একই মাসে বিশ্ব ইজতেমা ও চরমোনাই মাহফিল, অংশ নিন দুটোতেই

প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯

শাইখ মাহমূদ হাসান

চলতি মাসেই বাংলাদেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক দুটি ধর্মীয় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। একটি মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী (রহ.) এর প্রতিষ্ঠিত তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা। আর অপরটি হল রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী (রহ.) এর সুযোগ্য উত্তসূরী চরমোনাইর ক্বারী ইসহাক সাহেব (রহ.) এর বাৎসরিক ইসলাহী মাহফিল। তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি চার দিনে অপরদিকে চরমোনাই মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০, ২১, ২২ ফেব্রুয়ারি।

আরও পড়ুন :

চরমোনাইর ফাল্গুনের মাহফিল ২০, ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি

বিশ্ব ইজতেমার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা

আগত উভয় ইজতেমার সফলতা প্রত্যাশায় বাংলাদেশী মুসলমানদের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা ও মেহনত করা জরুরী ও ঈমানী দায়িত্ব। মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনা পুনরুজ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক বিখ্যাত আলেম, জগত শ্রেষ্ঠ পীর- মাশায়েখ ও বিভিন্ন ইসলামী স্কলারগণ ঢাকার তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর ময়দান ও বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীরে চরমোনাইর ময়দানে ইসলাম, দেশ ও মানবতার সার্বিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবেন। ফলে উভয় মজমার ফায়দা ও বরকত হাসিল করতে যাদের সুযোগ ও সাধ্য আছে তাদের সকলের জন্যই উভয় মাহফিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থাকা খুবই জরুরী। শুধুমাত্র বড় দুটি মুনাজাতে অংশগ্রহণ করার জন্য উভয় মজমায় শেষ দিনে ফজরের পর যাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাজ্য ও বর্জনীয়।

দুটি ইজতেমাতেই দেশীয় মুসলমানদের বড় একটা অংশ সম্পৃক্ত থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য মুসলমান চরমোনাইর তুলনায় টংগীর বিশ্ব ইজতেমায় বেশি অংশগ্রহণ করেন বিধায় আজকের লেখাতে দিনের উভয় সম্মেলন সম্পর্কেই সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। এ বছর একই মাসে এবং কাছাকাছি সময়ে বড় দুই বিশ্ব ইজতেমার ব্যবস্থাপনা আমার কাছে মনে হয় যে, আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে অধিক বরকত দানে ধন্য ও গর্বিত করেছেন। তাই আসুন বিশ্ব ইজতেমা এবং চরমোনাই মাহফিল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভাবে জেনে নিই।

বিশ্ব ইজতেমা

সকল বাঁধার প্রাচীর উপেক্ষা করে এমাসেই বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। তাবলীগ জামাতের সবচেয়ে বড় ইজতেমা চলতি মাসের ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ ইং তারিখে মোট চারদিনে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হবে। তাবলীগের মধ্যে বিবদমান দুই পক্ষ নিজেদের পরস্পর মতানৈক্য ভুলে একসাথে এক জায়গায় বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। তবে সাধারণ তাবলীগিদের মাওলানা জুবায়ের সাহেব নেতৃত্বাধীন অংশ এবং ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারী সৈয়দ ওয়াসিফ নেতৃত্বাধীন অংশ নিজেদের অতিত ইতিহাস ভুলে তাবলীগ জামাতের আগত বিশ্ব ইজতেমা সফলের লক্ষে এবছর দুই পর্বের ইজতেমা এক পর্বে সম্পাদন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তবে তাবলীগ জামাতের অনেক হকপন্থী সাথী ও ফিলহাল সম্পর্কে সচেতন অধিকাংশ আলেম মনে করেন যে, বর্তমান সরকারের রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপে দাওয়াত ও তাবলীগের উভয় গ্রুপ নিজেদের মতানৈক্য ভুলে বিশ্ব ইজতেমার ইন্তেজাম করছে ঠিক তবে তাদের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ ভারতীয় মাওলানা সাদের পুনরায় খাঁটি তাওবার আগ পর্যন্ত বিদ্যমান ও অটুট থাকবে।

