প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ২৭, ২০২৫, ১১:২৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারি ২৭, ২০১৯, ২:৫৩ অপরাহ্ণ

প্রথম আলো এমনি এক পত্রিকা , কত জনে পড়ে তা জানিয়ে দেয়। আপনি এখন গুনেন গিয়া। কর্পোরেট মিডিয়া বলতে একটা কথা আছে, প্রথম আলো সেইটা। তাঁর অদ্ভুত খেয়াল, কখন কোন সংবাদকে গুরুত্ব দিবে অথবা দিবে না। আল্লাহ মালুম।
প্রথম আলোর ইসলাম ও মুসলিম নিয়ে ক্রণিক ব্যামোটা আজ পর্যন্ত সারলো না। মারাত্মক এলার্জি। সম্পাদক মতিউর রহমান, যিনি কমিউনিস্ট পত্রিকা একতা সম্পাদনা করেছেন। মগজে সেইটা রয়ে গেছে। বাম & বাম কোম্পানি।
ইশা ছাত্র আন্দোলন ঢাবি ক্যাম্পাসে দাবি-দাওয়া নিয়ে একটি প্রতিবাদী মিছিল করেছে। এটা এমন কি? দরকার মনে হয়েছে মিছিল করেছে। এটা তো ছাত্র সংগঠনগুলোর রেওয়াজ। দাবী আদায়ের জন্য মিছিল করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার দাবি। ডাকসুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো মৌলিক অধিকারের কথা তাঁরা মিছিল করে চিৎকার করে বলেছে। পত্রিকাগুলোর উচিত , এমন ন্যায়সঙ্গত দাবীর কথা তুলে ধরে তাদের পাশে থাকা। কিন্তু ইশা ছাত্র আন্দোলনের মিছিল বা দাবীর বিষয়ে সে দিন পত্রিকাটি নিউজ করেনি, নিউজ করেছে আজ। ইশা ছাত্র আন্দোলন যাতে ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে পারে সে ব্যাপারে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট "প্রগতিশীল ছাত্র জোট" যে বিবৃতি দিয়েছে, তা ফলাও করে প্রচার করছে।বিবৃতিদাতাদের পরিচয় দেখলেই বুঝা যায়, তাদের মতলবটা কি?
ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করতে দিবে না এ ব্যাপারে তাদের নাকি মতৈক্য হয়েছে। এটা কোন্ আইন বা বিধিতে লেখা আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইসলামী দলের ছাত্র সংগঠন তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না। অপরাধটা কি? ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। ইশা ছাত্র আন্দোলন এর ছাত্র সংগঠন। বৈধ ও দৃশ্যমান ছাত্র সংগঠন।
পত্রিকাকে গণমাধ্যম বলার বলার কারণ, সে গণমানুষের কথা বলার জন্য ভূমিষ্ঠ হয়েছে। গণমাধ্যম মানুষের অধিকারের কথা বলবে, মানুষের অসুবিধা নিয়ে কথা বলবে, এখানে প্রথম আলো ইশা ছাত্র আন্দোলনের স্বপক্ষে কোন কথা তো বলেই নি বরং আজ একটা উস্কানিমূলক নিউজ করেছে।
প্রগতিশীল ছাত্রজোট বলতে যে সব সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, এ জোটের অধীনে যে সব ছাত্র সংগঠন রয়েছে, তার সঠিক তথ্য প্রথম আলো দিতে পারবে না। আদৌ অস্তিত্ব আছে কিনা সন্দেহ। নাম সর্বস্ব সংগঠনের পক্ষে এমন ওকালতি করতে প্রথম আলো লজ্জা পায় না। দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দাবীদার পত্রিকাটি কিছু ছাত্রনামধারীদের নেতিবাচক বিবৃতি নিয়ে আস্ত একটা নিউজ করবে, তা মানা যায় না। দেখতে কুৎসিত লাগে।
নব্বই'র পর ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছে, এটা ভালো সংবাদ। এমন আয়োজনে কেউ অতিথি হবে কেউ বিনা দাওয়াতে থাকবে সেটা কাম্য নয়। এটা বৈষম্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা ডাকসু নির্বাচনে ভোটার এবং তাদের মধ্য থেকেই প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ভোট দেয়ার যোগ্যতা থাকলে প্রার্থী হতে পারবে না এমন দাবী যারা করছে, তারা অত্যন্ত দুষ্টু? ওরা কিসের প্রগতিশীল? আইন বিধি না মানারা তো প্রগতির অন্তরায়। তবে প্রগতি শীল হতে পারে। যত্তসব নাপিতের দল, যারা গাঁজা খেতে অভ্যস্ত। ওটায় টান দেয়ার পর হয়ে যায় বেদিশা। আবোলতাবোল বকে।
বলো তো প্রগতিবাদীরা! ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করা যাবে না, ধর্মহীনরা রাজনীতি করতে পারবে- এমন বিধান লেখা আছে কোন গ্রন্থে? বিশ্ববিদ্যালয়ে নাস্তিকমনাদের রাজনীতি করার বৈধতা থাকলে আস্তিকের কেন নয়?
