
মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে আরব আমিরাতের চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
তিনি বলেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে আরব আমিরাতের চুক্তির ফলে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে দ্বিধাভক্তি সৃষ্টি হচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের এ দ্বিধাবিভক্তি যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়া এ চুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তানের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করা হয়েছে। তাই অবিলম্বে এ চুক্তি বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেন, আরব দেশগুলোর কতক দেশ নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে আল্লাহর দুশমনদের সাথে চুক্তি করছে। ইসরাইলের হাতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মা-বোন, নারী-পুরুষ, শিশু হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। তাদের হাত মুসলিমদের রক্তে রঞ্জিত। অভিশপ্ত ইসরাইলের সাথে কোন চুক্তি মুসলমান করতে পারে না। এ চুক্তির ফলে মুসলিম দেশগুলোতে অশান্তি সৃষ্টি হবে।
শায়েখে চরমোনাই ইসরাইল-আমিরাতের চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, এ চুক্তি বাতিল না হলে মুসলিম উম্মাহ আরব আমিরাতসহ তাঁবেদার আরবদেশগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে বাধ্য হবে।

আজ শনিবার (২২ আগস্ট) অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে চুক্তি বাতিলের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্তরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ। ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, নুরুল ইসলাম নাঈম, হুমায়ুন কবির, এইচ এম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন ভূখন্ডে আর ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ করবে না। বিনিময়ে আরব আমিরাত ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। কিন্তু সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের জনগণ এই চুক্তির তীব্র বিরোধীতা করছে।
অন্যদিকে বাহরাইন, মিসর ও জর্ডান এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। ফলে ক্রমেই মুসলিম দেশগুলোর দ্বিধাবিভাক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই চুক্তি শান্তি প্রতিষ্ঠাকে পিছিয়ে দেবে এবং বিভক্ত মুসলিম বিশ্ব সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে। তাই মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষায় এ চুক্তি থেকে সরে আসতে হবে।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, দেশের সবগুলো সেক্টরে ভারতের সিন্ডিকেট ঢুকে পড়ছে। ওসি প্রদীপকে বিচার থেকে রেহাই দেয়ার জন্যই রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দিয়ে দৃষ্টি ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতের সাথে যেকোন স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাংলার জনগণ মেনে নেবে না।
অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইহুদি-মুশরেকরা আল্লাহর দুশমন। যারা আল্লাহর দুশমনদের সাথে সখ্যতা গড়ে তারাও দুশমন। মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির মূলে আরবদেশগুলো দায় এড়াতে পারবে না। তিনি ইসরাইল-আমিরাত চুক্তি বাতিলের দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ইসরাইল-আমিরাতের চুক্তি মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে চরম আঘাত। আমিরাতকে বয়কটের মধ্য দিয়ে এ চুক্তি থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি সরকারকে এর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপনের দাবি জানান। তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে চক্রান্ত বন্ধের দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল প্রেসক্লাব, কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় এসে মিছিলের সমাপ্তি করা হয়।
ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস