উগ্রবাদী সন্ত্রাসী কর্তৃক ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে হামলার এক বছর

প্রকাশিত: ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২০
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী কর্তৃক ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে হামলার এক বছর

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের ইসলামিক সেন্টারে অবস্থিত আল নূর মসজিদে ভয়াবহ হামলার এক বছর পূর্ণ হল আজ।

২০১৯ সালের ১৫-ই মার্চ শুক্রবার। নিউজিল্যান্ডে উগ্রবাদী খৃষ্টান কর্তৃক লিনউড ইসলামিক সেন্টারে অবস্থিত ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে জুমার নামাজ চলছিলো। তখনই একজন উগ্র খ্রিস্টান ডানপন্থী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। যে হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করেন।

এ হামলার ঘটনায় পুরো বিশ্ব নড়েচড়ে বসেছিলো। হামলায় প্রায় ৫০ জন মুসলমান নিহত হয়েছেন, প্রায় ৫৫ জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। এবং পুরো নিউজিল্যান্ডে মুসলমানদের উপর এক ধরণের ভীতি ছড়ানো হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তিতে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুসলমানদের পাশে দাড়িয়েছিলেন।

হামলার সময় : ২০১৯ সালের ১৫ই মার্চ তারিখে নিউজিল্যান্ড স্থানীয় সময় দুপুর ১:৪০ মিনিটে ক্রাইস্টচার্চের উপকূলীয় অঞ্চল রিকার্ক্টন-এর আল নূর মসজিদে প্রথম হামলা করা হয় এবং পরবর্তীতে লিনউড ইসলামিক সেন্টারে হামলা করা হয়। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, হামলার সূত্রপাত “একাধিক থেকে একযোগে আক্রমণ করা হয়”। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, কেবল একজন উগ্র খ্রিস্টান এই হামলার সাথে জড়িত। যে পূর্ব পরিকল্পনা করে এই ভয়াবহ হামলা পরিচালনা করেন।

অস্ত্র সজ্জিত বন্দুকধারী জুম্মার নামাজ আদায় করার সময়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। বন্দুকধারী ফেসবুক সরাসরি ব্যবহার করে প্রাথমিকভাবে টানা ১৭ মিনিট ধরে আক্রমণের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে এবং গাড়ি চালিয়ে লক্ষ্যস্থল পর্যন্ত না পৌছানো পর্যন্ত তা ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে। গণমাধ্যেমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি ২৮-বছর-বয়সী অস্ট্রেলীয় শ্বেতাঙ্গ হিসাবে চিহ্নিত।

আল নূর মসজিদের পর হামলাকারী লিনউড ইসলামিক সেন্টারে দ্বিতীয় হামলা চালায়, যেটি আল নূর মসজিদ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার (৩.১ মাইল) দূরত্বে অবস্থিত। সেখানেও ৭জন নিহত হন।

হামলাকারী উগ্র সন্ত্রাসীর পরিচয় : এই নারকীয় হামলাটি করেছিলেন উগ্রবাদী ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন হ্যারিসন ট্যারান্ট (Brenton Harrison Tarrant) নামে এক ব্যক্তি। প্রথমদিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল এটি একটি একাধিক ব্যক্তির দ্বারা একই সাথে কয়েকটি স্থানে ঘটা হামলা। কিন্তু পরের কেবল মাত্র একজনকেই চিহ্নিত করা হয়। তার গাড়ি ধাওয়া করা হয়, এরপর ব্রগহাম স্ট্রিটের একটি রাস্তার বাঁকের বিরুদ্ধে তার গাড়িকে আঘাত করা হয় ও তাকে গান পয়েন্টে রেখে গ্রেফতার করা হয়। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ব্রেন্টন ট্যারান্ট আরও হামলার পরিকল্পনা করেছিল।

