চলছে ঢাকা সিটির পরবর্তি ‘কর্ণধার’ ঠিক করার ভোট

ঢাকা সিটি নির্বাচন

প্রকাশিত: ৯:১২ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২০

আজ শনিবার সকাল আটটা থেকে রাজধানী ঢাকার দুই সিটির পরবর্তী ‘কর্ণধার’ বেছে নিতে ভোট দেওয়া শুরু করেছেন ভোটারেরা। সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দুই সিটিতে দুজন মেয়র, ১২৯ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ৪৩ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন ভোটারেরা।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে ইভিএম প্রযুক্তিতে। প্রথমবারের মতো ব্যালটে সিল মারাবিহীন পুরো একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। শুক্রবারই কঠোর নিরাপত্তায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোটকেন্দ্রগুলোতে মক ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

নিরাপত্তাকর্মীরা অবস্থান করছেন কেন্দ্রে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাও বলেছেন, তিনি কখনো পক্ষপাতমূলক নির্বাচন করেননি, এবারও করবেন না। ইভিএমে কোনোভাবেই কারচুপির সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও বিএনপি গতকাল শুক্রবারও ইভিএমে ভোট নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছে।

দুই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে দুই সিটিতেই প্রার্থী দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ  ও এনপিপি।

দক্ষিণের প্রার্থীরা হলেন: আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, বিএনপির ইশরাক হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, জাতীয় পার্টির সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এনপিপির বাহারানে সুলতান, গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের আক্তারুজ্জামান।

উত্তরে প্রার্থীরা হলেন: আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ, গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ, পিডিপির শাহীন খান, এনপিপির মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান এবং সিপিবির আহম্মেদ সাজ্জাদুল হক। স্থানীয় ভোটাও না হওয়ায় উত্তরে জাপা প্রার্থী জিএম কামরুল ইসলাম এর মনোনয়ন বৈধতা পায়নি।

ওয়ার্ড ও ভোটার সংখ্যা:

উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪, সংরক্ষিত ১৮, মোট ভোট কেন্দ্র ১৩১৮, মোট ভোটকক্ষের সংখ্যা ৭৮৪৬, মোট ভোটার ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ জন ও মহিলা ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন রয়েছেন।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫, সংরক্ষিত ২৫, মোট ভোট কেন্দ্র ১১৫০, মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৬৫৮৮, মোট ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ জন ও মহিলা ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন রয়েছেন।

এবারের সিটি নির্বাচনে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ৬ জন। কাউন্সিলর পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত আসনে ৭৭ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উত্তর সিটিতে ওয়ার্ড রয়েছে ৫৪ টি। ঢাকা দক্ষিণে ৭ জন মেয়র পদের জন্য লড়ছেন। কাউন্সিলর পদে ৩৩৫ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী প্রার্থী হয়েছেন ৮২ জন। দক্ষিণে ৭৫টি ওয়ার্ড। ঢাকায় ভোটারসংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। ঢাকা উত্তর সিটির ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৩১৮। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষের সংখ্যা ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭ হাজার ৮৪৬ টি। দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র এবং ভোট কক্ষ রয়েছে ৬ হাজার ৫৮৮ টি।

এবার ঢাকা উত্তরে ৮২৬ আর দক্ষিণে ৭২১টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে বাড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও নজরদারি থাকবে। ইভিএমে ভোট হওয়ায় ভেটের ফলাফল ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪ ঘন্টার মধ্যে জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অবশ্য কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফল ঘোষনার জন্য এক ঘন্টাই যথেষ্ট বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

ভোটকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে থাকবে কড়া নিরাপত্তা। যানবাহন চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩১ জানুয়ারি (শুক্রবার) মধ্যরাত ১২টা থেকে ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। তবে কিছু যানবাহন চলতে পারবে অনুমতি সাপেক্ষে। জরুরি বাহন এর আওতামুক্ত থাকবে। সদরঘাটে নৌ চলাচলও শুক্রবার রাত ১২টা থেকে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার থাকছে ভোটের নিরাপত্তায়।

মন্তব্য করুন