‘যে জমিয়ত করে না, সে দেওবন্দের জারজ সন্তান’ জমিয়ত নেতার এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০১৯

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক ফয়জুল হাসান খাদিমানি এক আলোচনায় দেওবন্দি বিষয়ক মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘যারা দেওবন্দি দাবি করে আবার জমিয়ত করবে না, তারা দেওবন্দের জারজ সন্তান’

তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অনেকেই বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। দেখিয়েছেন কড়া প্রতক্রিয়া।

ফেসবুকে একজন লিখেছেন,

এমন উগ্র বক্তব্য আমাদের মধ্যে কেবল দূরত্বই বৃদ্ধি করে৷ শতায়ু একটা রাজনৈতিক দল বারবার বিভক্তির সম্মুখীন হওয়া এং কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল থাকার পিছনে এমন উগ্র বক্তব্যেরও কিছুটা দায় আছে৷ জমিয়তের শীর্ষ অনেক মুরব্বীদের সাথে দীর্ঘ পরিচয় ও উঠাবসা সত্ত্বেও এমন বক্তব্য ও মনোভাব কখনো শুনি নি৷

জমিয়ত নেতার এ মন্তব্যের জবাবে দারুল উলুম দেওবন্দের ছাত্র ও ভারতে দীনি শিক্ষায় শিক্ষানবিশ চিন্তাশীল তরুণ আলেম মুনশি মোহাম্মদ আবু দারদা পাবলিক ভয়েসের কাছে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেন,

কত বড় মূর্খ হলে এমন জঘন্যতম কথা বলতে পারে! তাহলে কি জমিয়ত ব্যতিত অন্য দলের সবাই জারজ সন্তান! যেমন শাইখুল হাদীস রহ. মরহুম পীর সাহেব চরমোনাই রহ. মুফতী আমিনী রহ. সহ শীর্ষ স্থানীয় উলামা কেরাম৷ আমি জমিয়ত জীবনেও করি নাই কিন্তু দেশে থাকতে সাপোর্ট করতাম বর্তমানে দেওবন্দে দীর্ঘ চার বছর থাকার পর তাও করিনা৷ কারণ আমি স্বচক্ষে দেখেছি ভারতের জমিয়তের সাথে বাংলাদের জমিয়তের চুল পরিমানও মিল নাই ৷ তিনি আরও বলেন, জমিয়তের সাথে দেওবন্দের কোন সম্পর্ক নাই৷ জমিয়ত একটা দলের নাম আর দেওবন্দিয়্যত কোন দলের নাম না। দেওবন্দের কোন উসুলে লেখা নাই যে দেওবন্দি হতে হলে জমিয়ত করতে হবে৷

এ বিষয়ে অন্য একজন তার মন্তব্যে লিখেছেন,

এগুলো ভাইরাল না করাই ভালো হতো। অজপাঁড়া গায়ের কচিকাচা বাচ্চাদের সামনে এগুলো হয়তো অতি জজবায় বলে ফেলেছেন! আল্লাহ সকলকে সুমতি দান করুন। এ সময় এসে এভাবে দেওবন্দিয়ত নিয়ে টানা হেচড়া করার কি দরকার ছিলো।

তবে পাবলিক ভয়েসের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যের সত্যতা কতটুকু; এ বিষয়ে জানতে চাইলে জমিয়তের কেন্দ্রীয় এক নেতা এটার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা বেশ দিন আগের একটি ভিডিও ক্লিপ। যেটা তিনি কোনো এক সেমিনারে আবেগবশত উপস্থাপন করেছিলেন। তবে এটার কী ব্যাখা বা কেনই বলেছিলেন এর কোনো ব্যাখা দিয়েছেন বলে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। উপমহাদেশের ধর্মীয়, সামাজিক, ও রাজনৈতিক ইতিহাসে উলামা-মাশায়েখদের গৌরবময় ভূমিকা এবং অসাধারণ ত্যাগ-তিতিক্ষা চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। দেশপ্রেমিক, স্বাধীনতাকামী, সংগ্রামী উলামায়ে কেরামের রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। কিন্তু এই আকাবির আসলাফের দলকে কেন্দ্র করে প্রায়ই অনেক নেতাকর্মীর কিছু আবেগী বক্তব্য দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। যেটা তরুণ চিন্তাবিদদের আহত করছে বার-বার।

জমিয়ত নেতার বক্তব্যের ভিডিও :

https://www.facebook.com/darda.shakib/videos/643894582735990/

মন্তব্য করুন