হামলার সময় ট্যারান্ট নিউজিল্যান্ডে ডুনেডিন এর এন্ডারসনস বে তে বাস করছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময় ধরে ট্যারান্ট নিউ সাউদ ওয়েলসের গ্রাফটনে একজন ব্যক্তিগত শরীরচর্চা প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১২ সাল জুড়ে তিনি এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। তুরস্ক ও বুলগেরিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে ট্যারান্টের ভ্রমণ নিয়ে তদন্ত করছে। সসে এই হামলার দুই বছর আগ থেকেই হামলাটির পরিকল্পনা করছিলো, এবং হামলাটির তিন মাস পূর্বে তিনি তার লক্ষ্যস্থানকে নির্বাচন করেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাগণ সন্দেহ করছেন যে তিনি আক্রমণ করার দুই বছর আগে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোতে ভ্রমণ করার সময় অতি-দক্ষিণপন্থী উগ্র সংস্থাগুলোর সংস্পর্শে এসেছিলেন।

হামলার অস্ত্র : নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ট্যারান্ট ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে একটি বন্দুক লাইসেন্স গ্রহণ করেন, এবং এর পরের মাস থেকেই অস্ত্র কিনতে শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার করে, এগুলোর মধ্যে ছিল দুটো সেমি-অটোমেটিক অস্ত্র, দুটো শটগান এবং একটিই লেভার-একশন আগ্নেয়াস্ত্র। তার ব্যবহৃত বন্দুক ও ম্যাগাজিনগুলোতে বিভিন্ন মুসলিম-অমুসলিমের মধ্যকার ঐতিহাসিক সংঘাত বা যুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত নানান ঐতিহাসিক ঘটনা, ব্যক্তি এবং প্রসঙ্গ সাদা কালিতে লেখা ছিল।

ডেভিড টিপন নামে একজন অস্ত্র-অধিকার আন্দোলনকারী এবং নিউজিল্যান্ডে ২০টি অস্ত্রের দোকানের মালিক ব্রেন্টন ট্যারান্টকে অস্ত্র ও গুলি বিক্রি করেছিল। হামলার পর তিনি একটি গণমাধ্যম সম্মেলনে তার বিক্রির জন্য কোনরকম দায় গ্রহণ করেন নি।

অস্ত্র ছাড়াও পুলিস দুটো ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলো নিউজিল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনী নিষ্ক্রীয় করেছে। হামলাকারীর কাছে কোন এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পাওয়া যায়নি।

ব্রেন্টন ট্যারান্টের বিচার : ১৫ ই মার্চ গ্রেফতারের পর ১৬ মার্চে তাকে ক্রাইস্টচার্চ জেলা আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে তার উপর খুনের অভিযোগ আনা হয়, এবং তার জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। কোর্টে হাজির করার সময় তিনি গণমাধ্যমের দিকে তাকিয়ে আসেন এবং একটি ওকে চিহ্ন দেন। শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এবং অনলাইন বর্ণবাদীগণ এই চিহ্নটিকে গ্রহণ করেছে, এবং একে তারা শ্বেত ক্ষমতা চিহ্ন (White Power symbol) বলে থাকেন। ব্রেন্টন আত্মপক্ষ সমর্থন করেন নি। তার মামলাটিকে উচ্চ আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং তার কঠোর বিচার হবে বলে আশ্বাস দেন নিউজিল্যান্ড সরকার। পরবর্তিতে নিউজিল্যান্ডের আদালত তাকে আমৃত্য কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।

হামলায় নিহতদের সংখ্যা : বর্বোরচিত এই নৃশংস হামলায় ৫০ জন নিহত হয় – যার মধ্যে থেকে ৪২ জন আল নূর মসজিদে, ৭ জন লিনউড ইসলামিক সেন্টারে এবং ১ জন ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে মারা যান। যাদের মধ্যে পাকিস্তানের ৬ জন, সোমালিয়ার ৪ জন, মিশরের ৩ জন, বাংলাদেশের ৫ জন, জর্দানের ৩ জন, আফগানিস্তানের ২ জন, ভারতের ২ জন, সিরিয়ার ১ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১ জন, অজ্ঞাত পরিচয়ের ২২ জন।

হামলার সন্ধ্যায় ৯.০০ টার দিকে বন্দুকযুদ্ধে আহত ৪৮ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়, যাদের মধ্যে থেকে ২০ জন গুরুতরতরভাবে আহত অবস্থায় ছিলেন।

ছবি সোর্স : Documenting Oppression Against Muslims

হামলার পুর্বে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ : হামলার আগে, আল নুর মসজিদের আক্রমণকারী ট্যারান্ট 8chan এর ইমেজ বোর্ডে এই হামলার ব্যাপারে উল্লেখ করে (“The Great Replacement”) শিরোনামে একটি ৭৩ পৃষ্ঠার ইস্তাহার পোস্ট করেন।

The Great Replacement হচ্ছে শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও এর ফরাসী প্রকরণের একটি সূত্র। হামলার ৯ মিনিট পূর্বে ট্যারান্ট ৩০ জনেরও বেশি গ্রাহকের কাছে তার ইস্তাহারটি ইমেইল করেছিল, যাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অফিস এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম অন্তর্ভূক্ত। তিনি হামলার ঠিক আগ মূহুর্তেই টুইটার ও 8chan এ তার ইস্তাহারের সূত্র পোস্ট করেন।

ইস্তাহারে বলা হয়, প্রায় দুই বছর আগে তিনি এরকম হামলার পরিকল্পনা শুরু করেন, এবং এই হামলার তিন মাস আগেই তিনি ক্রাইস্টচার্চকে তার হামলার লক্ষ্যস্থানকে নির্বাচিত করেন তিনি বলেন, মুসলিমদেরকে হত্যার লক্ষ্য বানাবার কারণ ছিল তাদের উপর প্রতিশোধ। আর এই প্রতিশোধ হচ্ছে “১৩০০ বছর ধরে মুসলিমদের পাশ্চাত্যে ও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে নেয়া প্রতিশোধ।

ইস্তাহারে বলা হয়, তিনি আগে একজন সাম্যবাদী, নৈরাজ্যবাদী এবং উদারবাদী ছিলেন। কিন্তু “বর্ণবাদী” দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন, এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তিনি পরিবেশ-ফ্যাসিবাদী হন। তিনি নিজেকে নাৎসী লেবেল দিতে অস্বীকার করেন, কিন্তু দ্য আমেরিকান কনজারভেটিভ ম্যাগাজিন বলছে তার আদর্শ জাতীয় সমাজতন্ত্রের সাথে মেলে। এছাড়া তার ইস্তাহারে নব্য-নাৎসি প্রতীক কালো সূর্য ও ওডিনের ক্রুশ বারবার দেখানো হয়। তিনি ধনতন্ত্রকে ঘৃণা করতেন এবং চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আদর্শ বলে মনে করতেন।

এই ইস্তাহারে বিভিন্ন মুসলিম-বিরোধী এবং অভিবাসন-বিরোধী অনুভূতির প্রকাশ পাওয়া যায়। সেই সাথে এখানে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কটূক্তি, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী অলঙ্করণ, এবং “শ্বেতাঙ্গ জাতির রক্ষার জন্য” “রাষ্ট্রে আক্রমণকারী” মুসলিমদের হত্যা করার আহ্বানও ছিল। তিনি নিজেকে একজন জাতিগত জাতীয়তাবাদী হিসেবে দাবি করেন। এছাড়াও তিনি বলেন রোমানি বা জিপসি, ভারতীয়, তুর্কী ও সেমিটীয় জনগোষ্ঠীর মত অ-ইউরোপীয়গণ “তার ভূমিতে আক্রমণ করছে” বলে উল্লেখ করেন। তিনি ভারত, চীন, তুরস্ক থেকেও ভবিষ্যতে আক্রমণ আসবে বলে সতর্ক করে দেন।

