

বাংলাদেশের ঝিনাহদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে গত এক মাস যাবত ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের ধারাবাহিক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
আজ (২৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, গত এক মাসে বাংলাদেশের ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতের দিক থেকে হঠাৎ করে ব্যপক অনুপ্রবেশের যে ধারাবাহিক ঘটনা ঘটছে, তাতে স্পষ্টত- বুঝা যাচ্ছে যে ভারতের বিজেপি সরকার এনআরসির নামে বাংলাদেশ বিরোধী হুংকার ও বাংলা ভাষাভাষি মুসলিম উচ্ছেদ এখন বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে। এই অনুপ্রবেশের ঘটনায় শুধু ঝিনাইদহ সীমান্তেই মাত্র তিন সপ্তাহে ৩৫১ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
তিনি বলেন, পর্যবেক্ষকদের মতে যে পরিমাণ অনুপ্রবেশকারী আটক হয়েছেন, সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এর চেয়ে বহুগুণ বেশি ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী দেশের অভ্যন্তরে ডুকে পড়েছেন। এটা তো শুধু ঝিনাইদহ সীমান্তের খবর। অনুপ্রবেশের ঘটনা সীমান্তের অন্যান্য এলাকায়ও ঘটতে পারে। ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ বলপ্রয়োগ করে যেমন ভারত থেকে বাংলা ভাষাভাষি মুসলমানদেরকে সীমান্ত পথে এই দেশে ঠেলে দিচ্ছে, তেমনি ব্যপক মুসলিম নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতেও কেউ কেউ বাংলাদেশে ঢুকে থাকতে পারে।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, অনুপ্রবেশের এসব ঘটনা ষড়যন্ত্রমূলক ও চরম অমানবিকই শুধু নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর গভীর হুমকি তৈরি করছে। ভারতে এনআরসি’র কারণে আতঙ্কিত লোকজন সীমান্ত পথে বাংলাদেশে ঢুকছে- এটা কোনোভাবেই দেশের জন্য ভালো খবর নয়।
তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই বার বার বলে এসেছি, বাংলাদেশ সরকার যেন সরকারীভাবে ভারতের এনআরসি ইস্যুতে বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ করে। অথচ এতদিন যাবত প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে এনআরসি ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়- এতে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই বলে আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এখন যে হারে ভারত থেকে অনুপ্রবেশের ঘটনা শুরু হয়েছে, তাতে তো অনুদ্বিগ্ন থাকার আর কোনই সুযোগ থাকলো না। এই অনুপ্রবেশের খবরে আজ দেশের প্রতিটি মানুষ উদ্বিগ্ন।
আল্লামা কাসেমী বলেন, এনআরসি ইস্যুতে বাংলাদেশবিরোধী নানান প্রচারণার ঘটনাসসহ এখন লাগাতার ভারত থেকে অনুপ্রবেশের ঘটনায় বাংলাদেশের সরকারের নির্লিপ্ততা আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের নীতিমালা ভঙ্গ করে ভারতীয় নাগরিকদের ‘বাংলাদেশী’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে অবশ্যই অবিলম্বে কঠোর প্রতিবাদ’সহ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। সমগ্র সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের মতো আরেকটি গভীর সংকটের মুখে আমরা কোনভাবেই পড়তে চাই না।
/এসএস