পাবলিক ভয়েস: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা অন্তিম নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানার শ্রমিকরা কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নামতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেলে শ্রমিক ও আশপাশের তিনটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন।

আহত শ্রমিক আমেনা, ফারজানা, আসলাম ও কাউসার বলেন, গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের বকেয়া বেতন ১০ জানুয়ারি দেয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি শ্রমিকরা কারখানায় যান। পরে গেটে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকরা উত্তেজিত হলে কর্তৃপক্ষ পুনরায় ২৪ জানুয়ারি বেতন দেয়ার ঘোষণা দেন। মালিকপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকরা আজ বৃহস্পতিবার সকালে কারখানার সামনে এসে গেটে তালা ঝুলানো দেখেন।

শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশ টানিয়ে চলতি মাসের ৩১ তারিখে বেতন পরিশোধ ও ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেন। নোটিশ দেখে শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ অবস্থান নেন।

কয়েকজন শ্রমিক সড়কে নামতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকরা পুলিশের ওপড় ঢিল ছোড়ে। একপর্যায়ে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পুলিশের টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জে কারখানার ৩০ শ্রমিক আহত হন।

স্থানীয়রা জানান, পুলিশ কারখানার বাইরে গিয়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করায় আশপাশের লিটল ফ্লাওয়ার প্রি-ক্যাডেট স্কুল, বরপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্রিলিয়ান্ট মডেল স্কুলের ৩০ জন ছাত্রছাত্রী আহত হয়। গুরুতর আহত স্কুলছাত্র ঈশিকা, শিফা, রাফিন ও নাহিয়ানকে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আব্দুল হক বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও শ্রমিকদের বেতন না দেয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন দফতরে প্রতিবেদন দিয়েছি।

শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা উচিত কারখানা কর্তৃপক্ষের।

শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকরা প্রথমে পুলিশের ওপড় ঢিল ছুড়ে। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।