তিনি বলতেন, কেবল ইউরোপকে একতাবদ্ধ করার জন্যই খ্রিস্টধর্মের মূল্য রয়েছে। ট্যারান্ট পাশ্চাত্য সমাজের নৈতিক স্খলনের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। এই ইস্তাহারে উচ্চ মর্যাদার দক্ষিণপন্থী ব্যক্তিত্বের উল্লেখ করা হয়, ইন্টারনেট মিম দেখানো হয়। এবং সেইসাথে জনগণকে তাদের এই হামলাকে সমর্থন করতে এবং এনিয়ে আরও বেশি মিম তৈরি করতে উৎসাহিত করা হয়।

এই ইস্তেহারে, ট্যারান্ট বলেন যে তিনি একজন “প্রকৃত ফ্যাসিবাদী” এবং স্যার অসওয়াল্ড মোসলেকে তিনি আদর্শ বলে মনে করেন। এবং তিনি লন্ডনেরমেয়র সাদিক খান, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল ও তুর্কি রাষ্ট্রপতি রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানকে হত্যার আহ্বান করেন। ট্যারান্ট নিজেকে (“Reborn Knights Templer) এবং (“kebab removalist”) হিসেবে উল্লেখ করেন, এগুলো একটি ইন্টারনেট মিম থেকে পাওয়া শব্দগুচ্ছ। সেই মিমটা ছিল বসনীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে বসনীয় সার্ব সেনার বসনিয়ার গণহত্যা নিয়ে নিয়ে।

এই ইস্তাহারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এর উল্লেখ করা হয়। সেক্ষেত্রে ব্রেন্টন লেখেন, একজন “নীতি নির্ধারক ও নেতা” হিসেবে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেন না, বরং “তিনি নব্য জাগ্রত শ্বেতাঙ্গ পরিচয় এবং সাধারণ উদ্দেশ্যের প্রতীক” সেকারণে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেন। ইস্তাহারে এন্ডারস বেহরিং ব্রেইভিক, লুকা ট্রাইনি, ডিলান রুফ, এন্টন লান্ডিন পেটারসন, এবং ড্যারেন অসবোর্ন এর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়। বলা হয়, তারা “জাতিগত ও সাংস্কৃতিক গণহত্যা”এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন”।

এছাড়াও তাঁর এই উগ্র ও সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা পত্রে মুসলমানদের প্রতি আরও অনেক ঘৃণাচর্চামূলক কথার উল্যেখ ছিলো।

ইশতেহার বিশ্লেষণ : ইস্তাহারটি বিশ্লেষণ করেছেন এমন কিছু কিছু সাংবাদিক বলছেন, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নিয়ে বা ধর্মের লোক নিয়ে ট্রোল করা ও আলোচনা সৃষ্টি করার জন্য একটি জঙ্গি হামলার সাথে এই ইস্তাহারটি পেশ করা হয়। প্রস্তাব করা হয়, এই ইস্তাহারের ভেতরের মিমগুলোকে (যেমন নেভি সিল কপিপেস্টা যেখানে “৩০০ এর বেশি লোককে হত্যা করা” এর মত অর্জনের তালিকা করা হয়) গণমাধ্যম ভূলভাবে ব্যাখ্যা করেছে।

একজন তদন্তকারী মনে করছেন যে, “এই ইস্তাহারটি গণমাধ্যমের জন্য একটি ফাঁদ। আর এই ফাঁদটা সাংবাদিকদের জন্য পাতা হয়েছে যাতে তারা তার এই ভয়ঙ্কর অপরাধটির অর্থ খোঁজার জন্য পড়ে থাকে। তারা মনে করছে যে, তার এই ইস্তাহারে কোন সত্য আছে, হামলাকারীর মৌলবাদী হবার পেছনের কোন মূল্যবান সূত্র আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে প্রচুর পরিমাণে আজেবাজে কথাবার্তা বা শিটপোস্ট ছাড়া আর কিছুই নেই।” যেমন, আক্রমণের ঠিক আগে হামলাকারী বলেন, “মনে রেখো বন্ধুরা, PewDiePie এ সাবস্ক্রাইব করো”। এটি একটি মিম যেখানে জনপ্রিয় সুইডিশ ইউটিউব ব্যক্তিত্ব ফিলিক্স শেলবার্গ (Felix Kjellberg) এর কথা উল্লেখ করা হয়, যিনি পিউডিপাই ছদ্মনামে ভিডিও তৈরি ও প্রদান করেন।

