খুলনায় তালিকাভুক্ত ভূমিদস্যু ও জালিয়াতি চক্রেরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ৯:৪১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০১৯

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা: শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দিলিপ কুমার দাস বলেন, আমি অতীব ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে জানাচ্ছি যে, আমার তিন ভাই বিজন কুমার দাস, অরিন্দম কুমার দাস এবং বাসব কুমার দাস সর্বপিতা সুরেশচন্দ্র দাস ওয়ারেস ও ক্রয়সুত্রে কিছু জমির  সি.এস. এবং এস. এ. ২৭২ এবং ১৯১  খতিয়ানের মালিক।

যা ক্রয়-বিক্রয় বাবদ আমাদের পিতা সুরেশচন্দ্র দাশ, তুলসিরাম বিশ্বাস, বাসুদেব বিশ্বাস ও প্রেমদাশ বিশ্বাস – এর নামে তুল্যাংশে বাংলাদেশ ভূমি জরিপ অনুসারে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা থানার মাথভাঙ্গা মৌজায় বি আর, এস ৪৫৮ নং খতিয়ানে ২৬৮৭, ২৬১২, ২৫৪৬, ২৫৪৮, ২৫৫১ ও ২৬১ নং দাগে সর্বমোট ১০.৪১ একর জমি চুড়ান্ত ভাবে ১৯৯১ সালে প্রকাশিত হয়েছে। যা আমরা কর খাজনা প্রদান পূর্বক অদ্যাবধি ভোগ দখলকার আছি।

গত শুক্রবার আনুমানিক সকাল ১০ টার দিকে দেখাশুনার জন্য আমরা আমাদের জমিতে অবস্থান করা কালীণ যুদ্ধাপরাধী মামলার তালিকাভূক্ত কুখ্যাত রাজাকার সামসুর রহমান ওরফে সামসু রাজাকার, পিতা মুন্সী রুস্তম আলী ওরফে কফিল উদ্দিন, আমিন আহম্মদ, আলী আরিফ, আবুল কালাম ওরফে ডিস কালাম, সাঈদসহ বেশ কিছু লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে হাজির হয়। আমাদের চোখের সামনে আমাদের ভোগদখলিয় সীমানা খুটি তছনছ করে জমি দখলের জন্য তান্ডব করে হীন পায়তারা চালায়। ফের জমিতে এলে আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দ্রুত কেটে পরে।

তিনি আরো বলেন, বি,আর,এস রেকর্ড প্রকাশিত হবার পর (মাথাভাঙ্গা মৌজা ১৯৯১ সালে প্রকাশিত) থেকে ভূমির রেকর্ডিয় মালিক ছাড়া অন্য কেউ খতিয়ান ভূক্ত কোনো দাগের জমি বিক্রয় বা হস্তান্তর করতে পারেনা। অথচ জালিয়াতি চক্রের হোতা ভূমিদস্যু সামসুর রহমান, পিতা মুন্সি রুস্তম আলী ওরফে কফিল উদ্দিন, সাং লবনচরা, পোস্ট শিপাইয়ার্ড, থানা লবনচরা, জেলা খুলনা, আরিফ আহমেদ ও মহসিন জমাদ্দারসহ আরো কয়েকজন দূর্নীতির মাধ্যমে, জাল জালিয়াতি কাগজপত্র তৈরি করে নিজেদের ৪৫৮ খতিয়ানে ষোলোআনা অংশের রেকর্ডিয় মালিক সেজে আমার রেকর্ডিয় এবং ভোগ দখলকৃত ২৬১ নং দাগের জমি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন পিতা সামসুর রহমান, মোঃ সৈয়দ আলী মোড়ল পিতা মুনছুর আলী মোড়ল, আবুল হোসেন পিতা সোলায়মান, রনজিৎ কুমার দাস ও দলিল লেখক তুষার কান্তি দাসের যোগসাজশে বিগত ইং ২৭/০১/২০০৪ তারিখে ২৮৯ নং কবলা দলিলে এস এম বেলায়েত হোসেন এবং ইং ১২/০২/২০০৫ তারিখে ৪৫৮ নং কবলা দলিলে মোঃ মানিক হাওলাদার পিতা আলতাফ হাওলাদারের কাছে হস্তান্তর করে বলে দেখা যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ পর্যন্ত এই জালিয়াতি চক্র বিভিন্ন নামে প্রায় ২৫/৩০ দলিল রেজিট্রি করে দিয়েছে।

তিনি দালিলিক কিছু প্রমানও উপস্থাপনা করে বলেন, এভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া কাগজপত্র সৃষ্টি করে যদি আমাদের মতো সংখ্যালঘুদের নামে রেকর্ডিয় পৈত্রিক সম্পত্তি ভূমিদস্যুরা বিক্রি করে দিতে থাকে তবে আমরা কোথায়, কার কাছে গিয়ে আশ্রয় নেবো ? মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন স্বঘোষিত রাজাকার (মামলা চলমান), দূর্নীতিবাজ (মামলা চলমান), জালিয়াতকে (মামলা চলমান) প্রতিরোধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ব্যর্থ হলে সমাজের অস্থিরতা বেড়েই চলবে বলে মনে করি।

তিনি ভয়ার্ত কন্ঠে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে এহেন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং পাশাপাশি তার সাথে ঘটে যাওয়া অমানবিক অত্যাচার ও মৃত্যু ঝুঁকির কথা  চিন্তা করে এর সু ব্যবস্থার আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজন কুমার দাস, অরিন্দম কুমার দাস এবং বাসব কুমার দাস।

মন্তব্য করুন