
নিজের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তকারী ‘জিআর র্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের অ্যান্টিজেন টেস্টে কোনো ত্রুনি নেই বলে জানিয়েছেন এর উদ্ভাবক ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।
তিনি বলেন, তাদের উদ্ভাবিত করোনা শনাক্তকারী কিটের অ্যান্টিবডি বা অ্যান্টিজেন কোনোটাতেই কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি। ত্রুটি ধরা পড়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অ্যান্টিজেন পরীক্ষার লালা সংগ্রহে। এ জন্য তাদের আপাতত কিটের অ্যান্টিজেন অংশের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ বিষয়টি ভিন্নভাবে বুঝে বলছে কিটে ত্রুটি রয়েছে।
আজ বুধবার ড. বিজন কুমার শীল বলেন, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে লালা সংগ্রহ করে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে হয়। লালার সঙ্গে যদি কফ বা থুথু থেকে যায় তাহলে অনেক সময় পরীক্ষা ফলাফল সঠিক নাও আসতে পারে। বিএসএমএমইউ অ্যান্টিজেনের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য যেসব নমুনা সংগ্রহ করেছে, সেখানে লালার সঙ্গে কফ বা থুথু চলে এসেছে। তবে এটা বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের দোষ নয়। তারা যাদের কাছ থেকে নমুনা নিয়েছেন, তারাই লালার সঙ্গে কফ বা থুথু দিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে তারা অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল পাননি। তাই বিএসএমএইউ কর্তৃপক্ষকে সাময়িক সময়ের জন্য কিটের এই অংশের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, লালা সংগ্রহ যাতে সার্বজনীন এবং সহজে করা যায়, তাই তারা কাজ করছেন। ইতোমধ্যে এই সমস্যা সমাধানের একটি প্রক্রিয়াও তারা নির্ধারণ করেছেন। তারা নমুনা সংগ্রহের জন্য কটনবাডের মতো একটি জিনিস তৈরি করেছেন। যা রোগীদের মুখের ভেতর রাখলেই আধা থেকে এক মিনিটের মধ্যে লালা চুষে নেবে। এর মাধ্যমে কফ বা থুথু লাগার সম্ভাবনা নেই। তারা বর্তমানে এ পদ্ধতিটি নিয়ে পরীক্ষা করছেন। আগামীকাল বা পরশু তারা এ বিষয়ে বিএসএমএমইউকে জানাতে পারবেন এবং কটনবাডের মতো জিনিসটিও সরবরাহ করতে পারবেন।
এরপর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ পুনরায় অ্যান্টিজেন টেস্টের কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরু করতে পরবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিএসএমএমইউ চলমান তাদের অ্যান্টিজেনের কার্যকারিতা পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ‘জিআর র্যাপিড ডট ব্লট’ প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার কাছে এ চিঠি পাঠান।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি ‘জিআর র্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের অ্যান্টিজেন টেস্টে নমুনা সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় অসামঞ্জস্যতা দেখা দিয়েছে। যার ফলে কিটের নির্ভুল ফলাফল নির্ণয়ে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লালার নমুনায় যথাযথ অ্যান্টিজেন শনাক্তকরণের জন্য উপকরণ থাকছে না। অথবা লালার উপকরণে অন্য বস্তুর মিশ্রণ দেখা যাচ্ছে। ‘জিআর র্যাপিড ডট ব্লট’ প্রকল্পের সম্মিলিত মনিটরিং টিম কিটের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় এ অসাঞ্জস্যতা চিহ্নিত করেছে। তাই বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে আপতত এ পরীক্ষাটি স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
এতে আরো বলা হয়, গণস্বাস্থ্য আরএনএ বায়োটেক টিম অ্যান্টিজেন পরীক্ষার এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের আরঅ্যান্ডডি ল্যাবে লালা সংগ্রহের পদ্ধতিগত কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে শিগগিরই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বিএসএমএমইউকে জানাতে পারবে।
এমএম/পাবলিকভয়েস