এমনকি ভারতের দেওবন্দ মাদরাসা যতদিন পর্যন্ত মাওলানা সাদের ব্যাপারে পূর্ণ ইতমিনান ও দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন না করবে ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের জুবায়ের ও ওয়াসিফ গ্রুপের মধ্যকার একধরনের নিরব দ্বন্দ্ব ও মতানৈক্য পরিলক্ষিত হবে। কারণ, ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবকে নিয়ে তাদের পরস্পর যে ইখতেলাফ সংগঠিত হয়েছে তা শুধু ব্যক্তি মাওলানা সাদকে আমির মানা না মানা নিয়ে নয়। বরং বিভিন্ন দীনি মজমায় তিনি কুরআন- হাদীসের মনগড়া ও ভুল ব্যাখ্যা করার কারণেই মূলত উভয়ের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় ভিত্তি যেসব সহীহ আকীদার উপর নির্ভরশীল সেসব গুরুত্বপূর্ণ আকীদা ও বিশ্বাস সম্পর্কে মাওলানা সাদ তাফসির বির রায় করার কারণে আজও উভয় গ্রুপের ইখতেলাফ ও মতানৈক্য দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। নতুবা সাধারন বিষয় নিয়ে তাবলীগ জামাতের সাথীরা দুই গ্রুপে ভাগ হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

উল্লেখ্য যে, মাওলানা সাদ তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা আমীর মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবী (রহ.) এর নাতি ও রাসূলের প্রিয় সাহাবী হযরত আবু বকর (রা.) এর বংশধর হওয়া সত্বেও দিনের মনগড়া ব্যাখ্যা ও তাফসির বির রায় যাচাই বিহীন নিজ পক্ষ থেকে কোরআনের ব্যাখ্যা করার কারণে যখন উলামাগণ তাকে অবাঞ্ছিত ও প্রত্যাখ্যান করেছেন তখন কোরআন- হাদিস ও সুন্নাহর থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে সরাসরি কোন ব্যক্তিকে অন্ধের মতো বিশ্বাস ও অনুসরণ করা যাবে না। বরং ইসলামের উপর সহীহ তরিকায় চলতে কুরাআন- হাদীসের সঠিক ব্যাখাদানকরীদের মধ্য হতে নির্দিষ্ট কোন একজনকে অবশ্যই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। কারণ, বর্তমান যুগে তাকলীদে শখসি ছাড়া মানুষের মৃত্যু নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করাবস্থায় হয়। যা কুরাআন- সুন্নাহর আলোকে নিন্দনীয় ও অপছন্দনীয়।

তাবলীগের বিশ্ব ইজতেমায় ধর্মীয় মূল আলোচনা উর্দূতে হওয়ার কারণে যারা উর্দূ ভাষা বুঝেনা তাদের জ্ঞাতার্থে বাংলা, আরবী ও ইংরেজীসহ অন্যান্য ভাষায় উর্দূ বয়ানের তরজমা করা হয়। তবে তাবলীগের পুরাতন সাথীদের অনেকেই সরাসরি বক্তাদের উর্দূ বয়ানই বুঝেন। এবং মন দিয়ে বয়ান শুনার শেষে পরস্পর তা আলোচনা করেন। টংগীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীদেরকে তাবলীগের জিম্মাদারগণ বিভিন্ন সময় একসাথে একত্রিত করে তালিম ও মাসায়েল শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি আমিরগণের লক্ষ্য থাকে তাবলীগের নতুন সাথীদের অন্তরে শুধুমাত্র ইসলামের মৌলিক বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে দীনি দাওয়াত দিতে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার উৎসাহ ও আগ্রহ বাড়ানো। এবং নতুনসহ পুরাতন সাথীদের মেজাযে দীনের ফিকির ও দরদ সৃষ্টি করে সরাসরি ইজতেমার ময়দান থেকে বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশ্যে ছোট বড় জামাত প্রেরণ করা। যাদের বের হওয়ার উদ্দেশ্যই হল দেশের সবখানে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কোমল ও নরম সুরে নববী আদর্শে ঈমান- আমল, ও ধর্মীয় কথা বলে মানুষকে ইসলামের হুকুম আহকাম এর প্রতি আগ্রহী করে তোলা যারা নামাজ পড়ে না তাদের হাতপায়ে ধরে মসজিদমুখী করা।

