

বাংলাদেশের আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে নিয়ে মে মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নাস্তিকদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশব্যাপী ঈমানী আন্দোলনের এক উত্তাল পরিবেশ তৈরি করে রাখতে পেরেছিলো। ৫ মে যে আন্দোলনের এক বিশাল জনবিস্ফোরণ দেখেছিলো বিশ্ব। ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭ বছর পেরিয়েছে এ উত্তাল আন্দোলনের দিনটির।
এ আন্দোলনের সূতিকাগার চট্টগ্রামে বা বীর চট্টলায়। দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর আহবানে সারাদেশের মুসলমান জনতা প্রবল বিক্রমে ১৩ দফা দাবি নিয়ে সিনা পেতে দাড়িয়েছিলো এদেশের ইসলামবিদ্ধেষী কিছু নাস্তিকদের বিরুদ্ধে। যে নাস্তিকরা ইসলাম ও মুসলমানদের নিয়ে একের পর এক বিষদগার করেই যাচ্ছিলো তখন।

হেফাজতের ১৩ দফা দাবি মানার ফেস্টুন নিয়ে একজন হেফাজত কর্মী। ছবি : ৫ মে ২০১৩
আল্লামা আহমদ শফীর ইখলাস ও তার প্রতি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ এ আন্দোলনের প্রতি মানুষকে পঙ্গপালের মত টেনে এনেছিল। ২০১৩ সালের পুরো মার্চ মাস জুড়ে সারাদেশের মানুষ জেনেছে হেফাজতের কথা_নাস্তিকবিরোধী আন্দোলনের কথা।
এ আন্দোলনের প্রথম প্রস্ফুটিত পুস্প ছিলো ৬-এপ্রিল ২০১৩ সালের ঢাকা অভিমূখে বৃহত লংমার্চ। বিভিন্ন ঘটনার পর এপ্রিল মাসের লংমার্চ থেকে হেফাজতের ১৩ দফা দাবি আদায় না হওয়ায় ৫ মে ঢাকা অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। সারাদেশব্যাপী ইমানী আন্দোলনে বলিয়ান হয়ে জনস্রোত ছুটতে থাকে ঢাকার দিকে। ৫ মে সকাল থেকে ঢাকার বেশিরভাগ প্রবেশ পয়েন্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দাড়ি টুপিওয়ালাদের দখলে চলে যায়।

ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে হেফাজত কর্মীদের অবস্থান। ছবি : ৫ মে ২০১৩
এ অবরোধের দিনটি বাংলাদেশের হক্কানী ওলামা-পীর-মাশায়েখ, আশেকে রাসূর সা. ও দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতার জন্য রক্তঝরা এক ঐতিহাসিক দিন বলে বিবেচিত অনেকের কাছে। সারাদিন কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা অবরোধ করে বিকেলে লক্ষ লক্ষ নবীপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ মানুষ জমায়েত হয়েছিল মতিঝিলের ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরে। লক্ষ্য ছিল- আমীরে হেফাজত, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী সমাবেশে আসবেন, আখেরী নসিহত পেশ করবেন, দোয়া করবেন এবং পরবর্তি কর্মসূচি দিবেন।
শাপলা চত্বরে হেফাজত কর্মীদের জনস্রোত। ছবি : সংগৃহীত
কিন্তু সেদিনের ঘটনা ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। সারাদিনের ক্লান্ত শ্রান্ত আন্দোলনকারীরা সঠিক গাইডলাইনের অভাবে শেষ পর্যন্ত ঢাকা ছেড়ে যেতে পারেননি। সবাই একত্রিত হয়েছিলো মতিঝিলের শাপলা চত্বরে। এরপর রাতের আধারে শাপলা চত্বরে নেমে এসেছে ভয়ংকর বিভিষিকা। হেফাজত নেতাদের দাবি অনুযায়ী সে রাতে শাপলা চত্বরে ভয়ানক হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
