নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর তল্লা এলাকায় একটি মসজিদে ভয়াবহ এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪০ জন মুসল্লি গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন এবং ৩ জনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মধ্যে আরও অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঠিক কী কারণে একই সাথে এতগুলো এসির বিস্ফোরণ ঘটলো তা নিয়ে শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন অভিযোগ। কেউ বলছে মসজিদের পাশের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ব্লাস্ট হয়ে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে এবং কেউ বলছে গ্যাসের পাইপ লিকেজে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে গ্যাস লিকেজের ঘটনা ঘটেছে বলেই অনেকের মতামত।
[বিস্ফোরণে দগ্ধ মুসুল্লিরা]
একাধিক স্থানীয়রা বলছেন মসজিদের নিচে তিতাস গ্যাসের পাইপ লিকেজের কারণেই এই বিস্ফোরণের তীব্রতা বেড়েছে। তারা জানিয়েছে - মসজিদ বন্ধ থাকা অবস্থায় ভিতরে গ্যাসের লিক হয়ে যায়। পুরো মসজিদের কক্ষটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়। এরপরেই এসির বিস্ফোরণ। আর সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের এমন অবস্থা থাকায় বিস্ফোরণের মাত্রা তীব্র হয়। অনেক দিন ধরেই এই মসজিদের নিচ দিয়ে যাওয়া তিতাস গ্যাসের লাইন লিক হয়ে গেছে এমন অভিযোগ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানানো হলেও তারা কিছুই করেনি। তারা আরও জানান, মাঝেই মাঝেই মসজিদের ভিতরের গ্যাসের কটু গন্ধ পাওয়া যেতো। কিন্তু তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কোন টনক নরেনি।
এদিকে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর এখন তিতাস কর্তৃপক্ষ গ্যাস লিকেজ ঠিক করতে বিস্ফোরণে প্রায় ধংস্প্রাপ্ত মসজিদে শ্রমিক পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্যে ৩৭ জনকে আহতদের শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল ও ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত : শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এশার নামাজ চলাকালে শহরের তল্লা বাইতুস সালাম মসজিদে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সবার অবস্থা গুরুতর।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আরেফিন জানান, মসজিদের এসি বিস্ফোরণে অনেকে দগ্ধ হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মসজিদে এশার নামাজের পর মোনাজাত চলাকালে বিকট শব্দে এসির বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় মসজিদে প্রায় ৪০-৫০ মুসল্লি ছিলেন। বিস্ফোরণের পর হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার সময় অনেককেই বস্ত্রহীন এবং শরীর ঝলছে যাওয়া অবস্থায় দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, এশার নামাজের শেষ সময় এয়ারকন্ডিশনের গ্যাসের লিকেজ হয়ে এ বিস্ফোরণ ঘটে। সূত্র : সময় টিভি