আমার দেখা চরমোনাই মাহ্ফিল

প্রকাশিত: ৮:৩৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

পাঠক মতামত

হাফিজ আর রহমান

ছোট বেলা থেকেই চরমোনাইর প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা তৈরি হয়ে ছিলো কেনো বলতে পারবো না। ফ্যামিলির ছোট ছেলে হওয়ায় কোথাও যাওয়ার অনুমতি না থাকলেও কখনো চরমোনাই যাওয়ার ব্যাপারে কেউ দ্বি-মত করে নি৷

যেদিন প্রথম চরমোনাই মাহ্ফিলে গিয়েছিলাম সেদিন হয়তো ততটা ভালো মন্দের হিসেব মিলাতে পারি নি। কারণ, পৃথিবীটা তখনও চরমোনাই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলো৷ আস্তে আস্তে অনেক কিছুই দেখলাম অনেক কিছুই বুঝলাম। সবশেষে আমার কাছে চরমোনাইয়ের অনেক বিষয় অন্য অনেক বিষয় থেকে ভালো লাগতে শুরু করে৷

এই যেমন প্রতিদিন মাগরিবের পরের বয়ান ও ফজরের পরের বয়ানের সময় হাটাহাটি, চলাফেরা, রান্না বান্না, হোটেলে বসে আড্ডা দেয়া, গল্পগুজবে লিপ্ত থাকা সম্পূর্ন নিষেধ হওয়ায় যাদের ইচ্ছা না থাকে তারাও এক প্রকার বাধ্য হয়েই বয়ান শুনে যা অন্য সকল বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে৷

তাছাড়া পীর সাহেবদের সাধারণ মানুষের প্রতি তাদের মনোভাব, সাধারন মানুষদের যথাযথ মুল্যায়ন করা এই ব্যাপারটা অনেক ভালো লেগেছে। গত পরশুদিন দুপুরবেলা দু’নাম্বার মাঠ থেকে তিন নাম্বার মাঠে যাওয়ার পথে হঠাৎ দেখি পীর সাহেব হুজুর মটর বাইক নিয়ে মাঠ পরিদর্শনে বের হয়েছেন। অথচ তার সাথে কেউই ছিলো না, ব্যাপারটা মানুষিকতার দিক থেকে ভাবুন তো- ততটা নরম দিলের হলে সাধারন মানুষের যাতে কষ্ট পেতে না হয় তার জন্য নিজে তদারকী করতেছে, অথচ সেচ্চাসেবকের অভাব নাই, এটা ক’জন দ্বারাই বা সম্ভব!!

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আমার জানা মতে অনেক লোক রয়েছেন যারা এই চরমোনাই ঘুরতে এসেও আগের জীবন পরিবর্তন করে আমলী জীবনে ফিরে এসেছেন। অসংখ্য মানুষ রয়েছেন- যারা হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছেন! অনেক রয়েছে যারা অন্ধকার জীবন থেকে আলোর পথে ফিরে এসেছেন এই চরমোনাইতে এসেই।

আগামীকাল শুরু হচ্ছে এই চরমোনাই বাৎসরিক মাহ্ফিল। দূর দুরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ পৌছেঁ গেছে ময়দানে, অনেকেই পথে আছেন৷
আল্লাহ্ সকলের জন্য এই মাহ্ফিলকে হেদায়েত এর মাধ্যম বানান।

আমীন!

মন্তব্য করুন