যদিও শাপলা চত্বরে নিহতদের ব্যাপারে কোনো শক্ত অবস্থান হেফাজতের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি। যে ধারাবাহিকতায় কওমী মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি পরবর্তি “শোকরানা মাহফিলে” সরকারের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা হেফাজত নেতাদের সামনে ‘অন দ্যা রেকর্ড’ স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন, “৫ মে শাপলা চত্বরে কোনো হত্যাযজ্ঞ হয়নি”। যে ঘোষণার তৎক্ষনিক প্রতিবাদ কাউকে করতে দেখা যায়নি। তবে পরবর্তিতে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ করেছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে রাতে শাপলা চত্বরে অবস্থান করা একজনের নিজস্ব বর্ণনামতে জানা যায়, সেদিন সন্ধ্যা থেকেই রাস্তার লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মতিঝিলের আশপাশের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হলো। বিটঘুটে অন্ধকারে সাংবাদিকদের বের করে দিয়ে দেশের দুটি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। গভীর রাতে সেখানে অবস্থান করা হেফাজত কর্মীদের সরিয়ে দিতে মুহুর্মুহু অস্ত্রের ব্যবহারে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেওয়া হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা দিকবিদিক ছুটাছুটি করেন এবং অনেকে গুলির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আলেম, হাফেজ, মুফতি, মহাদ্দিস, মুফসসিরসহ সারাদেশ থেকে আগত নিরিহ মানুষজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে এক ভিতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রাত পৌনে ৩ টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলা এ অভিযানে অনেকেই নিহত হয়েছেন বলে দাবি রয়েছে হেফাজত নেতাদের।
সন্ধ্যার পরপর শাপলা চত্বরে অবস্থান নেওয়া হেফাজত কর্মীরা।
গণমাধ্যমের ভাষায় হেফাজতের সেদিন অবস্থান নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। সেদিনের ঘটনা নিয়ে বিবিসির বিশ্লেষণে কিছু অস্বচ্ছ তথ্য প্রকাশ করা হলেও তারা সার্বিক বিষয়টি তুলে এনেছে এভাবে;
৫ই মে হেফাজতে ইসলাম এর ঢাকা অবরোধ এবং শাপলা চত্বরে অবস্থান নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। ভোররাতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে অবস্থানকারীদের শাপলা চত্বর থেকে উঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়েও ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল। ভোর পাঁচটা ৫ই মে ২০১৩, ফজরের নামাযের পরই ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে অবস্থান নিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
ঢাকায় প্রবেশ করা হেফাজতের জনস্রোতের একাংশ।
ঢাকার উত্তরে গাবতলী বাস টার্মিনাল, টঙ্গী এবং দক্ষিণে সায়দাবাদের কাছে কাঁচপুর ব্রিজসহ রাজধানীকে ঘিরে ছয়টি প্রবেশমুখেই অবরোধ তৈরি করেছিলেন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে সারাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার হাজার হাজার ছাত্র-শিক্ষক ও তৌহিদী জনতা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঢাকার ভিতরে প্রবেশ করে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলো।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব জাফরউল্লাহ খান দাবি করেছেন, অনেকটা আকস্মিকভাবেই তারা ঢাকায় প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হেফাজতে ইসলামের নেতারা শাপলা চত্বরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর অনুমতির জন্য পুলিশের সাথে আলোচনা শুরু করেন।
সকালে দফায় দফায় তাদের অলোচনা চলে। পুলিশ অনুমতি দেবে বলে মেনে নেয়। সকাল সাড়ে ১১ টায় অনুমতি মেলার আগেই বিভিন্নস্থান থেকে কয়েকটি মিছিল ঢুকে পড়ে মতিঝিল এলাকায় এবং সংঘর্ষ শুরু হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এবং পল্টন এলাকায়। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা হামলে পড়ে হেফাজত কর্মীদের ওপর। নৃশংসভাবে পেটানো হয় নিরিহ নিরস্ত্র মুসুল্লীদের। যার ছবি ও ভিডিও এখনও পাওয়া যায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেছেন, শেষ পর্যন্ত পুলিশ অনুমতি দিয়েছিল শাপলা চত্বরে এসে শুধু মোনাজাত করেই কর্মসূচি শেষ করার শর্তে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এবং পল্টন এলাকায় হেফাজত কর্মীদের ওপর সহিংসতা চলেছিল সন্ধ্যার পরও।
