
শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা: পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খুলনার নয়টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আ.লীগ মনোনীত ৯ জন প্রার্থীসহ ৩৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই স্থানীয় আ.লীগের দলীয় পদধারিরা রয়েছেন।
কেন্দ্রিয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ি এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। তবে খুলনায় চেয়ারম্যান পদে একজন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
চেয়ারম্যান পদে ৩৪, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ৫৮, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) ৩৭, বিএনপির রয়েছে ৪ প্রার্থী তারা হলেন জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা মোল্লা মাহবুবুর রহমান, কয়রা উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শেখ আব্দুর রশিদ, একই উপজেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মহিলা দলের সভাপতি নাসিমা আলম ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেত্রি খালেদা আক্তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
আজ সোমবার (৪ মার্চ) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে নিজেদের অনুসারিদের নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে উপজেলাগুলোতে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে দেখা গেছে। একমাত্র বটিয়াঘাটা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই অন্য সবগুলিতে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। ফলে আ.লীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত অনেকেই রয়েছেন শঙ্কায়।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার এম. মাজহারুল ইসলাম জানান, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলাতেই শুধুমাত্র একজন প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান (আ.লীগ মনোনীত)।
এছাড়া দাকোপ উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মুনসুর আলী খান (আ.লীগ বিদ্রোহী), শেখ আবুল হোসেন (আ.লীগ মনোনীত) এবং ওয়ার্কার্স পার্টির গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায়। ডুমুরিয়া উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মোঃ মোস্তফা সরোয়ার (আ.লীগ মনোনীত), মোল্লা মাহবুর রহমান (স্বতন্ত্র), শাহনেওয়াজ হোসেন জোয়াদ্দার (আ.লীগ বিদ্রোহী) ও সেলিম আকতার স্বপন ওয়ার্কার্স পার্টি।
ফুলতলা উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন (আ.লীগ মনোনীত), শেখ আবিদ হোসেন (আ.লীগ বিদ্রোহী), হাসনাত রিজভী মার্শাল (আ.লীগ বিদ্রোহী) ও শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন। পাইকগাছা উপজেলায় গাজী মোহাম্মদ আলী (আ.লীগ মনোনীত), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রশিদুজ্জামান মোড়ল (আ.লীগ বিদ্রোহী), শেখ মনিরুল ইসলাম (আ.লীগ বিদ্রোহী) ও শেখ আবুল কালাম (আ.লীগ বিদ্রোহী)।
কয়রা উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জিএম মহসিন রেজা (আ.লীগ মনোনীত), এসএম শফিকুল ইসলাম (আ.লীগ বিদ্রোহী) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী)। রূপসা উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা (আ.লীগ মনোনীত), সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আলী আকবর (আ.লীগ বিদ্রোহী), ওলিয়ার রহমান মাষ্টার (আ.লীগ বিদ্রোহী), জাতীয় পার্টিার ফিরোজ মামুন, ও শওকত আলী (স্বতন্ত্র)।
তেরখাদা উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ সরফুদ্দিন বিশ্বাস (আ.লীগ মনোনীত), জেলা আ.লীগের নেতা এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান কালু (আ.লীগ বিদ্রোহী), শেখ শহিদুল ইসলাম (আ.লীগ বিদ্রোহী), বাদশা মল্লিক(আ.লীগ বিদ্রোহী)। দিঘলিয়া উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান খান নজরুল ইসলাম (আ.লীগ মনোনীত), আ.লীগ নেতা শেখ মারুফুল ইসলাম (আ.লীগ বিদ্রোহী) ও মল্লিক মহিউদ্দিন (আ.লীগ বিদ্রোহী)।
বিদ্রোহীদের বিষয়ে খুলনা জেলা আ.লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীন বলেন, এ বিষয়ে কেন্দ্র থেকে শিথিল করা হয়েছে। কারণ ভোটের অধিকার সবারই রয়েছে। আমরা চাই সুষ্ঠভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হোক।
জেলার নয়টি উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৫৮ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ৩৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
আগামী ৬ মার্চ মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই হবে, ১৩ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ও একই দিন প্রতিক বরাদ্দ দেওয়া হবে। ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