দীনি ভাইদের আমলী জিন্দেগী তৈয়ার করার মাকসাদেই টংগীর ময়দান থেকে হাজারো তাবলীগের সাথী প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর দীনি দাওয়াতের কাজ করেন বিধায় আজ মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী (রহ.) এর প্রতিষ্ঠিত দাওয়াত ও তাবলীগ জামাত পৃথিবীর সকল প্রান্তে ইসলামের দাওয়াত ও শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। যা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ও কুদরত কারিশমা। যা তাবলীগ জামাত খোদার কাছে মকবুল হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

তবে আফসোস এই যে, বর্তমানে মাওলানা সাদের অনুসারী কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে তাবলীগ জামাতে ফাটল ধরেছে। কতিপয় লেবাসধারী সাথীদের কারণে আজ দাওয়াত ও তাবলীগ জামাত মানুষের কাছে সমালোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাবলীগ নিয়ে জনমনে শঙ্কার শেষ না থাকলেও খোদার কাছে অশেষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি এজন্য যে, হাজার প্রতিকূলতা ও বাঁধার পরে একই মাসে বাংলার বুকে ইজতেমার এন্তেজাম করার তাওফিক খোদা আমাদের দিয়েছেন। অতএব, ইজতেমার সফলতা কামনায় আমাদের জন্য আজই নামাযে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কুদরতি কদমে সেজদা করে সাহায্য চাওয়া উচিত। যাতে অদৃশ্য কারো ইশারায় বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ অংশগ্রহণ করতে না পারেন। এবং তার আগমনে আবার এ দেশে কোন নতুন ফেতনার জন্ম যেন না দেয়। সেজন্য জাতির রাহবার উলামায়ে কেরামকে তার প্রতি সবসময় সচেতন ও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যদি ফেতনার আশংকা থাকে তবে প্রয়োজনে এবছর ইজতেমার বাস্তবায়ন বাদ দিয়ে মাওলানা সাদকে নির্মূল করার জন্য নতুন আন্দোলনের ডাক দেওয়া হোক। কারণ উনি যতদিন থাকবেন ততদিন এ ফেৎনার অবসান হবে না।

চরমোনাই বাৎসরিক মাহফিল

তাবলীগী ইজতেমার মাত্র দুদিন পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামী ও ইসলাহী মাহফিল হল চরমোনাইর দ্বিতীয় বার্ষিক ফাল্গুনের মাহফিল। যা চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ২০,২১ ও ২২ ইং তারিখে শুরু হয়ে ২৩ তারিখ বাদ ফজর আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। চরমোনাইর দ্বিতীয় মাহফিলে বাংলাদেশের মুসলমানরা বেশি অংশগ্রহণ করে বিধায় সেখানের মূল বয়ান বাংলা ভাষায় হয়ে থাকে। তবে মূল বয়ান সেখানে চরমোনাইর তরিকাভিত্তিক বয়ানই হয়ে থাকে । তবে ইদানিং সময়ে প্রচুর বিদেশী মেহমান চরমোনাই মাহফিলে থাকে। বিদেশী মেহমানগণ নিজেদের ভাষায় আলোচনা করলেও মুতারজিমগণ সকলের জ্ঞাতার্থে তাদের বয়ানের বঙ্গানুবাদ করেন। ফলে চরমোনাই মাহফিলে আগত সকলের জন্যই সকল বক্তাগণের বয়ান সহজে বোধগম্য হয় ও তা দীর্ঘদিন মনে রাখতে সহজ হয়।

প্রতিদিন বাদ ফজর ও মাগরিবের পরে চরমোনাইর বর্তমান পীর সাহেব এবং মরহুম পীর সাহেবের খলিফাদ্বয় মুফতি রেজাউল করীম সাহেব ও মুফতি ফয়জুল করীম সাহেব দা. বা. সেখানে তাযকিয়ে নফসের উপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করে থাকেন। চরমোনাই মাঠে বয়ান চলাকালীন সময়ে সুন্দর এক জান্নাতি পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বয়ানের সময় মাঠের কোথাও দুনিয়ার কোন কাজ চোখে পড়ে না। মাহফিলে আগত সকল শ্রোতা ও চরমোনাইর মুরিদগণ আল্লাহকে পাওয়ার আশায় শায়েখদ্বয়ের বয়ানে ছোট শিশুর মত খোদার দরবারে কাঁদে। জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে যখন শায়খগণ দরদী কন্ঠে ইলহামী নসীহত করেন তখন গোনাহগারদের অন্তরে খোদার ভয় সৃষ্টি হয়। আর যিকিরকারীদের অন্তরে মাওলার ইশক মহব্বত ও মারেফতের ঢেউ ওঠে।

