হাসপাতালে এমপি মাশরাফির অভিযান, ঝড়ের মুখে ডাক্তার-নার্সরা

প্রকাশিত: ১২:০৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০১৯

খেলার মাঠে বল হাতে ঝড় তুলেন টাইগার ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এবার তিনি ঝড় তুললেন সাংসদ সদস্য হিসেবে। দুদিনের নড়াইলের সফরে অন্যরকম এক মাশরাফিকে দেখেছে নড়াইলবাসী। নির্বাচনী এলাকার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত দৌড়ে বেড়িয়েছেন। কখনো মোটর সাইকেলে আবার কখনো গাড়িতে। খেলোয়াড়ী জীবনে যেমনি নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য খেলেন তেমনি জনপ্রতিনিধি মাশরাফিকে নড়াইল বাসী দেখলো অন্য এক চরিত্রে।

জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগদানের আগে দুদিনের নির্বাচনী এলাকায় সফরে মাশরাফি সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন হাসপাতালকে। গতকাল ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ৩ টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা ২ ঘন্টা নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ঝটিকা সফর করেন ম্যাশ। নারী ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যা শোনেন। ওই সময় পুরো হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি।

হাসপাতালে গিয়েই ডাক্তারদের অবস্থান জানতে চেয়ে হাজিরা খাতা দেখেন। হাজিরা খাতায় সার্জারি চিকিৎসক সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আকরাম হোসেনের ৩ দিনের অনুপস্থিতির প্রমাণ পেয়ে ছুটির আবেদন দেখতে চান। পরে জানতে পারেন ছুটি ছাড়াই সেই ডাক্তার ৩ দিন অনুপস্থিত।

এ সময় তিনি রোগী সেজে ওই চিকিৎসককে ফোন করলে তিনি রোগীকে রোববার হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে বলেন। এ সময় নিজের পরিচয় দিয়ে এমপি চিকিৎসককে বলেন, ‘এখন যদি হাসপাতালে সার্জারির প্রয়োজন হয় তাহলে সেই রোগী কী করবে?’ এরপর সেই ডাক্তারকে তার কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দ্রুত কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশ দেন তিনি।

এরপর মাশরাফি নারী ও শিশু ওয়ার্ডের রোগীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যা শোনেন। ওই সময় পুরো হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে নাখোস হন এমপি।

সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে মাত্র ২ জন নার্স দেখে তাদের ডিউটির ব্যাপারেও খোঁজ নেন। জানতে পারেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্স থাকলেও ২-১ জন নার্স দিয়েই বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিচালিত হচ্ছে।

ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক নিচে নেমে এসে নার্সিং সুপারভাইজারদের খোঁজ করেন মাশরাফি। নার্সদের কক্ষে তালা দেখতে পেয়ে টেলিফোনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় একজন সুপারভাইজারের ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং অপরজনের ফোন খোলা থাকলেও রিসিভ করেননি।

রোগীদের অনুরোধে হাসপাতালের বাথরুম ও তার পরিবেশ নিজে দেখেন এবং মোবাইলে ছবি তুলে নেন। কয়েকটি বাথরুমের দরজা ভাঙা এবং দুর্গন্ধ থাকায় অত্যন্ত বিব্রত বোধ করেন তিনি।

নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা এ ব্যাপারে জানার জন্য আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে ফোন করতে বলেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বিথী খাতুন এ সময় অফিসে উপস্থিত থেকে মাশরাফির নানা প্রশ্নের জবাব দেন।

এমন ভূমিকায় দারুণ প্রশংসিত হয়েছেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা। এমপির এসব কার্যক্রম ইতোমধ্যে ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে।

জিআরএস/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন