ঢাবি ক্যাম্পাস ও মিডিয়ায় আলোচিত যে প্রজন্ম

প্রকাশিত: ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৮, ২০১৯
“ইশা ছাত্র আন্দোলন, সাহাবাদের অনুসরণ” এ শ্লোগানটি ষোলআনা পালন করনেওয়ালারা আজ ইতিহাস সৃষ্টি করছে। তরুন ইসলামিস্টদের পদচারণায় বাতিলদের ঘরে এখন বেসুরো ধ্বনি ।  ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে যা চলছে, সে ব্যাপারটা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এ প্রজন্মের কতকে সাধারণ জ্ঞান শিখতে গিয়ে ডাকসু’র কথা জেনেছে। অধিকাংশই জানতো না ডাকসু কাহাকে বলে? এটার আকার ও প্রকার কী? রংটা কেমন?
হাইকোর্টের নির্দেশে Dhaka University Central Students Union- DUCSU  (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচন হচ্ছে। না হলে এ কাহিনী চাপাই থাকতো। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যদিও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো প্রচন্ড বিরোধিতা করেছে। ইশা ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য দিবালোকে একটি মিছিল করায় তারা উষ্মা প্রকাশ করেছিল। তারা প্রশাসনের নিকট ক্যাম্পাসে তাঁদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণার আবদার করেছিল। করুক গা!
ইশা ছাত্র আন্দোলনের প্যানেলটি এ ক্যাম্পাসে সর্ব প্রথম। কোন ইসলামী দল স্বাধীন বাংলাদেশে ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল দিয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয় নাই। তাই এটা একটা রেকর্ড।  ইশা ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাবার পরপরই তার যোগ্যতার মুকুটে যোগ হলো একটি রঙিন পালক। তাঁর কমিটির সবাই সমীহ পাচ্ছে নিঃসন্দেহে। তাঁদের সাংগঠনিক যোগ্যতার স্বাক্ষর এটা।
যেদিন ক্যাম্পাসে তারা “নারায়ে তাকবীর – আল্লাহু আকবার” শ্লোগান তুললো, সেদিন  ভিডিওতে তা দেখে চোখের পাতা ভিজেছে আমার মত অনেকের। এ ক্যাম্পাসে “আল্লাহু আকবার” ধ্বনি তোলা যেন নিষিদ্ধ ছিল বিনা ঘোষণায়। চরমোনাইর শায়েখদ্বয়ের হাতে গড়া এ দলটি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেল। সেদিনের শ্লোগান শুনে অন্তরাত্মা কেঁপেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। তাঁরা ওখানে কত দিন শুনেননি এ সুমধুর ধ্বনি! তাঁরা মন থেকে দোয়া করেছেন চরমোনাইওয়ালাদের। ঠিক এটাই তো সফলতা।
আর কতক ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক, বাম-রাম তথা প্রগতিশীলদের কর্ণকুহরে আল্লাহু আকবার ধ্বনি পৌঁছা মাত্র যেন তাদের গায়ে আগুন লেগেছে। সবাই স্বীকার করবেন,  ইশা ছাত্র আন্দোলন কতটা বৈরী পরিবেশে প্যানেল ঘোষণা করে ডাকসুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
আপনি যদি নিদেনপক্ষে কলেমাগো মুসলমান হন, তাহলেও এমন অর্জনকে গুরুত্ব দিবেন। তাঁদেরকে দোয়া দিবেন, সহযোগিতা করবেন, উৎসাহ দিবেন এবং পাশে থাকবেন- এটাই সরল সোজা বাস্তবতা।  কিন্তু না। কতক আলেমে মুহতারাম হয়েও এ বিষয়টি তাচ্ছিল্যের চোখে দেখছেন , যাদের বিদঘুটে চেহারা আশেপাশে তাকালেই দেখা যায়। সমর্থন দিতে পারো নাই বাপু, অক্ষির ঝাঁপ বন্ধ করে বসে থাকো। না, এরা দূরবীন নিয়ে বসেছে, নিখুঁতভাবে খুঁত ধরতে।
মিডিয়াপাড়ায় কান পাতো ওহে কমরেডবৃন্দ! চরমোনাইর ক্ষুদ্র এ সেনানীরাই কিন্তু ক্যাম্পাস কাঁপাচ্ছে। মিডিয়ারাও কাঁপছে। এদের স্বগোতক্তি, আমরা তোমাদের এসব কাঁপাকাঁপিতে নাই। তবে কাবাবের মাঝে হাড্ডি তালাশ করো কেন? ডাকসুর প্রচারণায় একদল সুন্নাতি লেবাসধারী তালেবে এলেম ইসলামের আদর্শকে উড্ডীন করতে ক্যাম্পাস চষে বেড়াচ্ছেন, এমন দৃশ্য থেকে যারা ভুল বের করতে মরিয়া, তাদেরকে আমরা গুরুত্ব দেই না। এরা পাটকাঠি। এরা নলখাগড়া নয়, যেখান থেকে প্যাপিরাসের উৎপত্তি। আর প্যাপিরাসেই তো লেখা আছে ইতিহাসের বিজয়গাঁথার বর্ণাঢ্য পংক্তি মালা।
লেখক, এক্টিভিস্ট, বিশ্লেষক।

মন্তব্য করুন