কওমী মাদরাসায় চলমান সংকট থেকে উত্তোরণের উপায় আলোচনা করতে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় গুরুত্বপূর্ণ ইসলাহী মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বেফাকের সংকট নিরসনে চার দফা প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে। ইসলাহী মজলিসে চার দফা প্রস্তাব সর্বসম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব।
প্রস্তাবগুলো হলো -
১. কওমি মাদরাসার ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা রক্ষার্থে 'তাহাফফুজে ফিকরে দেওবন্দ' শিরোনামে সারাদেশে আলোচনা সভা করা হবে।
২. দ্রুত সময়ের মধ্যে বেফাকের মজলিসে শুরা ও আমেলার বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
৩. ইসলাহী মাহফিল থেকে সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখার জন্য ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয় । গঠিত ১০ সদস্যের কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংকট সমাধানের জন্য বেফাক নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত ও আলোচনা করবে ।
৪. মাদরাসায় মাদরাসায় কাদিয়ানীদের পক্ষ থেকে প্রেরিত চিঠি প্রেরণ ও তাদের অন্যান্য অপতৎপরতা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বেফাককে তাঁর সংবিধান মোতাবেক চলতে বাঁধাগ্রস্থ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন, বেফাকের সহ-সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
তিনি বাংলাদেশের সকল কওমি মাদরাসার দায়িত্বশীলদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারা দয়া করে সরকারী অনুদান নিবেন না। সরকারী অনুদান নিলে কওমী মাদরাসার স্বকীয়তা টিকবে না।
তিনি বলেন, দারুল উলূম দেওবন্দের অষ্টনীতির ভিত্তিতে সরকার আমাদেরকে স্বীকৃতি দিবে, এমন কথা শুনেই আমরা স্বীকৃতি নিয়েছি। কিন্তু সেখানে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, দেশের কওমি মাদরাসা দেওবন্দের আদর্শ মোতাবেক পরিচালিত হবে কথাটি থাকলেও অষ্টনীতি বা উসুলে হাশতেগানাহ শব্দটি নেই। এটাকে বিলোপ করে দেয়া হয়েছে।
সভাপতির ভাষণে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, আমরা বেফাককে ভাঙ্গণের জন্য এখানে ইসলাহী মজলিস করিনি। বরং বেফাকসহ কওমী সকল প্রতিষ্ঠান যেনো সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারে সেজন্য এই ইসলাহী মজলিসের আয়োজন করা হয়েছে।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী ও মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীর সঞ্চালনায় ইসলাহী মজলিসে বেফাকের সংকট কাটিয়ে উঠতে পরামর্শ ও ইসলাহীমূলক বক্তব্য রাখেন, আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধূরী, পীর সাহেব দেওনা, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা হেলাল উদ্দিন, মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা ওমর ফারুক সন্দিপী, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা মুঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা শওকত হোসেন সরকার, মাওলানা মাসউদুল করীম, মাওলানা লেহাজ উদ্দিন, নাজিরহাট মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মুফতি হাবীবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা সাঈদ নূর, মাওলানা আব্দুল হামিদ কুষ্টিয়া, মাওলানা হারুন ইজহার, মাওলানা লোকমান মাজহারী,মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি মুফতি আব্দুর রহমান, কওমী ঐতিহ্যের মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা আব্দুল্লাহ সাভার, মাওলানা বশির আহমদ, হাফেজ মাওলানা আলী আকবর, মাওলানা ইয়াকুব ওসমানী, বি-বাড়ীয়া, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী কুমিল্লা, মাওলানা আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া খুলনা ও মাওলানা আব্দুল আজীজ সিলেটসহ সারা দেশের প্রায় দুই হাজার ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।