
যশোরে ব্যবসার নাম করে বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় ভিএইচ (ভেংকিস) গ্রুপের বিরুদ্ধে। তাদের কাছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা পাওনা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। আর সেই টাকা পরিশোধ না করে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছে ওই প্রতিষ্ঠানটি।
আজ বুধবার যশোর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনেন ভুক্তভোগীরা।
তারা জানান, ২০১১ সালে যশোরে উত্তরা ফুডস এন্ড ফিডস নামে পোল্ট্রি ও ফিস ফিডের দুটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করে ওই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি। তখন কারখানার জন্য কাঁচামাল সরবরাহ করতে দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভিএইচ গ্রুপের মালিক। সেই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় কারখানা দুটিতে কাঁচামাল সরবরাহ করে আসছেন প্রায় ৭০টি প্রতিষ্ঠান।
পাঁচ বছর আগ পর্যন্ত তাদের কাছে সরবরাহকারী এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ১৬ কোটি টাকা পাওনা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ টাকা পরিশোধ না করে উৎপাদন কমিয়ে আনতে শুরু করে। ফলে সরবরাহকারীও কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে কারাখানা দুটি বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এখন তারা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকার তুর কর্পোরেশনের মালিক পল্লব সমীর কুদরতে খুদা ব্রেজনেভ বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তাদের কাঁচামাল সরবরাহ করে আসছি। মালামাল দেয়ার এক মাসের মধ্যে বিল পরিশোধ করার কথা থাকলেও এখন তিন বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো পাওনা পরিশোধ নিয়ে তারা গড়িমসি করছে।
গ্লোবালাইজেশনের এ যুগে দেশীয় সফল এই শিল্পে বিদেশি কোম্পানি এদেশে ব্যবসা করতে এসে সাধারণ ব্যবসায়ীদের সর্বশান্ত করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাওনা আদায়ে তাদের সঙ্গে বহুবার দেন দরবার হয়েছে। এমনকি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকেও অবহিত করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে গত ১৫ মার্চ কিছু ছাড়ের বিনিময়ে পাওনা শোধ করার অঙ্গীকার করে মালিকপক্ষ। পরে জুন পর্যন্ত সময় নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে বগুড়ার সততা ট্রেডার্সের মালিক একেএম আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি নিজে ওই কোম্পানিটির কাছে ৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা পান। পাওনা পরিশোধ না করায় এখন তাকে পথে পথে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। পাওনা টাকা পেতে ভিএইচ গ্রুপের কাছে বার বার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বকেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে উত্তরা ফুডস অ্যান্ড ফিডসের অডিটর সন্দীপ তাভানি বলেন, গত মার্চ মাসে সকল পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলে করোনার কারণে সেটি দেরি হয়ে গেছে। মালিকপক্ষ অবশ্যই টাকা পরিশোধ করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এমএম/পাবলিকভয়েস