শেললবার্গ টুইটারে লেখেন, “হামলাকারী লোকটি আমার নাম উচ্চারণ করায় আমি চরমমাত্রায় অস্বস্তি বোধ করছি”। আর সেই সাথে তিনি এই হামলার শিকারদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। সামাজিক গণমাধ্যমে শেলবার্গের এক কোটির মত অনুসরণকারী থাকায়, তার কথা বলার ফলে এই হামলা আরও বেশি নজর কাড়তে সক্ষম হয়। সাংবাদিকগণ মনে করছেন, তার ইস্তাহারে মতাদর্শিক সমালোচনা করা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম উল্লেখও গণমাধ্যমকে আগ্রহী করে তোলা ও তার বিষয়ে বেশি করে সংবাদ প্রচারণার জন্যই। সেই সাথে এই হামলার দোষ আংশিকভাবে সেই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চাপিয়ে দেওয়াটাও তাদের নাম উল্লেখের কারণ হতে পারে।

হামলাকারীর টুইটার একাউন্টটিকে বাতিল করা হয়েছে, সেটায় আগ্নেয়াস্ত্রের ছবি ছিল, সেই সাথে সেখানে নব্য-নাৎসি চিহ্ন কালো সূর্য এবং চৌদ্দ শব্দ পাওয়া যায়। ইস্তাহারটিতেও চৌদ্দ শব্দ পাওয়া গেছে।

সংগ্রহ : হাছিব আর রহমান। নির্বাহী সম্পাদক।

ঘটনাক্রম : নিউজিল্যান্ডে আল-নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা

নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলার প্রতিক্রিয়া : ইমরান খান বললেন সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই

হামলাকারী উগ্র সন্ত্রাসীর অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলছে ফেসবুক, নেই লাইভ ভিডিওটিও

অস্ত্র কেড়ে নিয়েছিলেন এই যুবক, নয়ত ‘লিনউড’ মসজিদেও বাড়তো শহীদের সংখ্যা

শান্তির স্থান মসজিদে হামলাকারীরা ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিষ্ট : আল্লামা বাবুনগরী

নিউজিল্যান্ডের নুর মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন নিহত ড. সামাদ

আদালত থেকে রিমান্ডে নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলাকারী উগ্র সন্ত্রাসী ব্রেন্টন

নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলা; ঘটনাস্থলে যাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল

সিজদা দিয়ে মসজিদে সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিবাদ জানালেন অমুসলিম ফুটবলার

কেউ বলছেন তাকে ‘ডিম বালক’ আবার কেউ ডাকছেন ‘হিরো’

মসজিদে হামলা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় অস্ট্রেলিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

মার্কিন গবেষণা ; বেশিরভাগ সন্ত্রাসী হামলার সাথে মুসলিমবিরোধীরা জড়িত

নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অধিবেশন শুরু

নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসীদবাদী হামলার নিন্দায় মোদি ট্রাম্প একই পথে হাটলেন

মিস্টার স্পীকার, আসসালামু আলাইকুম

কাল নিউজিল্যান্ডের সেই মসজিদে সর্ববৃহৎ জুমার জামায়াত হবে

সামরিক স্টাইলের অস্ত্র নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ডে জুমার নামাজ সরাসরি সম্প্রচার, দুই মিনিট নীরবতা পালন

মন্তব্য করুন