মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনামূলক জনপ্রিয় কথামালার ইসলামী সংগীত 'আদরও করিয়া মানুষ আল্লাহ বানাইয়া' এবার ভিন্নভাবে আরও শ্রুতিমধুর করে গেয়েছেন ইসলামী আলোচক, তরুণ বক্তা ও বিভিন্ন সময় ইসলামি সংগীত গাওয়া সংগীতশিল্পী মুফতী মাহফুজুর রহমান জাবের।
ইসলামি সংগীত প্রকাশের ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম 'তারানা রেকর্ডসে' সংগীতটি গতকাল (২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করা হয়।
গজলটি বেশ শ্রুতিমধুর হয়েছে এবং শ্রোতামহলেও সাড়া ফেলেছে। মাত্র ২০ হাজার সাবস্ক্রাইবারের নতুন ইউটিউব চ্যানেল তারানা রেকর্ডসে মাত্র একদিনে গংগীতটি ২৭ হাজার ভিউ হয়েছে।
এছাড়াও ফেসবুকে কয়েকলাখ মানুষ ইতোমধ্যেই সংগীতটি দেখেছেন।
সংগীতটির ভিডিও ডিরেক্ট করেছেন মেহেদী হাসান রনি, সাউন্ড ডিজাইন করেছেন সাফিন আহমেদ, রেকর্ড হয়েছে 'তারানা রেকর্ডসে'।
এর আগে গত মাসখানেক আগে মাহফুজুর রহমান জাবের 'কেয়ামত' শিরোনামে একটি মৌলিক সংগীত প্রকাশ করেছেন। সংগীতটি বাংলাদেশে ইসলামি গজল প্রকাশের সর্ববৃহত ইউটিউব প্লাটফর্ম 'হলিটিউনে' প্রকাশ করা হয়েছিলো। যে সংগীতটিও শ্রোতামহলে সাড়া পেয়েছিলো। যার ধারাবাহিকতায়ই 'আদরও করিয়া মানুষ আল্লাহ বানাইয়া' শিরোনামের কালজয়ী সংগীতটি গেয়েছেন তিনি।
সংগীত গাওয়া নিয়ে মাহফুজুর রহমান জাবের পাবলিক ভয়েসকে বলেন - 'নাশিদগুলো গেয়ে আমি যে পরিমাণে শ্রোতাদের ভালবাসা ও সাড়া পেয়েছি, তা সত্যিই কল্পনাতীত। বয়ান ও মাদ্রাসার ব্যাস্ততার কারণে আলাদাভাবে গজলে সময় দিতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। তারপরও মিছবাহ দাদা, (মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ।) কলবের আবু রায়হান, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান ভাই, আরিফ আরিয়ান ও হোসাইন আদনানদের চেষ্টা ও অনুপ্রেরণায় চেষ্টা করেছি। ভালো-মন্দ'র হিসেব করে করছি না, ভালো-মন্দ'র বিবেচনা করবেন শ্রোতারা। তবে আমি গজলগুলোকে আবেগ ও অনূভুতির পরিপূর্ণতা দিয়েই গাওয়ার চেষ্টা করছি।'
গজলে ধারাবাহিক হওয়ার বিষয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন - 'সাধারণত ওয়াজ-মাহফিলে শ্রোতাদের অনুরোধে প্রায় প্রতিদিনই গজল গাইতে হয়। সে হিসেবে ধারাবাহিক তো বলাই যায়। তবে স্টুডিওতে গজল গাওয়ার বিষয়ে চেষ্টা করবো প্রতিমাসে একটি গজল গাইতে। সে হিসেবে সামনেও আরো কিছু নাশিদ আসছে ইনশাআল্লাহ। শ্রোতা ও দর্শকদের কাছে ভালোবাসা ও দোয়া চাই আমি।'
একই সাথে সংগীত বিষয়ে তিনি আরও কয়েকজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও ভালবাসা দিয়েছেন তারা হলেন প্রিয় ভাই হাছিব আর রহমান, মেহেদী হাসান রনি (ভিডিও ডিরেক্টর) মাহফুজুল আলম (কেয়ামত নাশিদের সাউন্ড ডিজাইনার) সাফিন আহমদ ('আদরও করিয়া' নাশিদের সাউন্ড ডিজাইনার) তানভীর খাঁন (ভিডিও মেকার ও সাউন্ড ডিজাইনার)।
প্রসঙ্গত : 'আদরও করিয়া মানুষ আল্লাহ বানাইয়া, কেমনে দিবা জাহান্নামে ফালাইয়া' একটি কালজয়ী প্রার্থনামূলক ইসলামি সংগীত। সংগীতটির মূল উতপত্তি সম্পর্কে জানা যায় - চলাভাঙ্গা দরবার শরীফের মরহুম পীর আ. রশিদ রহ. এই সংগীতের কথামালাগুলো বিভিন্ন মাহফিলে ও মুনাজাতে গাইতেন। এরপর বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মরহুম আবদুল হক আব্বাসীও এই কথামালাগুলো গাইতেন। তার মুখ থেকেই এই কথামালাগুলো বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
তবে এ কথামালাগুলো সংগীতে রুপান্তর কিভাবে হলো সে বিষয়ে পাবলিক ভয়েসের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করা হলে একটি সূত্রমতে জানা যায় - সংগীতটি সর্বপ্রথম ইসলামী সংগীতে রুপান্তর করেছেন জনপ্রিয় ইসলামী সংগীতশিল্পী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
এরপর তথ্যসূত্র অনুসারে মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সত্যায়ন করেন এবং পাবলিক ভয়েসকে বলেন - 'এই সংগীতের মূল কথাগুলো বেশিরভাগ (প্রায় ৬০%) মরহুম মাওলানা আব্দুল হক আব্বাসী সাহেবের থেকে আমি নিয়েছি। এরপর বাকিটুকু (প্রায় ৪০%) সংযোজন করে, প্রার্থনামূলক সূর দিয়ে সর্বপ্রথম গজলে রূপ দিয়েছি। তারপর অনেকেই সংগীতটি গেয়েছেন।'
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আরও জানান - '২০০২-২০০৩ সালের দিকে সর্বপ্রথম এটি গজল হিসেবে প্রকাশ পেয়েছিলো। প্রথম গেয়েছিলো নেছারাবাদের আমার এক শীষ্য শিশুশিল্পী মেজবাহ উদ্দিন। অ্যালবামের নাম ছিল "চলে যাবো একদিন"।
মাহফুজুর রহমান জাবেরের কন্ঠে সংগীতটি ইউটিউবে দেখুন :
https://youtu.be/cJV1FqkinE8