নিজ শিশুপুত্রসহ ইমামের রুমে ৩ ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু : মূল ঘটনা

প্রকাশিত: ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০১৯
৩ মাদরাসা শিক্ষার্থী

গতকাল (৩০ আগস্ট) শুক্রবার চাঁদপুর জেলার মতলব (দক্ষিণ) পৌরসভাস্থ পূর্ব কলাদী খালপাড় জামে মসজিদে ইমামের রুমে ৩ জন মাদরাসা ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলেও মূল ঘটনা জানা যায়নি গতকাল পর্যন্ত। প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে পাবলিক ভয়েসের একটি টিম শুরু থেকেই সচেষ্ট ছিল।

ঘটনার মূলে গিয়ে জানা গেছে, গত তিনমাস আগে পূ্র্ব কলাদী খালপাড় জামে মসজিদে ইমামের দায়িত্ব নেন বরগুনার মাওলানা জামাল আহমাদ। এ মসজিদে মুয়াজ্জিনের চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গতকাল সেখানে উপস্থিত হয় মুহাম্মাদ রিফাত উদ্দীন (১৫)।

এসময় রিফাত জুমার নামাযের আযান দিয়ে ইমামের রুমে অবস্থান করে। সেখানে আগ থেকেই উপস্থিত ছিল ইমামের শিশুপুত্র নোমান আহমাদ (৫)। এরপর যোগ হয় নারায়ণপুর ইউনিয়নের মুহাম্মাদ ইবরাহীম। এরা ৩ জনই মতলব ভাঙ্গারপাড় মাদরাসার ছাত্র এবং এর মধ্যে মুহাম্মাদ রিফাত ভাঙ্গার পাড় মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আফসার উদ্দীনের ছেলে।

ইমামের রুমে ৩ জন খোশ মেজাজেই ছিল বলে জানান ইমাম জামাল আহমাদ। জুমার আলোচনার সময় হলে ৩ ছাত্রকে সময়মতো মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে মসজিদে চলে যান তিনি।

কিন্তু তারা আর মসজিদে যায়নি। নামায শেষে ইমামের রুম ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক্ষণ ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রুমের জানালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন স্থানীয় লোকজন।

ইমামের ৫ বছরের ছেলে নোমান ও অন্য ছাত্র ইবরাহীমকে ঘটনাস্থলেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলেও রিফাত তখন ছটফট করছিল। কিন্তু কথা বলতে পারছিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেও মারা যায়।

প্রথমত ধারণা করা হয়, এসিড খেয়ে মারা গেছে তারা। পরে আবার ধারণা করা হয় মসজিদের মিষ্টি খেয়ে মারা গেছে। পুলিশের ভাষ্য, মিষ্টি খেয়ে মারা গেলে অন্য লোকজনেরও ক্ষতি হতো কিন্তু তা হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে এসিড খাওয়ারও কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ, গোয়েন্দা ও র‌্যাবের একাধিক টিম উপস্থিত রয়েছে। মৃত্যুর মূল রহস্য অনুসন্ধানে কাজ করছেন তারা। আজ সকাল বারোটার পর লাশের পোস্টমর্টেম শেষে জানা যাবে, ঠিক কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

এ ব্যাপারে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি নোমানের বাবা ইমাম মাওলানা জামাল আহমাদ ও রিফাতের পিতা মাওলানা আফসার উদ্দীনের সঙ্গে।

আই.এ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন