পাবলিক ভয়েস: ভোটের মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। সারাদেশে চলছে ভোটেরে জমজমাট প্রচারনা। এই প্রচারে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপটাল্টি নিয়মিত অভিযোগও আসছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছ থেকে।
ভোটের প্রচারে কী কী করার সুযোগ আছে, আর কী করা যাবে না- তা জেনে নিতে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক নির্বাচনী আইনে-
১. তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকল্প অনুমোদন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অথবা উদ্বোধন এবং অনুদান বা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যাবে না।
২. দেয়ালে লিখে কোনো ধরনের প্রচার চালানো যাবে না। কোনো যানবাহন, দালান, সেতু, সড়ক দ্বীপ ও ডিভাইডারেও ভোটের প্রচার নিষিদ্ধ।
৩. নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতীক হিসাবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না।
৪. নির্বাচনী প্রচারে কোনো গেইট বা তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না কোনোভাবেই।
৫. প্রার্থী কিংবা সমর্থকরা ভোটের সমাবেশের জন্য ৪০০ বর্গফুটের বেশি আয়তনের প্যান্ডেল তৈরি করতে পারবেন না।
৬. প্রচারের সময় প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনে প্রতি ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ একটি নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করা যাবে।
৭. প্রচারের সময় বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ। ভোটারদের কোনো ধরনের খাবার বা উপঢৌকন দেওয়া যাবে না।
৮. মাইকে ভোটের প্রচার চালানো যাবে কেবল দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
৯. মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো উপাসনালয়ে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না।
১০. প্রার্থীর নির্বাচনী পোস্টার ঝুলিয়ে রাখতে হবে দড়িতে। পোস্টারে কেবল নির্বাচনী প্রতীক, প্রার্থীর ছবি এবং দলীয় প্রধানের ছবি ছাপানো যাবে। পোস্টার হবে নির্দিষ্ট মাপের এবং সাদা কালো, রঙিন পোস্টার নিষিদ্ধ।
১১. প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, হুইপ, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা ও তাদের সমান পদমর্যাদার কেউ, সংসদ সদস্য এবং মেয়ররা ভোটের প্রচারে প্রোটকল পাবেন না। কোনো উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধনও তারা করতে পারবেন না যা প্রচার বলে গণ্য হতে পারে।
১২. এক্ষেত্রে সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি মেশানো যাবে না। প্রচারে সরকারি যানবাহন ও অন্যান্য সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না।, প্রচারে সরকারি চাকরিজীবীদের ব্যবহার করা যাবে না।
১৩. প্রার্থী বা এজেন্ট না হলে ভোট দেওয়া ছাড়া ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকব এবং ভোট দেওয়া ছাড়া নির্বাচনের আগে এলাকায় সফর ও প্রচারণাও নিষিদ্ধ।
১৪. প্রচারের সময় উসকানিমূলক, মানহানিকর, ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয় এমন বক্তব্য দিলেও তা হবে আচরণবিধির লঙ্ঘন।
ব্যয়সীমা
তাছাড়া আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ভোটার প্রতি গড়ে সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন একজন প্রার্থী। তবে একটি আসনে ভোটার সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকার বেশি হতে পারবে না।
উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর ব্যয়সীমা ছিল ১৫ লাখ টাকা। সে সময় ৮ কোটি ১০ লাখ ভোটারের বিপরীতে প্রতি আসনে ভোটার প্রতি ব্যয় নির্ধারণ করা হয় গড়ে ৫ টাকা।
এছাড়াও ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয়সীমা বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হয়। তখন ভোটার ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ। ভোটার পিছু ব্যয় ধরা হয় গড়ে ৮ টাকা।
দেশে ৩০০ আসনে মোট ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। সেই হিসাবে আসন প্রতি গড় ভোটার দাঁড়ায় ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩০১ জন।
#এনাইকিউ
