠিত হাইয়াতুল উলইয়ার বৈঠকের পর বেফাকের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন কর্মকর্তাগণ। হাইয়াতুল উলইয়ার অনুসরণে বেফাকের বৈঠকেও ৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন, বেফাকের মহাসচিব ও সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস।
সিদ্ধান্তুগুলো হলো:
- ১. পরীক্ষার আগে মাদরাসার সকল নিয়মিত ক্লাস বন্ধ থাকবে।
- ২. সকল পরীক্ষা পূর্ব ঘোষিত রুটিনে যথা সময়ে অনুষষ্ঠিত হবে।
- ৩. প্রত্যেক শিক্ষার্থী যার যার মতো করে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হাইয়াতুল উলইয়ার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাইয়াতুল উলইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা যথা সময়ে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া অধিভুক্ত মাদরাসা সমূহের অন্যান্য ক্লাস ও স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ (হাইয়া) এর সদস্য ও বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর সহসভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু পাবলিক ভয়েসকে জানান, সকাল ১০ টায় রাজধানীর মতিঝিলে হাইয়াতুল উলইয়ার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মোট তিনটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট খবর:
‘বন্ধ থাকবে ক্লাস, যথা সময়ে হবে বেফাক-হাইয়ার পরীক্ষা’
মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু বলেন, আসলে করোনাভাইরাস তো পৃথিবীজুড়ে আল্লাহ প্রদত্ত একটি আজাব। এর থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে আমাদের বেশি বেশি আস্তাগফার করা উচিত। এজন্য আজকে হাইয়ার বৈঠকে মোট তিনটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এক. মাদরাসার নিয়মিত ক্লাস বন্ধ থাকবে, দুই. পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে, তিন. বেশি বেশি তাওবা আস্তাগফার করা।
পরীক্ষার্থী ছাড়া বাকীরা মাদরাসা ছেড়ে চলে যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্তটা এরকম হয়েছে মাদরাসার ক্লাস বন্ধ থাকবে পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিবে, পরীক্ষা যথাসময়ে চলবে’।
উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ থেকে বেফাকুল মাদারিসিলি আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক) এবং হাইয়াতুল উলইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
দাওরা হাদীসের মাস্টার্স সমমান সরকারি স্বীকৃতির পর থেকে হাইয়াতুল উলইয়ার অধীনে এই পরীক্ষা হয়ে আসছে। বাকী অন্যান্য ক্লাস পরীক্ষা বেফাকের আওতাধীন। যেসব মাদরাসা বেফাক বোর্ড অধিভুক্ত তারা বেফাকে থেকেই হাইয়ার অধিনে দাওরার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
এজন্য দাওরা হাদীস পরীক্ষার ক্ষেত্রে হাইয়ার সিদ্ধান্তই বেফাকের সিদ্ধান্ত। তাছাড়া হাইয়ার উর্ধ্বতণ দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগণ বেফাকেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেজন্য অন্যান্য পরীক্ষায়ও হাইয়ার সিদ্ধান্ত ফলো করবে বেফাক।
প্রসঙ্গ, বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার করোনাভাইরাস আতঙ্কে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। সরকারি-বেসরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠানে পড়েছে এর বিরুপ প্রভাব। এরইমধ্যে আজ মঙ্গলবার থেকে (৩১ মার্চ) বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
সরকারি ঘোষণার পর আজ সকালে জরুরি বৈঠকে বসে কওমি মাদরাসার শিক্ষার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ (হাইয়া)। এরপর বেলা ১১টায় জরুরি বৈঠকে বসে বেফাকুল মাদারিসিলি আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক)।
/এসএস