
করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের মতো বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার পরিমাণ তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এ লক্ষ্যে চারটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে লোকসান ঠেকিয়ে লাভের মুখ দেখার আশা বিমানের।
বিমানের এই চারটি পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে—স্ট্র্যাটেজিক হিউম্যান ক্যাপিটাল প্ল্যানিং প্রণয়ন করা। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ, বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান, যথাযথ পদায়ন, মূল্যায়ন, প্রণোদনার মাধ্যমে দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তোলা। বিমান কর্তৃপক্ষ মনে করে—দক্ষ জনবল সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে পরিস্থিতি মোকাবিলা সহজ হবে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক রুট বৃদ্ধি ও ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে বিমানের। গুয়াংজু, টরেন্টো, টোকিও, চেন্নাই, কলম্বো, মালে, শারজাহ, সালালাহ, বাহরাইন ও নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট চালু করতে চায় বিমান। নতুন রুট চালু ও পুরনো রুটে ফ্লাইট বাড়ানো গেলে লাভের ধারা বজায় রাখা সম্ভব বলে মনে করছে এয়ারলাইন্সটি।
সরকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করছে। তবে বিমান মন্ত্রণালয় আগেই ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে এককভাবে কাউকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ দেওয়া হবে না। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে তৃতীয় টার্মিনালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ দেওয়া হবে।
শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান এককভাবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করছে—এই খাতটি বিমানের আয়ের অন্যতম উৎস। তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পেতে এখন থেকেই আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সেবা প্রদানের জন্য বেবিচকের গাইডলাইন অনুসারে কর্মী ও যন্ত্রপাতির প্রস্তুতি নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বিমানের।
বিমানের বহরে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উড়োজাহাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব উড়োজাহাজের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রয়েছে বিমানের নিজস্ব প্রকৌশল বিভাগ। তবে বিমান বহরের ড্রিমলাইনারগুলোর সি-চেক করার সক্ষমতা নেই বর্তমান প্রকৌশল বিভাগের। ফলে ছয়টি ড্রিমলাইনের সি-চেক করতে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে বিমানকে।
প্রত্যেকটি উড়োজাহাজকে তিন বছর পর সি-চেক করতে হবে। এজন্য বিমানের প্রকৌশল বিভাগ নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে চায়। বিমান আইএটিএ সেফটি অডিট ফর গ্রাউন্ড অপারেশনস সনদ অর্জনে সক্ষমতা বাড়াতে পরিকল্পনা করছে।
একইসঙ্গে উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণে ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি-১৪৫ (ইএএসএ-১৪৫) সনদ অর্জনে পদক্ষেপ নেবে বিমান। মেরামত কাজের জন্য শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমানের একটি নিজস্ব হ্যাঙ্গার রয়েছে। তবে বিমান উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরও একটি আধুনিক ও সুপরিসর হ্যাঙ্গার নির্মাণ করতে চায়।
আই.এ/