আমরা জানি, একটি ইসলামী ছাত্র সংগঠনের সাথে তাদের আজন্ম শত্রুতা চলছে। কিন্তু ইশা ছাত্র আন্দোলন তোমাদের করছেটা কি? এটা তো ভিন্ন সংগঠন। যাদের ইতিহাসে সন্ত্রাসের নজির নাই। তাঁদের কোন কর্মী প্রচলিত আইন বিরোধী কোন কাজে কখনো জড়িত ছিলো না, এখনো নাই, ভবিষ্যতেও থাকবে না ইনশাআল্লাহ।
ইনোসেন্ট স্টুডেন্ট পলিটিক্স বলতে যা বুঝায়, ইশা ছাত্র আন্দোলন ঠিক সেইটা চর্চা করে।
ঐ সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেজন্য ইশা ছাত্র আন্দোলন ভূগবে কেন? বরং শত্রুর শত্রু থিওরীতে বন্ধুত্ব হবার কথা। আসলে এরা থিওরি টিওরিতে নাই, আছে ইসলাম ফোবিয়ায়। ক্যাম্পাসে মুসলমান থাকবে কেন? আমি প্রাক্টিসিং মুসলিমের কথা বলছি। ওরা ইসলামকে ডরায় কিন্তু নামের সাথে ইসলাম রাখতে আপত্তি নাই। তারা ক্যাম্পাসে বসে গাঁজা খাবে, গাঁজার চাষ করবে। ইশা ছাত্র আন্দোলনের ছেলেরা সে বিবেচনায় অযোগ্য। তাই তারা এমন অযোগ্যদের হটাতে পিছু লেগেছে। ওদের আস্কারা দেয়ার মতো মুরব্বীরাও ওখানে আছেন। যারা বলে, মাদ্রাসার ছেলেরা ইংরেজি জানে না, এরা পশ্চাৎপদ। এ ব্যাকডেটেডরা আপটুডেট হতে চাইলে তাদের তো এগিয়ে এসে সহযোগিতা করা উচিত। বরং উল্টোটা করছে।
তবে আমি হতাশ নই। মাশাআল্লাহ। কারণ, অন্যান্য ইউনিভার্সিটিতে ইশা ছাত্র আন্দোলন ছাত্র সংসদে লড়বে। এখানেও ইনশাআল্লাহ তাদেরকে ডাকতে বাধ্য হবে।
ঢাবি প্রশাসনের প্রতি আস্থা আছে, কয়েকজন ছাত্রের বেআইনী আবদার থাকতেই পারে। তাতে কি? তারা বেআইনী ও মৌলিক অধিকার বিরোধী আইন প্রণয়ন করবে না। এমন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ঢাবি প্রশাসন কমপক্ষে উনসত্তুর বার ভাববে। কারণ, আইনী চ্যালেঞ্জ হলে তখন তাঁরা কি জবাব দিবেন?
লেখক-
এক্টিভিস্ট, বিশ্লেষক।