দ্বিতীয়বারের মতো সাতক্ষীরা আশাশুনির প্রতাপনগরে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে জরুরী খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন।
২৬ জুন ২০২০ থেকে গতকাল ২৯ জুন পর্যন্ত ধারাবাহিক চারদিন প্রতাপনগরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে বেশি ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রি বিতরণ করে নেতৃবৃন্দ।
[caption id="attachment_80862" align="alignnone" width="570"] বন্যাপ্লাবিত মানুষদের মাঝে ত্রান বিতরণ করছেন মুফতী হাবিবুর রহমান মিসবাহ। ছবিঃ- পাবলিক ভয়েস[/caption]
১হাজার পরিবারে জরুরী খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, ১০০ টয়লেট নির্মাণ, মহিলাদের জন্য আলাদা টয়লেট ও গোসল খানা নির্মাণ, টিউবওয়েল বসানো ও ঘূর্ণঝড়ে ভেঙে পড়া ঘর ও মসজিদে টিন বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুফতী হাবিবুর মিছবাহ বলেন, ঈদের পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাই আমরা। সেখানে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য দুই হাজার পিস বস্তা প্রদান করেছি। এ ছাড়াও দুই শতাধিক পরিবারে জরুরী খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছি।
বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় জোয়ারের পানিতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল, জোয়ারের পানির প্রবল চাপে সে বাঁধও ভেঙ্গে যায়। ফলে ঘরবাড়ি, ফসলাদি এবং মাছের ঘের আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
[caption id="attachment_80861" align="alignnone" width="570"] বন্যাপ্লাবিত অঞ্চল। ছবিঃ- পাবলিক ভয়েস[/caption]
মানুষজন ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। যাদের বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার মতো সামর্থ্য নাই, তারা রাস্তার ওপর পলিথিনের চাল বানিয়ে কোনোমতে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গবাদি পশুগুলো খাবার অভাবে মরে যাচ্ছে। অবশিষ্ট বেড়িবাঁধের অংশে বসবাসরত ফ্যামিলিগুলোকে এখনই সরিয়ে না নিলে আরও বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।
সর্বত্র লবন পানি ঢুকে যাওয়ায় এলাকার মানুষের পানির সমস্যা এখন মরার ওপর খড়ার ঘা’র মতো অবস্থা। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাঁধের পাশের টিউবওয়েলগুলোর পাইপ ফেটে লবণ পানি ডুকে গেছে। তাই স্বচ্ছ পানির অভাবে বিভিন্ন রোগবালাইও দেখা দিচ্ছে।
[caption id="attachment_80863" align="alignnone" width="570"] বন্যাপ্লাবিত অঞ্চল। ছবিঃ- পাবলিক ভয়েস[/caption]
সবচে বেশি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন নারীরা। বাচ্চার খাবার জোগাড় হচ্ছে না, নিজেরাও খাবার পাচ্ছেন না৷ প্রকৃতির চাহিদা মেটাতে যাওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো টয়লেটও নেই। খাবারের চেয়ে ইজ্জত-আব্রু রক্ষার যুদ্ধই এখন তাদের কাছে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাবিবুর রহমান মিছবাহ’র নেতৃত্বে টিমে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব মাওলানা এহসান সিরাজ, যুগ্মসচিব মুহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দীন সাব্বির ও সদস্য মাওলানা মনজুরুল হক।
এহসান সিরাজ জানান, আমাদের কাজ চলমান থাকবে। কর্মসূচি পরিচালনার সুবিধার্থে সেখানে একটা আলাদা টিম করেছি। সেই টিমের মাধ্যমে সমস্ত কাজ পরিচালিত হবে এবং কেন্দ্রীয় টিমও মাঝেমাঝে পরিদর্শনে যাবে বলেও জানান তিনি।
এমএম/পাবলিকভয়েস