বেলা বারটা, সংঘর্ষ হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছে। সেখানে হেফাজতে ইসলামের মিছিলে আওয়ামী লীগের একদল নেতা কর্মী হামলা করে কয়েকজনকে শহীদ করে দিয়েছিল।
আওয়ামীলীগ নেতাদের হামলার শিকার হেফাজত কর্মী।
তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফের বক্তব্য হচ্ছে, তাদের কার্যালয়ে হামলা হলে, তখন সেখানে থাকা কিছু নেতাকর্মী প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত সকলেই এ তথ্য ভুল বলে দাবি করেছেন।
দুপুর দেড়টায় ঢাকার প্রবেশপথগুলো থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা এসে অবস্থান নেয় শাপলা চত্বরে। কিন্তু অন্যদিকে, পল্টন মোড় থেকে বায়তুল মোকারম মসজিদের চারপাশের রাস্তায় বিভিন্ন ভবনে অগ্নিসংযোগ , সংঘর্ষ সহিংসতা চলতে থাকে। পুলিশও দফায় দফায় গুলি চালায়। যুদ্ধক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল গোটা ঐ এলাকা। দিনের এই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন হতাহতও হয়।
নির্মম নির্যাতনের শিকার এক হেফাজত কর্মী
সন্ধ্যা গড়িয়ে যাওয়ার পর শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাদের বক্তব্যে সেখানে অবস্থান করার ঘোষণা আসতে থাকে। জাফরউল্লাহ খান বলেছেন, অবস্থানের বিষয়টাও এসেছিল পরিস্থিতির কারণে যেহেতু তখন ফিরে যাওয়ার কোনো পথ ছিলো না।
রাত সাড়ে আটটায় হঠাত করে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সংবাদ মাধ্যমে হেফাজত অবরোধ নিয়ে বিবৃতি দেন এবং বিএনপি নেতাদের মাঠে নেমে আসতে বলেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কও হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা হেফাজতের কর্মসূচির সাথে রাজনৈতিক কোন যোগসূত্র মানতে রাজি নন। তবে তারা বিষয়টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতেও রাজি হননি। অনেকে মনে করেন বিএনপির ধোঁয়াশা এই অবস্থানও ৫ মে রাতের ঘটনার জন্য কিছুটা দায়ী বলে মনে করেন অনেকে।
অন্যদিকে, অনেকেই মনে করেন, সে সময় যুদ্ধাপরাধের বিচারে সর্ব্বোচ্চ সাজার দাবিতে শাহবাগে বড় ধরণের যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তার পাল্টা হিসেবে হেফাজতের ১৩ দফার আন্দোলনকে দাঁড় করানোর একটা চেষ্টা ছিল কোন মহল থেকে। সেখানে জামায়াতে ইসলামীও কৌশলে সক্রিয় ছিল। এমনকি হেফাজতের বিভিন্ন প্রোগ্রামে জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবিতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়েও দাড়াতে দেখা গেছে।
রাত সাড়ে দশটায় হেফাজতে ইসলামের প্রধান আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে লালবাগ মাদ্রাসা থেকে নিয়ে শাপলা চত্বরের দিকে রওনা দেয় হেফাজত নেতাকর্মীরা। কিন্তু কিছুটা পথ এসেই পুলিশের কঠোর অবস্থানে নিরাপত্তার অভাবের কথা বলে আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তিনি আর আসেননি শাপলা চত্বরে। রাতে অবশ্য জমায়েতও অনেকটা কমে গিয়েছিল।
রাত সোয়া একটায় আলোচিত সেই রাতের অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পুলিশ, র্যাব, বিজিবির হাজার হাজার সদস্য তখন দৈনিক বাংলার মোড়, দিলখুশা, ফকিরাপুল এবং নটরডেম কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। অবস্থানকারীদের সরে পড়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে কমলাপুর ষ্টেশন যাওয়ার রাস্তা এবং বঙ্গভবনের দিকের রাস্তা খোলা রাখা হয়েছিল বলে দাবি রয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। তবে সে পথেও অনেকের ওপর হামলে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়।
