লকডাউনের প্রথম দিকে ঢাকা শহরে ডিভোর্সের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছিল। এ নিয়ে সবাই আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু দুই মাস ঘুরতেই বেরিয়ে এলো ভিন্ন চিত্র।
গত জুলাই মাসে ডিভোর্সের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে আগের যে কোনো পরিসংখ্যানকে। এ সময় ঢাকার দুই সিটিতে যে পরিমান ডিভোর্সের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, তাতে দেখা যায় প্রতিদিন গড়ে ৫১টি দাম্পত্য জীবন তালাকের আশ্রয় নিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মব্যস্ত স্বামী-স্ত্রীর জীবনে লকডাউনের প্রথম দিকটা ছিল অনেকটা হানিমুনের মতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে হারিয়ে গেছে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর ভালোবাসা।
গৃহবন্দিত্ব রূপ নিয়েছে গৃহবিবাদে, যার ফলাফল এমন পরিসংখ্যান। তাছাড়া লকডাউনের শুরুর দিকে বাইরে বেরুতে না পারায় চাইলেও অনেকে ডিভোর্স কার্যকর করতে পারেননি, যার প্রভাব পড়েছে জুলাই মাসে এসে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় গত জুলাই মাসে ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে ৮৭৮টি। অন্যদিকে একই সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় তালাকের ঘটনা ঘটেছে ৬৫৪টি। অর্থাৎ দুই সিটি মিলিয়ে গত জুলাইতে ১ হাজার ৫৩২টি ডিভোর্স নথিভুক্ত হয়েছে ।
নথি ঘেটে জানা যায়, দুই সিটি মিলিয়ে ১ মাসের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ তালাকের ঘটনা। গড় হিসেব অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ৫১টি ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ এহসান হাবীব বলেন, লকডাউনের কারণে দিনের পুরো সময়টাই স্বামী-স্ত্রী কাছাকাছি থাকছেন। তাতে করে ছোটখাটো বিষয় নিয়েও পরস্পরের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিচ্ছে।
তাছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে বেশিরভাগ মানুষেরই উপার্জন বন্ধ কিংবা কমে গেছে। এতে করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে। অভাবের কারণে পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসারও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এসব কারণেই ডিভোর্সের হার বাড়তির দিকে।
আই.এ/