

অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। এতে আমরা তৃপ্তি পাই, আনন্দ পাই। এরচে বড় কোনো আনন্দ নেই। এটাই আমাদেরে সবচে সেরা ঈদানন্দ
সীমানা ছায়া সংস্থা একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। গরীব-দুঃখী অসহায় মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানো, সাধ্যানুযায়ী তাদের প্রয়োজন মিটানো, মলীন মুখে হাসি ফুটানো এসবই যেন সংগঠনের কর্মীদের নেশা ও পেশা।
আর একটি রাত পোহালে ঈদ। ঈদের আনন্দে ভাসবে গোটা দেশবাসী। কিন্তু এই ঈদেও পাড়া-মহল্লায়, এখানে-সেখানে এমন অনেক মানব-মানবী কিংবা মানব শিশু রয়েছে যাদের মুখে হাসি ফোটেনি।
তাদের গায়ে ঈদের জামা নেই, মুখে ভালো খাবার নেই, ঈদ উদযাপনের কোনো রকম উৎসাহ বা সামর্থ নেই। এমন মানুষের মুখেই হাসি ফোটানো সীমানা ছায় সংস্থার কাজ।

রোববার কাপড় বিতরণের ব্যস্ততা
এই ঈদ উপলক্ষ্যে গত রবিবার (২জুন) নারায়ণগঞ্জ- চাষাঢ়া শহীদ মিনারে আয়োজন করা হয়েছিল ঈদ বস্ত্র বিতরণের। এদিন ছোট বড় বিভিন্ন বয়সী প্রায় ২০০ জনেরও অধিক ছিন্নমুল অসহায় মানুষদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করে এই সংগঠনের কর্মীরা।
এরমধ্যে শিশু ছেলেদের শার্ট প্যান্ট, মেয়েদের জামা, মহিলাদের শাড়ি, পুরুষ দের পাঞ্জাবি উপহার দেয় তারা।
কাপড় বিতরণ ছাড়াও তাদের রয়েছে ব্যতিক্রমি কার্যক্রম। পথশিশুদের মুখে হাসি তুলে দিতে তারা করে ভিন্নধর্মী আয়োজনের। ঘুরে ঘুরে রাস্তায় পথশিশুদের হাতে মেহেদি পড়িয়ে তাদের সাথে ঈদানন্দ ছড়িয়ে দেয়ার মাঝে খুঁজে পায় আনন্দ।

পথশিশুর হাতে মেহেদি পড়িয়ে দিচ্ছে সংগঠনের এক নারী কর্মী
বাচ্চাদের মেহেদি পড়ানো, নতুন জামা কিনে দেওয়া এসবই যেন তাদের ঈদের আনন্দকে সীমাহীন আনন্দময় করে দেয়। এসব আয়োজনে স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নেয় সংগঠনের কর্মী ও সদস্যরা। এরা সবাই কোনো না কোনো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।
সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি নূর মোহাম্মদ হৃদয়, সহ-সভাপতি মূধন, ইমু, রিফাত, তিথী, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা কানিজ ফাতেমা লিজা, সাংগঠনিক সম্পাদক আকাশ, অর্থ সম্পাদিক মুন। এছাড়াও অপমা, বাঁধন, লতা, মাসুমা, সিরা, সুমাইয়া, সাইফুল, মিম, ইশাসহ অনেকেই।
কথা হয় সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা কানিজ ফাতেমা লিজা’র সাথে। তিনি জানান, আমরা প্রত্যেকে যে যার সামর্থ অনুযায়ী অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকি।
এছাড়া আমরা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় কালেকশন করে অর্থ যোগাড় করি। এসবের পিছনে আমাদের একটাই লক্ষ্য- পথশিশু এবং অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলা।
যারা আমাদেরকে আর্থিক সহায়তা করে থাকেন তারা হয়তো চাইলেই নিজেরা এসব করতে পারেন। কিন্তু করা হয়ে উঠে না। কারণ হলো মানুষ সবাই যার যার পরিবার ও নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। প্রত্যেকেরই কর্মব্যস্ততা আছে।

এক ফ্রেমে সীমানা ছায়া টিম
ব্যস্তততার ফাঁকে মানুষ এই পথশিশুদের কথা ভুলে যায়। ভুলে যায় যে, এদের জন্য আমারও কিছু করার আছে। রাস্তা-ঘাটে চলার পথে মানবতার টানে মানবতাবোধ থেকে কখনো কখনো বিবেক তাড়া করে কিন্তু চূড়ান্তভাবে তাদের পাশে বসে সময় দেয়ার সুযোগ হয় না। এজন্য আমরা এই কাজটাই করে থাকি।
কারণ, আমারাও সবাই বিত্তবান ঘরের কেউ না। আমরাও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই উঠে এসেছি। এজন্য আমরা মানুষের সাহায্য নিয়ে এসব বাচ্চাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি।
অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। এতে আমরা তৃপ্তি পাই, আনন্দ পাই। এরচে বড় কোনো আনন্দ নেই। এটাই আমাদেরে সবচে সেরা ঈদানন্দ
সীমানা ছায়া সংস্থার এই কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র। ছড়িয়ে পড়ুক ছিন্নমুল, অসহায় মানুষ ও পথশিশুদের মুখে অনাবিল হাসি।
এসএস