উপকূলীয় অঞ্চল কুয়াকাটা সংলগ্ন হাজীপুরস্থ খ্রিস্টানপাড়ার অসহায় পরিবারে জরুরী খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ বিতরণ করে অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন।
প্রমাণ করল, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ধর্মবর্ণের পরিচয় গুরুত্ব বহন করে না। বরং ইচ্ছা ও মানবিকতাই যথেষ্ট। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলের ন্যায় হাজীপুর খ্রিস্টান পল্লীও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
গতকাল ২জুন মঙ্গলবার ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ’র নেতৃত্বে এ খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়। বিতরণকালে খৃস্টান পরিবারগুলো ফাউন্ডেশনের প্রতি শুভকামনা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
এর আগে হিজড়া, বেদে, হিন্দু ও রাখাইন-সহ সকল ধর্মবর্ণের অসহায় পরিবারে সহায়তা প্রদান করে আলোচনায় আসেন মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ ও তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন।
মুফতী মিছবাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালাতে গিয়ে কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে রেড ক্রিসেন্টসদস্য সৈয়দ শাহ আলমের নৌকাডুবিতে মৃত্যু হলে পরিবারের খোঁজখবর নিতে তার বাড়িতে যাই আমরা।
সেখান থেকে উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার উদ্দেশ্যে রওনাকালে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসানাত মোহাম্মদ শহীদুল হক আমাদের জানান, পায়রাবন্দর সংলগ্ন লালুয়া ইউনিয়নের কয়েকশো পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে যাদের খোঁজখবর কেউ নিচ্ছে না এবং হাজীপুরে ক্রিস্টান পরিবারের কথাও নির্বাহি অফিসারই আমাদের জানান। তাঁর কথার প্রেক্ষিতেই উক্ত সহায়তা প্রদান করা হয় বলেও জানান হাবিবুর রহমান মিছবাহ।
এর আগে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলে ধারাবাহিক তিনদিন খাদ্যসহায়তা প্রদান করে ফাউন্ডেশনটি এবং গতকাল খৃস্টান পরিবার ছাড়াও পায়রাবন্দরে পানিবন্দি অসহায় প্রায় ১৫০ পরিবার ও মহিপুর থানা বাস-ট্রাক চালক শ্রমিকদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে তারা।
ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ’র নেতৃত্বে আব্দুর রহমান কোব্বাদী, এহসান সিরাজ, সিরাজুল ইসলাম আকন, ইমতিয়াজ উদ্দীন সাব্বির, এইচ এম আবুবকর ও মনযূরুল হক-সহ স্থানীয় নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কলাপাড়া পোস্ট গ্রাজুয়েট ক্লাব, কুয়াকাটা তরুণ ক্লাব, মহিপুর ব্রাদার্স ইউনিট, বাংলাদেশ ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠন, পিপল ফর দা পিপল, জন্মুভূমি কুয়াকাটা ও স্থানীয় উদ্যোমী একদল যুবকের স্বেচ্ছাশ্রমে খাদ্যসহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
উল্লেখ্য : ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশন করোনাকালে লকডাউনের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরী খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, জীবাণুনাশক স্প্রে, জনসচেতনতায় মাইকিং, নগদ অর্থ বিতরণ, ৩ দফা রমজান প্যাকেজ, ঈদ প্যাকেজ ও রান্নাকৃত খাবার— ইফতার-সাহরী বিতরণ করেছে। সারাদেশে ৭০টি টিমের মাধ্যমে করোনায় মৃতের কাফন-দাফনের কাজও চলমান আছে তাদের।
/এসএস