যৌথবাহিনীর অভিযানের পর এভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে থাকেন অনেক হেফাজতকর্মী
অন্য তিন দিক থেকে র্যাব , বিজিবি পুলিশ সদস্যরা এগুনোর চেষ্টা করে এবং প্রথমে হাত মাইক ব্যবহার করে অবস্থানকারীদের সরে যেতে বলে। কিন্তু মঞ্চ থেকেও আসতে থাকে বিভিন্ন বক্তব্য। ঘণ্টা দেড়েক এভাবে চলে। এরপর ধিরে ধিরে মারমূখি অবস্থান নেয় যৌথবাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অনেক ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা যায় যৌথবাহিনী হেফাজত কর্মীদের ওপর নির্মমভাবে হামলে পড়েছে এবং নির্দয়ভাবে শান্তভাবে অবস্থান করা হেফাজত কর্মীদের ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে। এমনকি পরেরদিন আওয়ামীলীগের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হেফাজত কর্মীদের নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক ও আপত্তিকর বক্তব্যও দিয়েছেন। অপরদিকে ৬ মে সকালেও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীরে বেশ কয়েকজনের নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
যুগান্তর পত্রিকার রিপোর্ট মতে সেদিন রাতে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, পিপার গান, বৃষ্টির মতো সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়েছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবির যৌথ বাহিনী নিরীহ, নিরাপরাধ আলেম হাফেজ ও আশেকে রাসূলদের ওপর। ’
এই নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে হানাদার বাহিনীর বর্বরতার চাইতেও ভয়াবহ দাবি করে হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা বাবুনগরী বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা চালিয়ে যৌথবাহিনী ইতিহাসে এক নতুন কারবালা সৃষ্টি করেছে। তাদের জানা দরকার, হেফাজত কাফেলার মাতৃভূমি কিন্তু বাংলাদেশ। তারা এদেশের নাগরিক, আইন বিরোধী কোন কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত নয়, কোন দাগী আসামিও নয়, আলেমরা শান্তিপ্রিয়, সমাজে তারা মর্যাদাশালী। এরা কোন অন্যায় করে না। আলেম-ওলামাদের সঙ্গে জুলুমের পরিণতি খুব ভয়াবহ।
হেফাজতের তখনকার অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও ধর্মীয় অঙ্গনে একটি বিশাল আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিলো যা আজও চলমান। বাংলাদেশের যতগুলো আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিভিন্ন সময়ে জনমনে স্থান পেয়েছে তার মধ্যে হেফাজতের ৫ মে ঢাকা অবরোধ আন্দোলনটিও অন্যতম। অনেকেই বিভিন্নভাবে এ আন্দোলনের ইতিহাস মুছে ফেলতে চাইলেও এটাকে জনগণের মন থেকে মুছে ফেলা আসলে সম্ভব হবে না বলেই বিশ্লেষকদের মতামত।
আরও পড়ুন :
ফিরে দেখা ৫ মে : হেফাজতের ঢাকা অবরোধ
হেফাজতের লংমার্চ : চট্টগ্রাম ও ঢাকায় থাকা দু’জন প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে
হেফাজত-ট্রাজেডি : যা করার ছিল, সামনে যা করা দরকার
শাপলা চত্বরে কেউ হতাহত হয়নি এমন বক্তব্য নির্জলা মিথ্যাচার হবে: বাবুনগরী
নবীপ্রেমিক শহীদদের প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে: আল্লামা বাবুনগরী
৫ মে হেফাজত আন্দোলনে শহীদদের ভুলে যাবেন না : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ
#এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস