জঙ্গীবাদের অপবাদ নয় আকাবীরদের বিষয়ে ভ্রান্ত ধারণার কারণে ছাত্র বহিস্কার করা হয়েছে

প্রকাশিত: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০১৯

রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত বাইতুন নুর মাদ্রাসা থেকে ৫ জন ছাত্রকে বহিষ্কারের বিষয় নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন কওমী মাদরাসার আকাবির তথা মুরুব্বীদের নিয়ে তাদের কঠোর মন্তব্যের জের ধরেই তাদেরকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাইতুন নূর মাদরাসার মুহাদ্দিস ও নায়েবে মুফতি মাওলানা হাছান মাহমুদ। তিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন।

এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানান;

কয়েকজন ছাত্রের ব্যপারে আমাদের কাছে কিছু কঠিন অভিযোগ আসে। আমরা এগুলো যাচাইয়ের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করি। পরে কয়েকজন ছাত্রের ব্যাপারে আমরা জানতে পারি তারা আমাদের আকাবিরদের ব্যাপারে তাকফীরী আকীদা  (ভ্রান্ত ধারণা) রাখেন। আমরা মিটিং-এর মধ্যেই তাহকীকের জন্য একজন ছাত্রকে ডেকেছি যার ব্যাপারে আমরা জেনেছি সে শায়খুল ইসলাম আল্লামা তাকী উসমানীকে কাফের বলেছে। সে তখন আমাদের সবার সামনে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হলেও এ কথার স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মাওলানা আবদুল মালেক সাহেবকেও তারা ছাড় দেয় না। এক ছাত্রের ভাষ্য, তিনি নাকি ভয়ে ফাতওয়া দেন না। তাদের একজনকে ফেসবুকে লিখতে দেখলাম, “মুফতি তাকি উসমানী তাগুতের (কাফেরদের) একজন গোলাম ছাড়া আর কিছুই নয়।” এ থেকে বিষয়টি আরও পরিস্কার হল এরা কারা!

তিনি আরও বলেন, আমরা তদন্ত করে তার মতো কট্টর আরও যাদেরকে (৫জন) পেয়েছি। বিল ইত্তিফাক (সবার সিদ্ধান্তক্রমে) তাদেরকে বহিস্কারের ফায়সালা করি। এরপর তারা রাতে মিটিং করে। এবং অন্যদেরকে তাদের সাথে চলে যাওয়ার জন্য ভয়-আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাধ্য করে। আমরা যখন সকালে জানতে পারি যে, পাঁচজনকে রাখা না হলে সবাই চলে যাবে তখনও আমরা আবার বসে আগের সিদ্ধান্তের উপরই অটল থাকি। বড়রাও এই সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। অনেক ছাত্র চাপে পরে যাওয়ার সময় চোখের পানিও ফেলেছে। তারা সবাই বের হয়ে এক মসজিদে অবস্থান করে এবং তাদেরকে আমরা ফিরিয়ে আনি কিনা এই অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু আমরা আগের অবস্থানেই অটল থাকি।

যে সকল ছাত্ররা বহিষ্কৃতদের চাপে পরে চলে গিয়েছিল তারা আবার ঐ দিন রাতেই আসতে শুরু করে। অনেক ছাত্র অবিভাবকসহ আসতে শুরু করে। যাদের ব্যাপারে আমরা তাহকীক করে জানছি যে, সে আসলেই না বোঝে বা চাপে পরে গিয়ে ছিল অথবা এখন চলে গিয়ে পরে আবার ফিরে আসার ইচ্ছা তার ছিল আমরা তাদেরকে রাখছি।

তিনি ফেসবুকে এ বিষয়ে আলোচনার বিপক্ষে আক্ষেপ করে বলেন, ফেসবুকে লেখা দেখলাম, তাদেরকে নাকি জঙ্গি বলে বের করা দেওয়া হয়েছে। আমি প্রত্যেকটা মিটিং-এ ছিলাম। কোন ছাত্রকে জঙ্গি বলা হয়নি। এটা মিথ্যাপবাদ। আর রাতেও বের করা হয়নি। বলা হয়েছে সকালে চলে যেতে। আর এই সব কিছুই মাশওয়ারার মাধ্যমেই হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আকাবিরের আদর্শ ও চিন্তা-চেতনা লালন করে চলার তাউফীক দান করেন। আমীন।

মন্তব্য করুন