

ওমানে কিছু অসাধু ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন উপায়ে মাদকদ্রব্য পাচার করছে, সেই সাথে পতিতাবৃত্তির মতো অপরাধ করছে কিছু অসাধু চক্র। এদের জন্য হুমকির মুখে পড়ছে ওমানে থাকা সাধারণ প্রবাসীরা। ইতোপূর্বে ওমান ও কুয়েত থেকে মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার বিভিন্ন অভিযোগ আসছে গাজি সেলিমসহ তার সাথের অনেকের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেল এ বিষয়ে নিউজও প্রচার করেছে। এদের বিরুদ্ধে ওমানের কোর্টে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসে থাকা সাংবাদিকরা।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর এরা ওমানে প্রবেশ করেছে আজ এমন তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক সাংবাদিক। এই সমস্যার সাথে সম্পৃক্ত যারাই আছে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরিয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন ওমানের প্রবাসীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবাসী বলেন, এদের কারণে আমরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি মত থাকতে পারি না। তাদের অন্যায়ের বোঝা আমাদেরও নিতে হয় মাদক চোরাচালান সহ এমন কোন অন্যায় নেই যা তারা করে না তাই এদেরকে ধরিয়ে দিলে আমরা আশা করি কিছুটা শান্তিতে প্রবাসে থাকতে পারবে।

তোষকের মধ্যে করে নেওয়া গাজার চালান
এর মধ্যে গত কয়েক দিন আগে তোষকের মধ্যে করে নেওয়া গাজার চালানের বিষয়ে বাংলাদেশে সোচ্চার হয়েছে ডিবি পুলিশ জানা যায়, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের যাত্রীর কাছ থেকে গাঁজা উদ্ধারের মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান গুরুত্ব বিবেচনা করে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত সোমবার (১৮ মার্চ) দুবাইগামী বিমানের যাত্রীর তোষকের ভেতর থেকে গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় নগরীর পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের হয়। বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এপিবিএন’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
সোমবার শাহ আমানত বিমানবন্দরে আটক যাত্রী মো. রুবেল প্রকাশ আল আমিনের (৩৬) বহন করা তোষকের ভেতরে পাওয়া যায় সাড়ে পাঁচ কেজি গাঁজা। এসময় তাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে আসা মো. নিজাম উদ্দিন (৩১) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত সিভিল এভিয়েশন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, রুবেল দুবাইগামী বিমানের যাত্রী ছিলেন। বিমানটি দুবাই হয়ে মাস্কাটে যাবার কথা ছিল। রুবেল ওমানপ্রবাসী। আটকের পর রুবেল স্বীকার করে- সে গাঁজাগুলো মাস্কাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শাহ আমানত বিমানবন্দরে আবুধাবীগামী আরেক বিমানের যাত্রীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ইয়াবা ও গাঁজা পাওয়া যায়। মো.জমির উদ্দিন (৩১) নামে ওই যাত্রীর জুতার সোলের ভেতর থেকে ৫৪০ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোস্তাইন বলেন, ‘আমরা আশা করছি, সহজেই এই মামলার রহস্য আমরা উদঘাটন করতে পারব। ওমানে যারা আছেন তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাব। আমরা ইন্টারপোলের কাছেও যাব। মামলা তদন্তের প্রয়োজনে ওমানে যাব।’ তবে বাহকদের গ্রেফতারের সূত্র ধরে মাদক চালানের নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের ধরার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সমিতি, ওমানের সভাপতি ইয়াছিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে যাদের ধরা হয়েছে, তাদের ছবি আমি দেখেছি। আমার মনে হয়েছে তারা ক্যারিয়ার। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ক্যারিয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশে গডফাদার কারা, ওমানে কাদের কাছে মাদক নেওয়া হচ্ছিল, সেটা যেন বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কয়েকটি চালান ধরা পড়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের প্রবাসীদের এবং দেশের ভাবমূর্তি কিছুটা উজ্জ্বল হয়েছে। গডফাদারদের ধরতে পারলে এটা পুরোপুরি বন্ধ হবে।’