বাদলকে কারাগারে প্রেরণ, ইকবাল চৌধুরীসহ গ্রেফতার আরও ৬

প্রকাশিত: ১০:০৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২১

এম.এস আরমান,নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। অন্যদিকে নতুন করে মুছাপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও কাদের মির্জার সমর্থক ইকবাল চৌধুরীসহ আরও ৬জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১নং আমলী আদলতে হাজির করে পুলিশ। আদালতের বিচারক সোয়েব উদ্দিন খান শুনানি শেষে বাদলকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

জানা যায়, মঙ্গলবার আ.লীগের প্রতিবাদ সভায় হামলার অভিযোগ এনে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বসুরহাট পৌরভবনে অবস্থান নেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালী প্রেসক্লাব এলাকা থেকে আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদল গ্রেপ্তারের পর পুলিশ, র‌্যাব সদস্যরা বসুরহাট পৌরসভার বাহিরে অবস্থান নেন। ভবনটি নজরধারীতে রাখেন গোয়েন্দা সংস্থ্যার সদস্যরা। রাতভর ব্যাপক উত্তেজনার পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর ভবন থেকে কয়েকজন পৌর কর্মচারীসহ বের হয়ে আসেন কাদের মির্জা।

সকাল ১০ টায় ও বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পৌরসভা থেকে বের হয়ে আসেন আবদুল কাদের মির্জা। এসময় তিনি তার কয়েকজন সমর্থকদের নিয়ে বাজারের বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরে শো-ডাউন করেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) তিনি পৌর ভবনের ভিতরে অবস্থান করছেন। পৌর ভবনের বটতলা দিনভর বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে।
নিহত আলা উদ্দিনের ছোট ভাই এমদাদ অভিযোগ করে বলেন, আমার ভায়ের হত্যার ঘটনার এজাহারে আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান আসামী করায় পুলিশ আমার মামলাটি রেকর্ড করেনি। আমি শনিবার আদালতে গিয়ে সেখানে মামলা করবো।

এদিকে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নিজ বাড়ীতে মিজানুর রহমান বাদলের মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাদলের মা আরা ধনী বেগম, স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাকুলি, বোন ফাতেমা আক্তার বকুল ও আমেনা বেগম।

বক্তারা বলেন, মিজানুর রহমান বাদল উপজেলার একজন সফল চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বিভাগে সেরা চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আ.লীগ পরিবারের সন্তান। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সত্যবচনের নামে বাদলসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলে আসছে। তাদের অভিযোগ মির্জার নেতৃত্বে চাপরাশিরহাটে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির ও বসুরহাট বাজারে তাদের প্রতিবেশী আলা উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ পুলিশ হত্যাকারী মির্জা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে কোন মামলা না নিয়ে উল্টো বাদলকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের কাছে আবেদন করছি হত্যার ঘটনা সঠিক তদন্ত করে বাদলকে মুক্তি দিয়ে মির্জার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি জানান, সংঘর্ষে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুছাপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ইকবাল চৌধুরীসহ নতুন আরও ৬জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এনিয়ে পৃথক মামলায় ৩৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে বসুরহাট রূপারী চত্বর থেকে ৭টি ককটেল ও ২৬টি গাবের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। টহলে আছে র‌্যাব সদস্যরা।

মন্তব্য করুন