চরমোনাই দরবারের শায়খগণ ও বাংলাদেশী প্রখ্যাত আলেম- উলামা ছাড়াও ভারতের দেওবন্দ মাদরাসার আকাবিরগণ চরমোনাই মাঠে গুরুত্বপূর্ণ নসীহত পেশ করেন বিধায় চরমোনাই মাহফিলের শান ও মান বিশ্বের অন্যান্য মাহফিল থেকে অনন্য ও স্বতন্ত্র। শোনা যাচ্ছে এ বছর চরমোনাই মাহফিলে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে এক ঝাঁক আসাতিযায়ে কেরাম উপস্থিত হবেন।

আরও পড়ুন : আসাতিজায়ে দেওবন্দের মিলনমেলা

চরমোনাই দরবারের তাযকিয়া ও আত্মশুদ্ধির অমূল বয়ান অন্যত্র পাওয়াই মুশকিল বিধায় চরমোনাইর মুরিদগণের চোখের পানির বদৌলতে সে ময়দানে আল্লাহ পাক কবুলিয়তের এমন রহমত ও বরকত রেখেছেন যা অন্যান্য ময়দানের বরকত ও রহমতের চেয়ে অনেকগুণ বেশি ও প্রতিক্রিয়াশীল। তাই সে মাঠের বরকতপ্রাপ্তির আশায় প্রতি বছর আল্লাহর পথ ভুলা বান্দারা সে দিকে ছুটে যায়। দেখা যায় পীর সাহেবদের ভক্তবৃন্দ এক মাহফিল শেষ না হতেই অপর মাহফিলের অপেক্ষা করেন চরমোনাইর খাটি মুরিদগণ সবকিছু ভুলে গেলেও চরমোনাইর বার্ষিক দুটি মাহফিলের কথা কিছুতেই ভুলে না। কারণ, চরমোনাই দরবারে গেলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে। রাসূলের সুন্নাত পালনে মন আগ্রহী হয়। শায়খদের বয়ানে সাহাবীদের জিহাদী জযবার চিত্র চোখের সামনে ভাসে। হৃদয়ে আল্লাহর রাস্তায় শহীদী মৃত্যুর আশা জাগে। এমনকি অনেক মুরিদগণ মনে করেন যে, সকল পাপরাশী থেকে নিজের জীবন মুক্ত করার সবক নিতে চরমোনাই মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারা পথভোলা বান্দাদের উপর খোদার বড় করুণা ও ইহসান। খোদার রহমপ্রাপ্ত হয়ে নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করার সাহস ও শক্তি সে ময়দান থেকে পাওয়া যাওয়ার কারণেই প্রতিবারের মত এবছরও বাংলার অসংখ্য মানুষ আগত বার্ষিক মাহফিলে শরীক হতে এখনই সব প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। প্রতিক্ষায় আছে মুরিদগণ মাহফিলে গিয়ে প্রিয় শায়খের অমূল্য বয়ান শুনে নিজের নফসকে পরিশুদ্ধ করতে। ইলম- আমল, রূহানিয়াত ও জিহাদের সমন্নয়ে সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামী রাষ্ট কায়েমের প্রতিজ্ঞা কেবল মাত্র চরমোনাই ময়দান থেকেই পাওয়া যায়।

তাই আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা এই যে, তিনি যেন আমাদের সবাইকে উভয় মজমায় শরীক হওয়ার তাওফীক দানে ধন্য ও নিজের ভিতরকে পরিশুদ্ধ করার সুযোগ করে দেন।

লেখক: মুফতি ও নাযেমে দারুল ইকামা,
জামিয়া আরাবিয়া শামসুল উলূম খিলগাঁও ঢাকা

মন্তব্য করুন