স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে সবগুলোকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন গ্রেফতার চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কার্যপ্রণালি বিধির ৩০০ ধারায় দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের তাণ্ডব হঠাৎ করেই হয়নি, নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য আছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। যারাই এর সঙ্গে থাকুন না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, সেদিন একজন ঘোড়ায় চড়ে তলোয়ার নিয়ে হেঁটেছেন, তাকেও ধরা হয়েছে। একজনকে দেখেছি পিস্তল উঁচিয়ে ফায়ার করছে। সবগুলোকে আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে।
প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় আছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনাগুলো ঘটছে- সবগুলো আমাদের কাছে মনে হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র একখানে হয়ে এই কাজটি করে যাচ্ছে। আমরা সেগুলো তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করে জানাব এবং তার ব্যবস্থা নেব। অনেক কিছু আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ করছি, সবগুলোই দেশবাসীকে জানিয়ে দেব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শনিবার নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে মামুনুল হক একজন মহিলাকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। টিভিতে সুন্দরভাবে ওই মহিলা সম্পর্কে তথ্য দেখানো হয়েছে। মামুনুল হক নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন ওই মহিলা তার স্ত্রী নন, যা হোক। সেগুলো তদন্ত করে আরো জেনে সবাইকে জানাব।
তিনি বলেন, শনিবারের এ ঘটনার পর কার আহ্বানে, কেন রিসোর্ট ভাঙচুর করা হলো? সেখানে বিদেশি কয়েকজন ছিল। পুলিশ এবং বিজিবি গিয়ে সেই বিদেশিদের রক্ষা করেছে।
এর আগে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সব বাংলাদেশি তো বটেই, বিভিন্ন দেশ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল এবং একাত্মতা ঘোষণা করেছিল। আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরাও মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিল। সেদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদেও দোয়া মাহফিলের আয়োজন হয়েছিল। কিন্তু সেখানে নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকজন ছোটাছুটি করছে এবং আমাদের নেতাকর্মীদের দিকে দৌড়ে আসছে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, নেতাকর্মীরা ওই জায়গা ত্যাগ করলে দেখা গেল বৃষ্টির মতো ঢিল বর্ষণ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শুধু এখানেই তারা শান্ত হননি, সারা দেশে বিভিন্নভাবে গুজব রটিয়ে দেওয়া হলো, সেখানে তাদের মুসল্লিদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এই গুজবের সূত্র ধরে অনেক জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জে সহিংসতা দেখেছি। যা চরম ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হাটহাজারীতে মাদরাসার ছাত্ররা বের হয়ে থানা আক্রমণ করে। সেখানে এক বাংলোতে থাকা পুলিশের একজন বিসিএস কর্মকর্তাকে মেরে আহত করে। তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন আছেন।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা এই আক্রমণ চালালো এবং পুলিশ বাধ্য হয়ে জানমাল রক্ষার জন্য গুলি করল। এই উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়ার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদরাসা থেকে বের হয়ে এসে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর শুরু করল। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি পর্যন্ত ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হলো। ওই সব ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।