একরাম হত্যার এক বছর : পরিবারের আকুতি

প্রকাশিত: ৪:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০১৯

‘আমি আর কিছু চাই না, শুধু একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। রহস্যটা জানতে চাই। কী ছিল আমার স্বামীর অপরাধ? কী অপরাধ করেছিল আমার অবুঝ দুটি বাচ্চা? আমি কী অপরাধ করেছিলাম? কেন আমার নিরপরাধ স্বামীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হলো? একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই প্রশ্নগুলোর জবাব চাই।’

নিহতের এক বছর পরও হয়নি ঘটনার তদন্ত। সেই আক্ষেপ আর হতাশা ঝরে পড়েছে একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগমের কণ্ঠে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি আজীবন আমার স্বামী হত্যার বিচার চাইবো।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেছিলেন টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় গত বছর ২৬ মে রাতে র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত টেকনাফের যুবলীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর একরামুল হকের স্ত্রী আয়েশা বেগম।

একরামের স্ত্রী বলেন, আমাদের শেষ ইচ্ছে ছিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে একরামের বিষয়টি সরাসরি বুঝিয়ে বলবো। এতে করে বাবাহারা দুই মেয়ে অন্তত শান্তি পাবে। কিন্তু এর কোনও কিছু হয়নি। বাবাহারা দুই মেয়ের চাপা কান্না আমার আর সহ্য হয় না।

তিনি আরো বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার বিচার করবে সরকার। তদন্ত করে দেখা হবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি। কিন্তু গত এক বছর পার হলেও কিছুই হয়নি।

উল্লেখ্য, ‘চল যাই যুদ্ধে-মাদকের বিরুদ্ধে’এই স্লোগানে দেশব্যাপি মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবা চোরাকারবারের অভিযোগে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন একরামুল হক। তিনি টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালি পাড়ার আবদুস সাত্তারের ছেলে এবং পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও স্থানীয় যুবলীগের সাবেক সভাপতি।

ওই সময় সারাদেশে অন্তত এক শ মাদক চোরাকারবারি নিহত হয় এবং সে ব্যাপারে কেউ মুখ খোলেনি। কিন্তু একরামুল বন্দুকযুদ্ধে নিহত এবং তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের একটি অডিও রেকর্ড সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সারা দেশে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।

শুরু থেকেই ওই জনপ্রতিনিধির স্বজনরা দাবি করে আসছেন, নির্দোষ একরামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকরা হয়েছে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে অনেকেই নিহত একরাম হকের বাড়িতে গিয়ে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন পরিবারকে। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরেও সে আশ্বাসের কিছুই পূরণ হয়নি।

জিআরএস/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন