ইউসুফ পিয়াস
পাবলিক ভয়েস
মুমিন-মুসলমানের মধ্যকার অভিবাদনের একমাত্র মাধ্যম হলো সালাম। রাসূল সা:-এর সুন্নতগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম একটি সুন্নত হলো সালামের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করা।
সালাম শব্দটি আরবি , যার অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া। সালাম একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন পরিপূর্ণ ইসলামি অভিবাদন। এবং ‘সালাম’ আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম। (সুরা-৫৯ হাশর, আয়াত: ২৪)।
আল্লাহ তা’আলা প্রথমে আদি পিতা হজরত আদম (আ.)–কে সালাম শিক্ষা দেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা হজরত আদম (আ.)–কে সৃষ্টি করে বলেন, যাও ফেরেশতাদের সালাম দাও এবং তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেয়, মন দিয়ে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। সে অনুযায়ী হজরত আদম (আ.) গিয়ে ফেরেশতাদের বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’, অর্থ ‘আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’ ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’, অর্থ ‘আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।’ (মিশকাত: ৪৬২৮)।
সালামের অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। এবং যা বিভিন্ন হাদিসের মাধ্যমে সুন্দরভাবে বর্ণনা আছে। তারমধ্যে কিছু নিম্নে দেয়া হলো-
সালাম দানকারীকে আল্লাহ হেফাজত করেন : আল্লাহ তায়ালা সালামের প্রচলনকারীর জন্য জিম্মাদার হয়ে যান। তাদের হিফাজতে রাখেন। যেমন হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তিন শ্রেণীর লোকের জিম্মাদার হন। তাদের মধ্যে প্রথম হলো, যে ব্যক্তি সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। অর্থাৎ ঘরে বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোন, ছোট-বড় যেই থাকুক না কেন; তাদের সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। আল্লাহ তায়ালা ওই বাড়িকে এবং ওই ব্যক্তিকে হিফাজত করেন।’ (আদাবুল মুফরাদ-১০৯৪)
কৃপণতা থেকে মুক্ত রাখ: রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, “কৃপণতার চেয়ে আর কোন ব্যাধি এত বেশি মারাত্মক? কৃপণ আল্লাহর নিকট ঘৃণিত, মানুষের নিকট ঘৃণিত, জান্নাত হতে বিতাড়িত, শয়তানের বন্ধু এবং জাহান্নামের নিকটে অবস্থানকারী। আর জান্নাত হল, দানশীলদের ঠিকানা” ।
সালাম অহঙ্কার মুক্ত রাখে : যে প্রথমে সালাম দিলো সে যেন অহঙ্কারমুক্ত থাকলে। ইমাম বায়হাকি রহ: তার নিজ গ্রন্থ ‘শুআবুল ঈমানে একটি হাদিস বর্ণনা করেন। হজরত আবদুুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিতÑ আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, তোমাদের যে প্রথমে সালাম দেবে, সে যেন অহঙ্কার থেকে মুক্ত থাকল।’ (মেশকাত : ৪৬৬৬, শুআবুল ইমান : ৮৭৮৫)
জান্নতে প্রবেশের অন্যতম কারণ হলো সালাম দেওয়া: যে সব কারণগুলো মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে, সালাম একটি অন্যতম কারণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ কে জিজ্ঞাস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তুমি আমাকে এমন আমল বলে দাও, যা জান্নাতে প্রবেশকে ওয়াজিব করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বললেন, “মিষ্টি কথা, সালামের প্রসার এবং মানুষকে খানা খাওয়ানো।