ফাহাদ আব্দুল্লাহ : ভারতীয় সেনাদের উপর আত্মঘাতী হামলার পর সাম্প্রতিক আমিরুল মুজাহিদিন মাওলানা মাসউদ আযহার হাফিজাহুল্লাহর কাশ্মিরের বীর মুসলিম জনতার উদ্দেশ্যে প্রদত্ত এক রেকর্ড করা ভাষণে বলেন—”শহিদদের কুরবানি কখনো বৃথা যাবে না। অধিকৃত কাশ্মির অবশ্যই স্বাধীন হবে। আর তারই সাথে সাথে কাশ্মির সমগ্র ভারতের মুসলমানদের স্বাধীনতার মাধ্যম হবে। কাশ্মিরি জনসাধারণের বীরত্ব এবং জিহাদের জন্য তাদের ইশক-ভালোবাসা এবং জযবা ও প্রেরণার কাছে আসমানও হয়ত জমিনের কাছে ঝুঁকে যাবে। আল্লাহ তাআলা কাশ্মিরের মা-বোন ও যুবকদের উত্তম বদলা দান করুন। যারা আজও জিহাদকে ইমারতের জিম্মাদারি ভেবে নিজেরা বসে আছে— তাদের বলবো, তোমরা কুরআনের জিহাদি আয়াতগুলো আরেকবার হলেও পড়ে দেখ; আর কিছু না হোক তোমাদের ইমান হয়ত রক্ষা পাবে। ”
অন্যদিকে ‘মজলিসে ওয়ারাসায়ে শুহাদা জম্মু-কাশ্মিরের অধীনে আমিরুল মুজাহিদিন মাওলানা মাসউদ আযহার হাফি.র নেতৃত্বে জম্মু-কাশ্মির এবং পাকিস্তান ব্যাপী ছোট-বড় শহর মিলুয়ে প্রায় পঞ্চাশেরও অধিক স্থানে বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালির আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন স্থানে মাহফিল ও অনুষ্ঠানও হয়।
সবদিকে প্রকাশ্যে জিহাদের পতাকা উড্ডীন করা হচ্ছে। ‘কাশ্মির বনেগা পাকিস্তান কা’…’হিন্দুঁ কা এক এলাজ আলজিহাদ আলজিহাদ’ স্লোগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে আছে। তাছাড়া বর্ণাঢ্য র্যালিগুলোর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের জনগণও কাশ্মিরের মুসলমানদের সাথে আন্তরিকতা এবং আত্মিকভাবে একাত্মতা পোষণ করে।
মাহফিল ও অনুষ্ঠানগুলোতে আমিরুল মুজাহিদিনের রেকর্ডে ধারণ করা ভাষণ শোনানো হয়। যাতে তিনি বলেন—
“সর্বপ্রথম আমি শুহাদায়ে কাশ্মিরের শোকর আদায় করছি। অনেক নুরে নুরান্বিত চেহারা আমার চোখের সামনে ভাসছে। এক চেহারার আভা মুছে যায়, তো আরেক চেহারার নুর ভাসে। কতজনকে আমি স্মরণ করবো? শুহাদায়ে কাশ্মিরের কেউ এমন নয়— যাকে সামান্য সময়ের জন্য হলেও ভুলে থাকা যাবে। আল্লাহ তাআলা তাদের ইল্লিয়্যিনে সর্বোচ্চ স্থান দান করুন৷”
তিনি আরো বলেন—
“বর্তমানের অবস্থা তো খুব ভয়াবহ— জিহাদের মতো ফরজ মুসলমানরা বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছে। তারপরও কাশ্মিরের বীর জনতা এখনো সেই ফরজকে আঁকড়ে ধরে আছে। গন্তব্য বেশি দূরে নয়। খুব সাহসিকতার সাথে লেগে থাকুন। সামান্য সামান্য দংশনের পরিবর্তে সর্বাপ্লাবী বন্যার মতো একসাথে একবার দংশন করুন। তাহলে ভারত দখল করা এক মাসেরও কাজ নয়।”
মুহতারাম আমির ভারতের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন—
“আপনাদের শাসক ও নেতাদের ভালো করে বোঝান৷ কেন তারা শুধু শুধু নিজেদের সৈন্যদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে? কাশ্মিরের সাথে ভারতের আবার কিসের লেনাদেনা? ভারতের কি অধিকার আছে যে, তারা কাশ্মিরের উপর প্রভাব খাটাবে? ”
তিনি আরো বলেন—
“জিহাদে অংশগ্রহণ না করা এবং জিহাদকে অস্বীকার করা; সরাসরি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়া। ইসলামের একটি স্তম্ভের উপর শক্ত আঘাত হানা।”
আমিরুল মুজাহিদিন উম্মাহর কাছে নিবেদন করে বলেন, তারা যেন কালিমার সাথে নিজেদের সম্পর্ককে মজবুত করে। নামাজ প্রতিষ্ঠা করে।
অপরদিকে সব অনুষ্ঠান এবং র্যালি থেকে পাকিস্তানের জনগণ কাশ্মিরের বীর জনতার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে৷ সব অনুষ্ঠানগুলো জিকির-আজকার এবং দুআ-দরূদে কাটে। অবস্থাদৃষ্টে মুরুব্বিগণ এসব র্যালি ও অনুষ্ঠানগুলোর প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন। আর কাশ্মিরের জিহাদের ভবিষ্যতের জন্য তা নেকফাল মনে করেন৷
আর যেসমস্ত শহর এবং অঞ্চলগুলোতে র্যালি বা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে— করাচি, পেশোয়ার, হায়দারাবাদ, ভাওয়ালপুর, মালাকুন্ড, ফয়সালাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, বালাকোট, শিয়ালকোট, বাজোড়, মারদান, রাজনপুর, হিট্টি জেলা (আজাদ কাশ্মির), লাহোর, নওয়াব শাহসহ আরো অ-নে-ক শহর উল্লেখযোগ্য…
আর অনুষ্ঠানগুলোতে মুজাহিদদের মুরুব্বি পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কিরাম উপস্থিত ছিলেন। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— মুফতি আব্দুর রউফ আসগর, মাওলানা তালহা সাইফ, মাওলানা ইলিয়াস কাসিমী, মাওলানা মুজাহিদ আব্বাস, মাওলানা আতাউল্লাহ কাশিফ, মাওলানা মুদদাসসির জামাল তিউনিসী, মাওলানা মানসুর আহমদ, মুফতি উবায়দুর রহমান, মাওলানা মুহাম্মাদ রফিক, মুফতি রফিক আহমদ,মাওলানা হাসনাইন মুআবিয়া, মাওলানা আব্দুর রশিদ প্রমুখ আরো অনেকে…
