রূপগঞ্জে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০১৯

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার সাওঘাট এলাকায় একটি বাসায় গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরিফুর রহমান (৩৫) নামের আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার শরীরের ৬৫ শতাংশ পোড়া ছিলো।

এই নিয়ে এ ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো চারজনে। এর গত সোমবার (২২ এপ্রিল) তরিকুল ইসলাম (৩০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তরিকুলও আহতাবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য আরিফুর রহমানের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (২২ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার সাওঘাট এলাকার একটি দোতলা বাড়ির গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই বাড়িতে বসবাসরত দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও সাতজন।

নিহত দু’জন হলেন- মেহেরপুর জেলার মজিবনগর থানার কোমরপুর এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে শামীম (৩০) ও ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কয়া এলাকার রহিম বিশ্বাসের ছেলে হেলাল বিশ্বাস ওরফে রাকিব (২৫)। তারা স্থানীয় নেক্সট এক্সেসরিজ লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

আহতরা হলেন- নেক্সট এক্সেসরিজ লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিক তরিকুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, হযরত আলী, আরিফ, আনোয়ার হোসেন, ফারুক মিয়া, আরিফুর রহমান। এদের মধ্যে লিয়াকত ও আরিফের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় রাবেয়া আক্তার মিলি নামে এক আইনজীবীর দোতলা বাড়ি রয়েছে। মহাসড়কের পাশ দিয়ে স্থাপিত তিতাস গ্যাসের হাই-প্রেসারের পাইপ লাইন থেকে অবৈধভাগে ওই বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ নেন মিলি। হাই-প্রেসারের পাইপ লাইন থেকে আবাসিক গ্যাস সংযোগ নেওয়াটা পুরোটাই ঝুঁকিপূর্ণ।

ধারণা করা হচ্ছে, তিতাস গ্যাসের হাই-প্রেসার পাইপ লাইন থেকে নেওয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই ভবনটি স্থানীয় নেক্সট এক্সেসরিজ লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। শবে বরাতের কারণে সব মিল-কারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের প্রেসার ছিলো অধিক। ভোর সোয়া ৩টার দিকে হঠাৎ করে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ভবনটির পুরো দেয়াল ভেঙে প্রায় ৫০ থেকে ৩০০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। এসময় পুরো এলাকা কেঁপে উঠে।

পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ছয়জনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে এবং তিনজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে শামীম ও রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক মিলি বলেন, অন্যরা যেভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছেন, আমিও সেভাবেই নিয়েছি। তবে আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

জিআরএস/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন