
কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। তার জানাজায় অংশ নিতে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার অলিরবাজারের মাদরাসা মাঠে মানুষের ঢল নামে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, জামিয়া মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী মরহুমের জানাজা নামাজের ইমামতি করেন।
স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে আসেন হাজারো আলেম ও ছাত্র-জনতা। জানাজার নামাজে অংশ নেন বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
আল্লামা আশরাফ আলীর ছয় ছেলে মাওলানা জামিল আহমদ আশরাফী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম আশরাফীসহ মেয়ে জামাতা মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, স্থানীয় জেলা প্রসাশক মোহাম্মদ আবুল ফজল মীর, হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু জানাজায় অংশ নেন।

জানাজা নামাজ পূর্ব বক্তব্যে তারা বলেন, আল্লামা আশরাফ আলী রহ. সারাজীবন দীনের ওপর অবিচল থেকেছেন। কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও পড়ালেখার উন্নতির জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন। সর্বদা সুন্নতের অনুসরণ ও তাকওয়াকে অবলম্বন করে জীবন পরিচালনা করেছেন। তিনি আমাদের আদর্শ। আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত ও আহলে হক ওলামায়ে কেরামের আদর্শ। মৃত্যুর পূর্বও তিনি উম্মাহর জন্য কল্যাণকর চিন্তা করেছেন। কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে কাফের ঘোষণা করার আবেদন রেখেছেন সরকারের কাছে। আমরা আশা করছি, তার ওসিয়ত ও নসিয়ত মেনে ভবিষ্যতের পথকে আরও সুগম করা সম্ভব।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আল্লামা আশরাফ আলীর অন্তিম চাওয়া ছিল তাকে কুমিল্লায় দাফন করা হোক। এ কারণে নিজ গ্রামেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে আল্লামা আশরাফ আলী সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে তিনি রাজধানীর আসগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মরহুম আল্লামা আশরাফ আলী রহ. কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার ফলডার পাড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৩ সাল থেকে রাজধানীর জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসায় হাদিসের দরস দিচ্ছিলেন। প্রিন্সিপাল হিসেবে এই মাদরাসাটিকে সুনামের সাথেই পরিচালনা করে আসছিলেন।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংস্থাটির কো-চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
জানাজা পূর্ব আল্লামা আশরাফ আলীর স্মরণে বক্তব্য রাখেন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হামীদ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মুফতী ফয়জুল্লাহ, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মহাপরিচালক অধ্যক্ষ্য মাওলানা যুবায়ের আহমদ চৌধুরী, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, জাতীয় দীনী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-এর মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মাদ আলী, বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফ, আকবর কমপ্লেক্স মসজিদ-মাদরাসার খতিব ও পরিচারক মুফতি দোলোয়ার হুসাইন, জামিয়া ইউনুসিয়া বিবাড়িয়ার মুহতামিম মাওলানা মোবারকুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা ইসমাইল নুরপুরী, কুমিল্লা বটগ্রাম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নুরুল হক, বাংলাদেশ কওমি কাউন্সিলের সভাপতি মাওলানা মোহাস্মদ আব্দুস সামাদ, মাওলানা মামুনুল হক, কাসেমুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, নাযেমে তালিমাত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, রানিরবাজার মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মনির হোসাইন, মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, মাওলানা সাইফুল ইসলাম কুমিল্লা, মাওলানা মামুনুর রশিদ কুমিল্লা, মাওলানা মহিউদ্দিন খান, কুমিল্লা রামপুর মাদরাসার মুহতামিম মুফতি শামসুল আরেফিন, মারকাজুল উলূম বাইতুন নূর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোতাহার হোসাইন, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া সাভার মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ দয়াপুরী প্রমুখ।
আই.এ/

