শিগগিরই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হবে মালয়েশিয়ার সঙ্গে

প্রকাশিত: ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০১৯

২ দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানো এবং প্রবাসীদের সুরক্ষায় মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্রুত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে চায় বাংলাদেশ। বেশ আগেই এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আপত্তির কারণে এ চুক্তি করা সম্ভব হয়নি।

তবে এখন এফটিএ করার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে এনবিআর। এ কারণে খুব শিগগিরই পণ্য আমদানি-রফতানিসহ সেবা খাতকে সংযুক্ত করে এফটিএ করার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়ার সঙ্গে এফটিএ করার উদ্যোগ অনেক আগেই নেয়া হয়েছিল।

এজন্য দুই দেশই ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিও (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু রাজস্ব কমে যাবে বলে এ বিষয়ে বাধা দেয় এনবিআর। ফলে এফটিএ বিষয়টি আটকে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে শুল্ক উঠে যাবে। এটি বিবেচনায় এনবিআর এখন এফটিএ করতে বাধা দিচ্ছে না।

এনবিআর থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর আবারও মালয়েশিয়া সরকারের কাছে এফটিএ প্রস্তাব পাঠানোর জন্য রিপোর্ট প্রস্তুত করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শিগগিরই পণ্য আমদানি-রফতানিসহ সেবা খাতকে সংযুক্ত করে প্রস্তাব পাঠানো হবে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।’

সেবা খাতকে সংযুক্ত করে মালয়েশিয়া কি এফটিএ করতে রাজি হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে যখন মালয়েশিয়ার সঙ্গে এফটিএ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তখনও আমরা সেবা খাতকে সংযুক্ত করে এফটিএ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম।

ওই প্রস্তাব মালয়েশিয়া সরাসরি গ্রহণ না করলেও প্রত্যাখ্যান করেনি। তারা বিবেচনাধীন রেখেছিল। তাই আশা করছি, সেবা খাতকে সংযুক্ত রেখে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করবে।’

সেবা খাতকে সংযুক্ত করে এফটিএ করলে বাংলাদেশ কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের দেশ থেকে অনেক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যায়। কিন্তু কিছুদিন পরপর তাদের ফেরত পাঠানো হয়।

আবার অনেক সময় তারা শ্রমিক নিতে চায় না। তাই এফটিএ-তে সেবা খাত সংযুক্ত করলে হুটহাট করে তারা শ্রমিক ফেরত পাঠাতে পারবে না। আবার ইচ্ছা হলেই শ্রমিক নেব না, এটাও বলতে পারবে না। এক কথায়, একটি স্থিতিশীল শ্রমবাজার পাওয়া যাবে।’

সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রায় সাত লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন কাজে যুক্ত। তারা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ১১০ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়াও অনেক রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন এসব প্রবাসী। সেবা খাতকে সংযুক্ত করে এফটিএ করা হলে প্রবাসীদের যেমন দেশে ফেরত আসার আশঙ্কা থাকবে না, তেমনি অনেক মানুষ নতুন করে মালয়েশিয়ায় যেতে পারবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৩ কোটি ২৪ লাখ ডলারের পণ্য মালয়েশিয়ায় রফতানি করেছে। একই সময়ে মালয়েশিয়া থেকে ১৩৬ কোটি ৩১ লাখ ডলারের পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করেছে।

এসব পণ্য আমদানি-রফতানিতে শুল্ক হিসেবে এনবিআর আয় করেছে প্রায় ১০ লাখ মার্কিন ডলার। এফটিএ হলে এ রাজস্ব হারাবে এনবিআর। এ কারণে এতদিন তারা এফটিএ করার বিপক্ষে ছিল।

আইএ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন