কোনো ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে খাল দখল বা অন্য কোনো অপরাধ প্রমাণিত হলে তার কাউন্সিলরশিপ থাকবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় কোনো কাউন্সিলর দখল করেছেন, অবশ্যই সেই কাউন্সিলরের কাউন্সিলরশিপ বাতিল হয়ে যাবে।

এমনকী দখলের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলেও কাউন্সিলরশিপ থাকবে না।

শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর উত্তরা-১১ নম্বর সেক্টরের স্লুইচ গেট এলাকায় খিদিরখালের উপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নতুন খনন করা খালের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরকালে মেয়র আতিক একথা বলেন।

মেয়র বলেন, গত ১৬ মার্চ উত্তরা-১১ নম্বর সেক্টরের এই জায়গায় এসে আমি লক্ষ্য করলাম, স্লুইচ গেট এলাকার ডানে ও বামে খিদির খাল থাকলেও মাঝখানের কানেক্টিভিটি (সংযোগ) নেই। এটি ভরাট করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এরা অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি গত মঙ্গলবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, এলাকার জনসাধারণ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এটি ভেঙে দিয়েছি।

‘এখানে খালের স্বাভাবিক গতি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় আমাকে এভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে হবে জনগণের সহায়তা নিয়ে। ’

রাজউকসহ অন্য সরকারি সংস্থার প্রতি নির্দেশনা দিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আপনাদের মানসিকতা পরিবর্তন করেন। শুধু প্লট বরাদ্দ দিলে হবে না, ঢাকা শহরে ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। তারা একটার পর একটা প্লট বরাদ্দ দিয়ে দিচ্ছে অথচ কোনো ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। খালের উপর বরাদ্দ দিচ্ছে - বিষয়টি ভাবতে হবে। খাল উন্মুক্ত রাখতে হবে। খাল ভরাট করলে চলবে না।

‘সরকারি সব সংস্থার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে কোনোকিছুর অনুমতি দেওয়ার আগে সিএস ম্যাপ, আরএস ম্যাপ দেখুন, মহানগর জরিপ দেখুন তারপর চিন্তাভাবনা করবেন জায়গার বরাদ্দ দেবেন কি দেবেন না। আপনারা হুট করে দিয়ে দেবেন আর জনগণের ভোগান্তি হবে- এটা অত্যন্ত কষ্টকর। আপনারা সরেজমিনে এসে দেখে তারপর চিন্তা-ভাবনা করবেন কোথায় প্লট বরাদ্দ দেবেন। ’

এসময় মেয়র উপস্থিত সবাইকে বলেন, দেখুন কীভাবে একটা রাস্তা সরু হয়ে গেছে। আমার অবাক লাগে কীভাবে এই খালটা বন্ধ করে দিল। আমি আমাদের কাউন্সিলর ও প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে বলেছি এই খালের শেষ ম্যাপ দেখে কতটুকু চওড়া সেটা দেখে নির্ণয় করতে হবে।

গত মঙ্গলবার সমন্বিত মশক নিধন অভিযান পরিদর্শনকালে খিদির খাল এলাকায় থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটি খনন করে প্রবাহ ফেরানো হয়। তিনদিন আগেও এই খালের অস্বিত্ব ছিল না। খালের উপর একটি প্রতিষ্ঠান সেলস অফিস নির্মাণ করে দখল করে রেখেছিল। সেটি গুঁড়িয়ে দিয়ে নতুন করে খাল বের করেন মেয়র।

নতুন খনন করা খাল উদ্বোধনকালে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক, স্থানীয় ৫১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শরীফুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।