এবার ফ্রান্সে করোনার নতুন ধরণ শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন থেকে ফেরা এক ব্যক্তির শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন বা ধরনটি শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিটি ফ্রান্সের নাগরিক। তিনি গত ১৯ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন। এরপর ২১ ডিসেম্বর তার করোনা পরীক্ষা করা হয়। ওই ব্যক্তির মধ্যে কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা যায়নি। বর্তমানে তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন। নতুন স্ট্রেইনের করোনা শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে বলেও জানায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ফ্রান্সের আগে বেশ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন এই স্ট্রেইন শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার জাপানে পাঁচজনের শরীরে এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। তাঁরা সবাই যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছিলেন। এ ছাড়া ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডেও এই করোনাভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে করোনার নতুন একটি ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য চেষ্টা করছে। নতুন ধরনের ওই করোনাভাইরাস গতানুগতিক ভাইরাসের চেয়ে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে সক্ষম। এ নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে লন্ডন ও কেন্ট শহরে প্রথম নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের দেখা মেলে। ডিসেম্বরে এসে লন্ডনে এই নতুন ধরনের ভাইরাসই বেশি দেখা যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী লন্ডনে সংক্রমণের ৬২ শতাংশই এই ভাইরাস। ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে এটি ৫৯ শতাংশ আর দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে ৪৩ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী বরিসের সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ব্রিটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালেন্স এসব কথা জানান।
যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স ছাড়াও করোনাভাইরাসের নতুন ধরন পাওয়া গেছে ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ডেনমার্কে নতুন ধরনে আক্রান্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন অন্তত নয়জন। এছাড়া, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রেলিয়ায় একজন করে রোগী পাওয়া গেছে।
করোনার নতুন ধরন শনাক্তের জেরে চলতি সপ্তাহে ব্রিটিশ সীমান্ত ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ রেখেছিল ফ্রান্স। পরে আংশিকভাবে শুরু হয়েছে যোগাযোগ। বর্তমানে শুধু বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত ফরাসি বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক এবং ব্যবসয়িক ভ্রমণকারীরা যুক্তরাজ্য থেকে ফ্রান্সে প্রবেশ করতে পারছেন। সীমান্তের এই বিধিনিষেধ অন্তত আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে। সূত্র: বিবিসি ও আলজাজিরা
এন.এইচ/