শীর্ষ আলেমদেরকে বিতর্কিত করার প্রকল্প

প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০১৯

সম্প্রতি ইসলামী আলোচক বিভিন্ন বক্তাদের নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনায় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। সেখানে বেশকিছু বিষয় নিয়ে ইসলামী আলোচকদের উপর আপত্তি তোলা হয়েছে। নির্দিষ্ট করে ১৫ জন আলোচকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় আপত্তিপত্রও দিয়েছে। পনেরোজন হলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম, জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসার শাইখুুল হাদিস আল্লামা মামুনুল হক, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া, মোহাম্মদপুরের মুহতামিম মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন, আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসূফ, মুফতি ইলিয়াছুর রহমান জিহাদী, মুজাফফর বিন বিন মুহসিন, মতিউর রহমান মাদানী, মাওলানা আমীর হামজা, মাওলানা সিফাত হাসান, দেওয়ানবাগী পীর, মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, হাফেজ মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, মোহাম্মদ রাক্বিব ইবনে সিরাজ।

এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। ইসলামী আলোচকদের উপর পরিকল্পিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলছেন কেউ কেউ।
বিশিষ্ট অলনাইন অ্যাকটিভিস্ট শামসুদদোহা লিখেছেন :

মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম আল্লামা মামুনুল হক ও মুফতী সাখাওয়াত হোসেন রাজীসহ যে ১৫ জন বক্তার নামের তালিকা এসেছে, সত্যি বলতে কি! এদের কয়েকজন ছাড়া বাকীরা তো সবাই ই কমবেশী বিতর্কিত। এদের ব্যাপারে সরকার কেন, অনেক আলেমরই আপত্তি আছে।তাঁদের নিজ নিজ আদর্শের ব্যাপারেও প্রশ্ন আছে। জিহাদী, আমির হামজা তো ভাঁড় এর কোটায় পড়েছে। তাঁরাও স্টেজ কাঁপায় স্থুল ও রসাত্মক কথাবার্তা বলে।ঐ নিবন্ধে হেলিকপ্টার ব্যবহার ও ঘন্টাভিত্তিক চুক্তির বক্তার প্রসংগ এসেছে। কিন্তু তালিকাভুক্ত বক্তারা হেলিকপ্টারে তো অভ্যস্ত না! কেমনে কি? আল্লামা মামুনুল হক যা বিশ্বাস করেন তা দরাজ গলায় এবং সরাসরি বলেন। কেউ মানুক আর না মানুক সেদিকে তিনি তাকান না। তিনি সরকারের মুখের দিয়ে চেয়ে কথা বলেন না। অনুরূপ মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তাঁর বয়ানে সরকারবিরোধী অনেক বক্তব্য থাকে, বিরোধী রাজনীতিকদের ব্যাপারে কথা থাকে। তাঁর বক্তব্য যুক্তি ও তথ্যনির্ভর। তিনি এমনি একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি, যিনি ঘটনার পরবর্তী সিনারিও কি হতে পারে তা আগাম ইঙ্গিত দিতে পারেন। দেশে ইসলামী আদর্শ ও সংস্কৃতি কেমন থাকা দরকার সে ব্যাপারে জোরালো আবেদন থাকে। দেশের অপসংস্কৃতি বিলোপের আন্দোলনে তিনি উচ্চকন্ঠ। এতে সরকারের পলিসির সাথে সাংঘর্ষিক হলে হোক না! তিনি বলে যান। ইসলামের স্বার্থে সত্যকথা বলার লোক এ দেশে কয়জনই বা আছে?

কি জানি? সরকার বাহাদুর তাঁর উপর ঠিক কোন কারণে গোস্সা হয়েছেন জানি না।

গত ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বরিশালে শোভাযাত্রাপূর্ব জনসভায় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে সরকারকে উদারতা দেখাতে বলেছেন। আর প্রতিশোধের রাজনীতি পরিহার করতে বলেছেন। এমন বক্তব্য তো সহ্য হবার নয়। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে কতক বক্তার বিষয়ে বেশ লেখালেখি হয়েছে। আহলে হাদিস গোত্রের আলেমদের ব্যাপারে তো আসলে হকদের আপত্তি বরাবরের। বাতিল ফেরকা দেওয়ানবাগী পীরের নামও এসেছে। আপাদমস্তক এ ভন্ড লোকটির নাম উঠায়ে সরকারীভাবে প্রমোট দেয়া হচ্ছে। সরকার কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। কাঁচাপাকা মিলিয়ে এ তালিকাটা করেছে। যা অনুচিত হয়েছে। নায়েবে আমীর হুজুরের উপর ভিন্ন কারণে সরকারের আপত্তি থাকতে পারে, তবে তার বয়ান নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠার কথা না। তিনি মাস্টার পিস্। তিনি আহলে হকের ঝান্ডা তুলে ধরনেওয়ালা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা থেকে সুপারিশমাখা প্রতিবেদনে যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে সেসব বিষয়ে অন্ততঃ তাঁকে অভিযুক্ত করার কোন ভিত্তি নেই।

আর মামুনুল হক ও তো একই ঘরানার। তাঁর বক্তব্যে তো ঈমানী জজবার উন্মেষ ঘটে। অডিয়েন্সের উদ্দেশ্যে তিনি আওয়াজ করে জানান দেন- জাতির কি করা উচিত, কি উচিত নয়! সরকার তাতে নাখোশ হতে পারে। নায়েবে আমীর হুজুর ও মামুনুল হক সাহেব দুজন নিমিষেই তরুনদেরকে উজ্জীবিত করতে পারেন। রাজী সাহেবকে খুব একটা জানিনা। তবে উনার বক্তব্য বিবৃতি দেখেছি। উনি বিতর্কিত আলেম নন, সেটা জানি। উগ্রতায় এরা কেউই বিশ্বাসী নন। তাঁদের ভক্ত ও অনুসারীরা এখন বসে থাকবেনা। প্রতিবাদ করবে। সরকারের এসব আঁতলামি সহ্য করা হবে না। একতরফা অভিযোগ এনে নিজেরা সিদ্ধান্ত নেয়া এক প্রকার জুলুমের নামান্তর। বিতর্কিত ও দড়ি ছেঁড়াদের সাথে অতি সম্মানিত আলেমদেরকে গুলিয়ে ফেলে তাঁদেরকে বিতর্কিত করার খায়েশ পূরণ হবে না কখনো, ইনশাআল্লাহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় আপনাদের নাম এসেছে তাতে কি? সম্মাণ একটুও কমবেনা। ববং ইজ্জত বহুগুণে বাড়ায়ে দিবেন।

মন্তব্য করুন