এবার কাশ্মীরের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকে তুলনা করে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন কলকাতার রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) সুব্রত সাহা।
তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে সুব্রত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য।
সুব্রত বলেন, ‘ওখানে (কাশ্মীরে) কাজটা করছে সন্ত্রাসবাদীরা। আর পশ্চিমবঙ্গে সেটা করে চলেছে সংবিধান স্বীকৃত একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল (তৃণমূল)।’
এর আগে তৃণমূলকে আবার ক্ষমতায় আনলে পশ্চিমবঙ্গ কাশ্মীর হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন বিজেপির নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার প্রার্থী হিসাবে সুব্রত সাহার নাম ঘোষণা করা হয়। দিল্লি থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে সুব্রত বলেন, ‘কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডার থাকার সময় দেখেছি সন্ত্রাসবাদীরা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আর পশ্চিমবঙ্গে দেখছি একটি সংবিধান স্বীকৃত জাতীয় রাজনৈতিক দল (তৃণমূল) সেটাই করছে। কোনও শিল্প আনতে পারেনি গত ১০ বছরে।
২০১১ সালে গালভরা প্রতিশ্রুতি ও তার পর ঢাকঢোল পিটিয়ে শিল্পপতি ও বণিকসভাগুলিকে নিয় বহু সম্মেলন আয়োজনের পরেও। বরং বেকারত্ব বেড়েছে। গ্রামেও ন্যূনতম রোজগারের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে পারেনি তৃণমূল সরকার। সঙ্গে বেড়েছে দুর্নীতি, ঘুষ, তোলাবাজি।’
সুব্রতের আগে সেনাবাহিনীর এত উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে দাঁড়াননি। এর আগে জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী সংসদ সদস্য ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন রাজ্যসভায়।
তার বাবাও সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। জন্ম কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে। ১৯৫৭ সালে। তাকে ভর্তি করানো হয় পুরুলিয়ার সৈনিক স্কুলে। অবসর নেওয়ার পর বাবা আসানসোলে গিয়ে শুরু করেন ব্যবসা।
পুরুলিয়ার সৈনিক স্কুল থেকে বেরিয়ে সুব্রত পড়তে চলে আসেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। সেখান থেকেই বসেন ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকেডেমির প্রবেশিকা পরীক্ষায়। পাস করে ভর্তি হন পুণের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে।
তারপর বিএসসি করেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৭ সালে। ১৯৮৯ সালে ‘ইগনু’ থেকে ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা। ২০১০ সালে পেনসিলভানিয়ার আর্মি ওয়ার কলেজ থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স।
২০১১ সালে ইনদওরে ডিফেন্স ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজে এম ফিল। দু’বছর পর মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিফেন্স ও স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে এম-এসসি। ২০২০ সালে ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে পিএইচডি।
সুব্রত জানান, দেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবনাচিন্তাই তাকে প্রেরণা জুগিয়েছে। কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন ২০১৩-’১৪ সময়সালে। সেই সময় সীমান্ত ও দেশরক্ষার কাজে নিজেকে সপে দিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে অবসর নেওয়ার পর থেকেই দেশের জন্য আবার ঝাঁপিয়ে পড়ার ইচ্ছে জাগে।